কলকাতা, 9 এপ্রিল : রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিয়ে চিন্তা ছিল কমিশনের। মূল চিন্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত। আর তাই পড়শি দুই দেশের সাহায্য অত্যন্ত জরুরি। সেই সূত্রে ওই দুই দেশের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করা হয়। বৈঠক হয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে। সেখানে শান্তিপূর্ণ ভোট করতে ওই দুই দেশের সাহায্য প্রয়োজন বলে জানান এ রাজ্যের বেশ কয়েকজন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার। সেই সূত্রে মোট 9 দিন সীমান্ত সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভুটান সরকার। কিন্তু কোচবিহার লাগোয়া বাংলাদেশের অত্যন্ত স্পর্শকাতর সীমান্ত সিল করা হচ্ছে না। আজ প্রচারের শেষদিনেও এমন কোনও নির্দেশিকা কোচবিহার জেলা প্রশাসনের থেকে যায়নি।
অভিযোগ নতুন নয়। ভোটের সময় বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এ দেশে এসে রাজনৈতিক দলের হয়ে সন্ত্রাস চালায়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী প্রত্যেকটি রাজ্যে এমন ধরনের অভিযোগ ওঠে ভোটের সময়। এ রাজ্যেও বাংলাদেশ থেকে ভাড়াটে গুন্ডা আসার অভিযোগ উঠেছে অতীতে। অতীতের সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার বাংলাদেশ এবং ভারতের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। দুই দেশের বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার, IG পর্যায়ের অফিসার, ডিভিশনাল কমিশনার এবং জেলাশাসকরা মিলে বৈঠক করেন বেশ কয়েক দফায়। স্পর্শকাতর কয়েকটি জেলায় BSF-BDR পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভোটের আগে এবং ভোটের সময় নজরদারি বাড়ানো হবে সীমান্তে। বাংলাদেশ থেকে কোনও দুষ্কৃতী যেন এদেশে ঢুকতে না পারে সেই বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভোটের সময় সীমান্ত সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশ এবং ভুটান প্রশাসনকে।
১১ এপ্রিল রাজ্যে প্রথম দফার ভোট। এই দফাতেই ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকায় ভোট হবে। সেই সূত্রে নির্বাচনের জন্য আলিপুরদুয়ার-ভুটান সীমান্ত সিল করে দেওয়া হচ্ছে। ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে নির্বাচনের জন্য তিন দফায় মোট 9 দিন বন্ধ থাকবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত। এই মর্মে রয়্যাল গভর্নমেন্ট অফ ভুটান-এর তরফে সরকারি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। ভুটানের ডাংখাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এই বিজ্ঞপ্তি জারি করে। গতকাল বিকেলে ভুটান সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি এসে পৌঁছায় আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক ভবন 'ডুয়ার্সকন্যা'-য়। বলা হয়েছে, সীমান্ত বন্ধ থাকাকালীন ভুটানের সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে, সাধারণ নাগরিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি, সরকারি অফিসের কর্মীরা ও পর্যটকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এই নিষেধাজ্ঞা।
কোচবিহারে কাঁটাতারের ওপারে রয়ে গেছেন বেশ কিছু ভোটার। ওঁরা থাকেন নো ম্যানস ল্যান্ডে। তাঁদের জন্য খোলা রাখতে হবে সীমান্ত। কারণ, কাঁটাতার ডিঙিয়ে ওরা আসবেন যে। আর তাই খোলা থাকবে সীমান্তের গেট। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু, তারপরও দেশের সুরক্ষা নিয়ে কোনও আপস নয়। আর তাই পুলিশ এবং BSF জওয়ানরা কড়া নজর রাখছেন সীমান্তে। যদিও সিল করা হচ্ছে না সীমান্ত।