কলকাতা : সুমন মুখোপাধ্যায়ের 'হারবার্ট' ছবিতে হারবার্টের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জয়রাজ ভট্টাচার্য । কিউয়ের ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি । এছাড়াও, বাংলার থিয়েটার জগতের প্রতিষ্ঠাতা নাম জয়রাজ । এবার একটি ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি । নাম 'ঘ্যা চাঙ ফু'। অনেকদিন আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছে ছবিটি । তবে এই ছবি এদেশে মুক্তি পাবে না বলে জানিয়েছেন জয়রাজ । ছবিতে অভিনয় করেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য ।
অনির্বাণ ছাড়াও এই ছবিতে অভিনয় করেছেন কমলিকা, সুদীপা বসু, দামিনী বেনি বসুর মতো তারকারা । যাঁদের সেলুলয়েডে প্রায়ই দেখা যায় । পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রথম ছবি জয়রাজের । বহু ফেস্টিভালে গিয়েছে এই ছবি । ইউরোপ সার্কিটে দর্শকের কাছে প্রশংসিত হয়েছে এই ছবি । 'ঘ্যা চাঙ ফু' সম্পর্কে জয়রাজ বলেন, "আমাদের দেশে এই ছবি মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় । কারণ, সেখানে প্রভূত রাজনৈতিক মন্তব্য রয়েছে । রয়েছে কিছু যৌন দৃশ্যও । সেগুলো আমাদের দেশের সেন্সর অনুমতি দেবে না । আমার ছবিতে যেধরনের বিষয়বস্তু দেখানো হয়েছে, সেটা আমাদের দেশের মেনস্ট্রিম OTT-ও দেখাতে পারবে না বলে মনে হয় । তারা কার্ড এবং এডিট করতে বলবে । এবং সেটার সঙ্গে আমি একমত হতে পারব না ।"
কিন্তু দর্শকের জন্যই তো ছবি তৈরি করা । এবং একজন ভারতীয় পরিচালক হয়ে নিজের দেশের দর্শকই যদি ছবিটা দেখতে না পায়, তাহলে এই ধরনের বিষয়বস্তুকেই কেন বেছে নিলেন কেন জয়রাজ ? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যদি কোনও আর্টিস্ট শুধুমাত্র ভাবে, যে যেটা দেখানো যাবে, সেটাই সে বানাবে, তাহলে তো বিদেশিমানের কোনও ছবিই এদেশ থেকে তৈরি হবে না । এভাবে শুরু হলে, দর্শকের ছাপিয়ে এই ধরনের ছবি সেন্সর বোর্ড মুক্তি করার জন্য প্রস্তুত হবে । কিউয়ের যে ছবিটিতে আমি নিজে অভিনয় করেছি, সেটি সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত সফল ছবি । বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব সেই ছবিকে বাহবা দিয়েছে । সেই ছবিটি তো ভারতে দেখানো সম্ভব হয়নি ।"
জয়রাজের এই ছবিতে গ্রাফিকাল নিউড হয়ে অভিনয় করেছেন অনির্বাণ । সেই চরিত্র সম্পর্কে অভিনেতা বলেন, "ভারতীয় দর্শক বলে নির্দিষ্ট কিছুকে দেগে দেওয়া হয় না । ছবিটা তো ভারতীয় একজন পরিচালকই তৈরি করেছেন । সেখানে যাঁরা অভিনয় করেছেন প্রত্যেকেই এদেশেরই নাগরিক । ফলত, তাঁরা যদি এরকম ভাবতে পারেন, তাহলে আমি মনে করি না ভারতের দর্শক এই ছবিকে নিতে পারবে না । ছবিতে আমার একটা গ্রাফিকাল নিউডিটি আছে । আমি অভিনেতা হিসেবে একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে চেয়েছিলাম । জানতে চেয়েছিলাম, শুধু জামাকাপড় খোলাটাই আসল দ্বিধাবোধের জায়গা, নাকি দ্বিধাটা আসলে আমাদের মাথার মধ্যেই রয়েছে ।"