কলকাতা, 1 সেপ্টেম্বর: 'ভুবনবাবুর স্মার্টফোন' ছবিতে গান বলতে ছবির শীর্ষ সঙ্গীতই (Title Song by Upal Sengupta )। একটু অন্য ধারার এই ছবি, তাই শুরুটাও অন্য ধারায় । টাইটেল কার্ড থেকে সেই অন্যরকম শুরুয়াত । অলংকরণে কার্টুন দুনিয়ার জনপ্রিয় শিল্পী দেবাশিস দেব । ছবির শুরুতেই তাঁর হাতের জাদুর সঙ্গে মিশেছে উপল সেনগুপ্তর গান ।
ছবির পরিচালক প্রণবেশ চন্দ্র এবং শান্তনু বসু । উল্লেখ্য, অনেক আগে বাংলা এবং হিন্দি ছবির টাইটেল কার্ডে কার্টুন, ক্যালিগ্রাফির নিদর্শন দেখা যেত । বলা ভালো এটাই ছিল তৎকালীন প্রচলিত রীতি । মূলত হাসির ছবিতে ব্যবহার হত এই রকমের টাইটেল কার্ড ব্যবহার করা হত । হিন্দি ছবি 'চলতি কা নাম গাড়ি', 'পড়োশন', বাংলা ছবি 'চারমূর্তি', 'বসন্ত বিলাপ'-এর টাইটেল কার্ডে ব্যবহার করা হয়েছিল এই শৈলি । এমনকি সত্যজিৎ রায় নিজের টাইটেল কার্ড নিজে বানাতেন যাতে ক্যালিগ্রাফি, অলংকরণ সবই তিনি নিজেই সৃষ্টি করতেন । আর তার সঙ্গে থাকত মানানসই টাইটেল মিউজিক ।
'ভুবনবাবুর স্মার্ট ফোন' ছবিতে এই টাইটেল মিউজিক কম্পোজ করেছেন বিশিষ্ট গায়ক-সুরকার উপল সেনগুপ্ত (Bhuvanbabur Smart Phone)। তিনি নিজেও ছবি আঁকেন, কাগজ কেটে বানিয়ে ফেলেন হরেক রকমের জিনিস । প্রসঙ্গত, প্রণবেশ চন্দ্র মূলত বিঞ্জাপন জগতের মানুষ । গ্রাফিক আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করে পরে বিজ্ঞাপন, স্বল্প দৈর্ঘের ছবি এমনকি ফিচার ফিল্ম 'চার দিকের গল্প' তৈরি করেছেন তিনি ।
'ভুবনবাবুর স্মার্ট ফোন' তাঁর নির্দেশনায় দ্বিতীয় পূর্ণ দৈর্ঘের ছবি (New Film Bhuvanbabur Smart Phone)। সহ-পরিচালক এবং কাহিনিকার শান্তনু বসু । ভুবনবাবু একজন চাকুরিজীবী । তাঁর জীবনে একটা স্মার্ট ফোন কী কী পরিবর্তন নিয়ে আসে সেই নিয়েই গল্পের জাল বোনা হয়েছে । মুখ্য ভূমিকায় চিন্তা মুখোপাধ্যায়, পরাণ বন্দোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, ঈশান মজুমদার, সিদ্ধার্থ ঘোষ প্রমুখ ।
এদিন উপল সেনগুপ্ত বলেন, "এই সময়ে দাঁড়িয়ে অ্যানিমেটেড টাইটেল কার্ড খুব একটা হয় না । আমার গানটা ছবির বিষয় নিয়ে একটু ধারণা দেবে । এক টুকরো ঝলক বলা যায় । ছেলেবেলা থেকেই ক্যালিপসো মিউজিকের ভক্ত আমি । হ্যারি বেলাফন্টের নানা গানের চলন মন টানে আমার । চন্দ্রবিন্দুর গানেও এই ধারার সুর করেছি । ছবির মূল বিষয়কে মাথায় রেখে সুর আর গান তৈরি করেছি । প্রণবেশ খুব সুন্দর লিখেছেন । আমার খুব বড় পাওনা দেবাশিস দেবের আঁকার সঙ্গে আমার গানের এই প্রথম মিলন ঘটল । ওর আঁকা কার্টুনের একজন অনুরাগী আমি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখার সঙ্গে ওর অলংকরণ বা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ব্যঙ্গচিত্রের জুড়ি মেলা ভার। আমার সত্যি এটা একটা ভীষণ বড় প্রাপ্তি।"
আরও পড়ুন: কলকাতার বিলুপ্তপ্রায় ভিস্তিওয়ালাদের নিয়ে রাজাদিত্যর তথ্যচিত্র 'ওয়াটার ওয়ালা'
প্রণবেশ চন্দ্র বললেন, "মজার ছবি তাই মজার টাইটেল কার্ড হওয়া উচিত। স্মার্ট ফোন নিয়ে গান লেখার সময়ই উপলদা'র কথা মাথায় আসে। উপলদা সুর তৈরি করে ফেলেন। এবার আসে দৃশ্যায়নের পর্ব। সহ-পরিচালক শান্তনু বসু আর আমি ঠিক করি দেবাশিস দেবের কার্টুন ইলাস্ট্রেসন ব্যবহার করব। দেবাশিসদা ছবি দেখে তৈরি করেন টাইটেল কার্ড। ছবি দেখে গান মিক্সিং করেন অভিজিৎ (টেনি) রায়।"
শিল্পী দেবাশিস দেব বললেন, "প্রণবেশ ঠিক কোন কোন চরিত্রের কথা টাইটেল কার্ডে ভাবছেন জেনে নিয়ে কাজটা করি। তার আগে ছবিটা দেখে নিয়েছিলাম।অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় চণ্ডী লাহিড়ীকে দিয়ে বেশ কিছু কাজ করেছিলেন। মৌচাক, ধন্যি মেয়ে, মন্ত্রমুগ্ধ ইত্যাদি।সেগুলোকে অ্যানিমেটেডও করা হয়েছিল। এই ছবির কাহিনি আগে গল্প আকারে প্রকাশিত হয় তারও অলংকরণ আমি করেছিলাম। নটাইটেল কার্ড একটা ছবির ইমেজ ক্যারি করে।" এই ছবির শুভমুক্তি 2 সেপ্টেম্বর (Bhuvanbabur Smart Phone is Coming Soon)।