কলম্বো, 2 এপ্রিল : জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপক্ষে ৷ শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ৷ শ্রীলঙ্কা এই মুহূর্তে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে ৷ দেশে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, দৈনন্দিন সামগ্রী ৷ এর জন্য প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষেকে (President Gotabaya Rajapaksa) দায়ী করেছে শ্রীলঙ্কাবাসী ৷ আর এই প্রতিবাদ আটকাতেই 'পাবলিক সিকিউরিটি অর্ডিন্যান্স' জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ৷
জরুরি অবস্থায় প্রেসিডেন্ট যাকে ইচ্ছে আটক করা, কারও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং কোনও জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানোর অধিকার পেলেন ৷ এমনকী তিনি কোনও বদলাতে পারেন অথবা প্রত্যাহার করতে পারেন ৷ বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হওয়া 54 জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ সেদিন তাদের উপর টিয়ার গ্যাস আর জল কামান চালায় পুলিশ ৷ রবিবারও দেশজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে জনতা ৷ অন্য দেশগুলির কাছে বহু টাকা ঋণ আছে শ্রীলঙ্কার ৷ আমদানি ক্ষেত্রে মূল্য চোকাতে গিয়েও ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশে ৷ জ্বালানি কিনতে মানুষ দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ প্রতিদিন বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ থাকছে না ৷ কারণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি নেই সরকারের কাছে ৷ এর সঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়ায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাও কমে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Sri Lanka crisis : বাড়ছে শ্রীলঙ্কার সংকট, রাষ্ট্রপতির বাড়ির সামনে তুমুল বিক্ষোভ
বৃহস্পতিবার, কলোম্বোয় প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের বাড়ির সামনে ভিড় করে জনতা ৷ সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে ৷ পুলিশ তাদের আটকাতে হিমশিম খেয়ে গিয়েছে ৷ শ্রীলঙ্কা সেনার দু'টি বাসের একটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা ৷ সঙ্গে একটি ট্রাকেও ৷ পুলিশের উচ্চআধিকারিক অজিত রোহানা সংবাদমাধ্যমে জানান, 24 জন নিরাপত্তাকর্মী এবং বহু মানুষ জখম হয়েছে ৷ সেদিনের বিক্ষোভে প্রায় 1 লক্ষ 32 হাজার ডলারের ক্ষতি হয়েছে ৷ সাংবাদিকদেরও পুলিশ ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করতে বাধা দিয়েছিল ৷ এ প্রসঙ্গে তিনি জানান প্রতিবাদী জনতা হিংসাত্মক হয়ে ওঠার পরেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে ৷
ঋণ জর্জরিত শ্রীলঙ্কার এই অবস্থার জন্য কোভিড অতিমারী অনেকাংশে দায়ী ৷ বিগত দু'বছরে দেশের প্রায় 1 হাজার 400 কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে দ্বীপ রাষ্ট্রটির ৷ এর সঙ্গে দোসর প্রায় 700 কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ ৷ সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি 16.8 শতাংশ থেকে বেড়ে 17.5 শতাংশে পৌঁছেছে ৷ এটা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা ৷