ETV Bharat / international

নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে পুলিশ পেল গাড়িতে পিষে দেওয়া খুনি মাকে

রবিবার রাতে, পুলিশ তল্লাশি বন্ধ করে হ্যামিলটন ও গসনেকে গ্রেফতার করে । পুলিশ জানিয়েছে, জেমসের হত্যা ও তার মৃতদেহ নিষ্পত্তি করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন যুগল । ডেভিড বার্ক জানান, "উদ্ধারকারী দল ওহায়ো নদীতে তল্লাশি চালিয়ে জেমসের দেহাবশেষ খুঁজে পায় । যদিও উচ্চ জলস্তর ও নদীতে প্রবল স্রোতের জন্য বেগ পেতে হয়েছে তাঁদের ।"

James Hutchinson
James Hutchinson
author img

By

Published : Mar 3, 2021, 6:47 PM IST

ওহায়ো (আমেরিকা), 3 মার্চ : ওহায়োর মিডলটাউন । ঠান্ডা, ফুরফুরে রবিবরের সকালে দশটা নাগাদ মিডলটাউন থানায় উদভ্রান্তের মতো এলেন ব্রিটানি গসনে ও তাঁর প্রেমিক । নিজের 6 বছরের ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছেন না ব্রিটানি । তড়িঘড়ি নিখোঁজ ডায়েরি নিয়ে তল্লাশি শুরু করে মিডলটাউন পুলিশ । লালচে চুলের চশমা পরা জেমস হাচিনসনের ছবি দিয়ে সাহায্যের আবেদনও করা হয় । কিন্তু, তদন্তে নেমে হাড়হিম করা তথ্য হাতে আসে পুলিশের । অন্যান্য শিশু নিখোঁজের মতো ছিল না জেমসের হারিয়ে যাওয়া ।

থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার দুদিন আগে শুক্রবার রাতে, গসনে ও তাঁর প্রেমিক, জেমস হাচিনসন ও অন্য দুই শিশুকে কাছের প্রিবেল কাউন্টির রাশ রান পার্কে নিয়ে যান । একটি নৌকা র‌্যাম্পের কাছে পার্কিং লটে, জেমসকে ফেল রেখে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন ব্রিটানি । মা ফেলে চলে যাচ্ছে দেখে মায়ের কাছে ছুটে আসার চেষ্টা করতেই ছোট্ট জেমসের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন ব্রিটানি, অভিযোগ এমনটাই । ডব্লিউকেআরসি দ্বারা পর্যালোচনা করা আদালতের নথি অনুযায়ী, আধ ঘণ্টা পরে ফিরে এসে জেমসকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান বলে জানান গসনে । ছেলের দেহ গাড়িতে তুলে ফের মিডলটাউনে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান । পরের দিন রাতে মিডলটাউন পুলিশ চিফ ডেভিড বার্ক বলেন, গসনে এবং হ্যামিলটন ওহায়ো নদীর উপর একটি সেতুর দিকে গিয়ে জেমসের দেহটি জলে ফেলে দেয় । দুদিন পর কেন জেমসের নিখোঁজের কথা জানাতে এলেন ওই যুগল, এই নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দিহান ছিল পুলিশ ।

তদন্তে নেমে মিডলটাউন পুলিশের সন্দেহ হয়, মিথ্যে বলছেন নিখোঁজ শিশুর মা ব্রিটানি (29) ও তাঁর প্রেমিক বছর 42-এর জেমস হ্যামিলটন । কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গোয়েন্দা-পুলিশ ও প্রিবেল কাউন্টি শেরিফের ডেপুটিরা রাশ রান পার্কে এসে প্রমাণ সংগ্রহ করে নিয়ে যান । খুন ও পুলিশকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ব্রিটানি গসনেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তাঁর বিরুদ্ধে খুনের ঘটনার প্রমাণ লোপাট ও মৃতদেহের অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে ।

পুলিশ জানিয়েছে, ব্রিটানি ও হ্যামিলটনের সঙ্গে থাকা আরও দুটি শিশুকে তাঁদের বাড়ি থেকে সরিয়ে অন্যত্র রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন । সিনসিনাটি থেকে 35 মাইল উত্তরে প্রায় আটচল্লিশ হাজার মানুষের বাস এই মিডলটাউন শহরকে নাড়িয়ে দিয়েছে জেমসের হত্যা । ঠিক যেন থ্রিলার সিনেমার মতো এই খুনের ঘটনায় শহরবাসী যে শুধু চমকে উঠেছেন তা-ই নয়, বছর ছয়ের ওই হাসিখুশি ছেলেটির মৃত্যুতে শোকার্ত প্রতিবেশী ও তার শিক্ষকরা । এ পথে না গিয়ে শিশুদের সাহায্যের প্রয়োজন হলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো উচিত, মনে করছেন প্রতিবেশি মেরি স্টাউট । ডব্লিউকেআরসি-কে তিনি জানান, "আমি ঠিক বুঝতে পারি না, সন্তানের সঙ্গে এমন কাজ কেউ কীভাবে করতে পারে ।"

এদিকে, কী এমন ঘটনা যা ছেলেকে হত্যার পথে চালিত করল গসনে-কে? সে সম্পর্কে সোমবার বেশ কিছু যুক্তি প্রকাশ্যে এনেছে পুলিশ । মিডলটাউন পুলিশ চিফ ডেভিড বার্ক একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানান, "শিশুটির মা এই মুহুর্তে খুব বেশি অনুশোচনা প্রকাশ করছেন না । তবে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেছেন । কিন্তু, আসলে উদ্দেশ্য এখনও প্রকাশ করেননি ব্রিটানি ।"

ডব্লিউকেআরসি জানিয়েছে, একজন বিচারক সোমবার গসনের জন্য 1 মিলিয়ন ডলার বন্ড নির্ধারণ করেন । আদালতে গসনে বলেছিলেন, তাঁর শেখার অক্ষমত রয়েছে এবং তিনি এই আইনি প্রক্রিয়া বুঝতে পারেন না । তবে, সাংবাদিক বৈঠকে বার্ক এই দাবির বিরোধিতা করেন । তাঁর বক্তব্য, "ভালোই কথা বলছেন ব্রিটানি গসনে । তিনি ভুল-ঠিক সবটাই বুঝতে পারছেন । নিজের সাংবিধানিক অধিকারগুলিও বুঝতে পেরেছেন ।"

আরও পড়ুন : চিনকে মাথায় না চড়িয়ে সাইবার হামলা নিয়ে ভারতের পাশে আমেরিকা

অন্যদিকে, সোমবার সন্ধ্যায় মিডলটাউনের একটি পার্কে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই আয়োজিত জেমস হাচিনসনের স্মরণসভায় প্রায় শতাধিক লোক জড়ো হন । ছেলের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না বাবা লুইস হাচিনসন । শোকস্তব্ধ লুইস সাংবাদিকদের বলেন, "আমার ছেলের উপস্থিতি একটি ঘরকে উজ্জ্বল করে তুলত । সত্যিই মজার ছিল ও, সবাইকে আলিঙ্গন করতে ভালোবাসত ।" ডেইলি নিউজকে হাচিনসন বলেন, "কীভাবে এই দুঃখ লাঘব করা যায় তা আমি জানি না । আমি আমার ছেলের ন্যায়বিচার চাই ।"

ওহায়ো (আমেরিকা), 3 মার্চ : ওহায়োর মিডলটাউন । ঠান্ডা, ফুরফুরে রবিবরের সকালে দশটা নাগাদ মিডলটাউন থানায় উদভ্রান্তের মতো এলেন ব্রিটানি গসনে ও তাঁর প্রেমিক । নিজের 6 বছরের ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছেন না ব্রিটানি । তড়িঘড়ি নিখোঁজ ডায়েরি নিয়ে তল্লাশি শুরু করে মিডলটাউন পুলিশ । লালচে চুলের চশমা পরা জেমস হাচিনসনের ছবি দিয়ে সাহায্যের আবেদনও করা হয় । কিন্তু, তদন্তে নেমে হাড়হিম করা তথ্য হাতে আসে পুলিশের । অন্যান্য শিশু নিখোঁজের মতো ছিল না জেমসের হারিয়ে যাওয়া ।

থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার দুদিন আগে শুক্রবার রাতে, গসনে ও তাঁর প্রেমিক, জেমস হাচিনসন ও অন্য দুই শিশুকে কাছের প্রিবেল কাউন্টির রাশ রান পার্কে নিয়ে যান । একটি নৌকা র‌্যাম্পের কাছে পার্কিং লটে, জেমসকে ফেল রেখে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন ব্রিটানি । মা ফেলে চলে যাচ্ছে দেখে মায়ের কাছে ছুটে আসার চেষ্টা করতেই ছোট্ট জেমসের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন ব্রিটানি, অভিযোগ এমনটাই । ডব্লিউকেআরসি দ্বারা পর্যালোচনা করা আদালতের নথি অনুযায়ী, আধ ঘণ্টা পরে ফিরে এসে জেমসকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান বলে জানান গসনে । ছেলের দেহ গাড়িতে তুলে ফের মিডলটাউনে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান । পরের দিন রাতে মিডলটাউন পুলিশ চিফ ডেভিড বার্ক বলেন, গসনে এবং হ্যামিলটন ওহায়ো নদীর উপর একটি সেতুর দিকে গিয়ে জেমসের দেহটি জলে ফেলে দেয় । দুদিন পর কেন জেমসের নিখোঁজের কথা জানাতে এলেন ওই যুগল, এই নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দিহান ছিল পুলিশ ।

তদন্তে নেমে মিডলটাউন পুলিশের সন্দেহ হয়, মিথ্যে বলছেন নিখোঁজ শিশুর মা ব্রিটানি (29) ও তাঁর প্রেমিক বছর 42-এর জেমস হ্যামিলটন । কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গোয়েন্দা-পুলিশ ও প্রিবেল কাউন্টি শেরিফের ডেপুটিরা রাশ রান পার্কে এসে প্রমাণ সংগ্রহ করে নিয়ে যান । খুন ও পুলিশকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ব্রিটানি গসনেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তাঁর বিরুদ্ধে খুনের ঘটনার প্রমাণ লোপাট ও মৃতদেহের অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে ।

পুলিশ জানিয়েছে, ব্রিটানি ও হ্যামিলটনের সঙ্গে থাকা আরও দুটি শিশুকে তাঁদের বাড়ি থেকে সরিয়ে অন্যত্র রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন । সিনসিনাটি থেকে 35 মাইল উত্তরে প্রায় আটচল্লিশ হাজার মানুষের বাস এই মিডলটাউন শহরকে নাড়িয়ে দিয়েছে জেমসের হত্যা । ঠিক যেন থ্রিলার সিনেমার মতো এই খুনের ঘটনায় শহরবাসী যে শুধু চমকে উঠেছেন তা-ই নয়, বছর ছয়ের ওই হাসিখুশি ছেলেটির মৃত্যুতে শোকার্ত প্রতিবেশী ও তার শিক্ষকরা । এ পথে না গিয়ে শিশুদের সাহায্যের প্রয়োজন হলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো উচিত, মনে করছেন প্রতিবেশি মেরি স্টাউট । ডব্লিউকেআরসি-কে তিনি জানান, "আমি ঠিক বুঝতে পারি না, সন্তানের সঙ্গে এমন কাজ কেউ কীভাবে করতে পারে ।"

এদিকে, কী এমন ঘটনা যা ছেলেকে হত্যার পথে চালিত করল গসনে-কে? সে সম্পর্কে সোমবার বেশ কিছু যুক্তি প্রকাশ্যে এনেছে পুলিশ । মিডলটাউন পুলিশ চিফ ডেভিড বার্ক একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানান, "শিশুটির মা এই মুহুর্তে খুব বেশি অনুশোচনা প্রকাশ করছেন না । তবে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেছেন । কিন্তু, আসলে উদ্দেশ্য এখনও প্রকাশ করেননি ব্রিটানি ।"

ডব্লিউকেআরসি জানিয়েছে, একজন বিচারক সোমবার গসনের জন্য 1 মিলিয়ন ডলার বন্ড নির্ধারণ করেন । আদালতে গসনে বলেছিলেন, তাঁর শেখার অক্ষমত রয়েছে এবং তিনি এই আইনি প্রক্রিয়া বুঝতে পারেন না । তবে, সাংবাদিক বৈঠকে বার্ক এই দাবির বিরোধিতা করেন । তাঁর বক্তব্য, "ভালোই কথা বলছেন ব্রিটানি গসনে । তিনি ভুল-ঠিক সবটাই বুঝতে পারছেন । নিজের সাংবিধানিক অধিকারগুলিও বুঝতে পেরেছেন ।"

আরও পড়ুন : চিনকে মাথায় না চড়িয়ে সাইবার হামলা নিয়ে ভারতের পাশে আমেরিকা

অন্যদিকে, সোমবার সন্ধ্যায় মিডলটাউনের একটি পার্কে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই আয়োজিত জেমস হাচিনসনের স্মরণসভায় প্রায় শতাধিক লোক জড়ো হন । ছেলের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না বাবা লুইস হাচিনসন । শোকস্তব্ধ লুইস সাংবাদিকদের বলেন, "আমার ছেলের উপস্থিতি একটি ঘরকে উজ্জ্বল করে তুলত । সত্যিই মজার ছিল ও, সবাইকে আলিঙ্গন করতে ভালোবাসত ।" ডেইলি নিউজকে হাচিনসন বলেন, "কীভাবে এই দুঃখ লাঘব করা যায় তা আমি জানি না । আমি আমার ছেলের ন্যায়বিচার চাই ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.