কলকাতা, 21 মার্চ : বাংলায় পদ্ম ফোটাতে বিজেপির বড় ভরসা মতুয়া আর রাজবংশী ভোট ৷ গেরুয়া ইস্তাহার প্রকাশেও দেখা গেল তার প্রভাব ৷ সংখ্যালঘু এই হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার বার্তা দিতে সেখানে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ৷ রবিবার সল্টলেকের ইজেডসিসি-তে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তাহার (বিজেপির ভাষায় সঙ্কল্পপত্র) প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ৷
অমিতের আশ্বাস, বাংলায় বিজেপির সরকার গঠিত হলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই কার্যকর করা হবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ৷ প্রসঙ্গত, এই আইন নিয়ে সারা দেশে বিতর্ক হলেও মতুয়া সমাজ বরাবরই সিএএ-র পক্ষপাতী ৷ কারণ, নয়া আইনে প্রতিবেশী ছ’টি রাষ্ট্রের সংখ্যালঘু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ৷ যা মতুয়াদের দীর্ঘদিনের দাবি ৷ যদিও প্রশ্ন ওঠে, মতুয়া সম্প্রদায় যদি ভারতের নাগরিক নাই হয়, তাহলে তাদের প্রতিনিধিরা ভোটে লড়েন এবং জিতে বিধানসভা ও লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব করেন কীভাবে ?
সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলকে আইনে উন্নীত করার পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ ৷ যার জেরে পিছু হঠতে বাধ্য হয় কেন্দ্রের মোদি সরকার ৷ পশ্চিমবঙ্গ-সহ অ-বিজেপি রাজ্যগুলির পক্ষ থেকেও এর বিরোধিতা করা হয় ৷ ফলে এখনও পর্যন্ত সার্বিকভাবে গোটা দেশে এই আইন প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি ৷ যার জেরে ক্ষুব্ধ মতুয়া সমাজ ৷ যদিও বিজেপির সাফাই, করোনার কারণেই এখনও পর্যন্ত নয়া আইন সার্বিকভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি ৷ নির্বাচনী ইস্তাহারে তাই সিএএ-র কথা উল্লেখ করতে ভোলেনি গেরুয়া শিবির ৷
আরও পড়ুন : সরকারি চাকরিতে মহিলাদের সংরক্ষণের সংকল্প বিজেপির
এর পাশাপাশি, আলাদা করে মুখ্যমন্ত্রী শরণার্থী কল্যাণ যোজনা চালু করার কথাও বলা হয়েছে গেরুয়া ইস্তাহারে ৷ যাঁরা এই যোজনার আওতায় থাকবেন, তাঁদের প্রত্যেককে (মাথা পিছু) বছরে 10 হাজার টাকার সাহায্য দেওয়া হবে ৷ একইসঙ্গে, মতুয়া দলপতিদেরও মাসে 3 হাজার টাকার ভাতা দেওয়া হবে ৷ প্রসঙ্গত, এই বিজেপিই তৃণমূলের ইমাম ভাতার বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে ৷ মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তারা ৷ অথচ এদিনের ইস্তাহারে সেই দলই মতুয়াদের অনেক কিছু পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৷
অনুপ্রবেশ নিয়ে বরাবরই সরব অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদিরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, বাংলার সরকারের মদতেই সীমান্তে পাচার ও অনুপ্রবেশ বেড়েছে ৷ বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, তারা ক্ষমতায় এলে সীমান্তে নিরাপত্তাপত্তা হবে আঁটোসাটো ৷ অনুমতি ছাড়া একটা পাখিও সীমান্ত পার করতে পারবে না ৷