মালদা, 18 ফেব্রুয়ারি : আশঙ্কাই সত্যি হল ৷ গত কয়েক বছরের মতো এবারও পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র সোশাল মিডিয়ায় বের হয়ে যায় ৷ পরীক্ষা শেষের পর তা প্রমাণিত হয়েছে ৷ এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরীক্ষার্থী ৷ কেন বারবার এভাবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই প্রশ্নপত্র সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরাও ৷ যদিও মুখে কুলুপ জেলা শিক্ষা দপ্তরের ৷ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে চাননি জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকও ৷
আজ মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা ছিল ৷ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায় ৷ এ নিয়ে জল্পনা ছাড়ালেও পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছিল না কেউ ৷ পরীক্ষা শেষ হতেই দেখা যায়, সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে আসল প্রশ্নপত্রের ৷
এক পরীক্ষার্থী তনিশ্রী ঘোষ বলে, "আমরা যে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছি তা খুব সহজ ছিল ৷ পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে ৷ আমরা আর এই পরীক্ষা দিতে চাই না ৷ তবে আমরা নিশ্চিত, এবারও প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছে ৷" একই মন্তব্য রিয়া গোস্বামী নামে আরও এক পরীক্ষার্থীও ৷ পরীক্ষার্থী রিতু দাস মোবাইলের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে আসল প্রশ্নপত্র মিলিয়ে বলে, "এই প্রশ্নেপত্রেই এবার পরীক্ষা হয়েছে ৷ প্রশ্ন যে ফাঁস হয়েছে তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই ৷ আমরা কষ্ট করে তৈরি হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছি ৷ আর অনেকে সারাবছর পড়াশোনা না করেই ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নের সুবিধা নিচ্ছে ৷ এতে আমাদের খারাপ লাগছে ৷ কীভাবে এই প্রশ্ন ফাঁস হল তা জানি না ৷ আমরা কিন্তু আর এই পরীক্ষা দিতে রাজি নই ৷ পর্ষদকেই এর ব্যবস্থা নিতে হবে ৷"
এ বিষয়ে এক অভিভাবক মায়া ঘোষ বলেন, "11 টা 55 মিনিটে প্রশ্নপত্র হোয়াটস অ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে ৷ আমরা সেটা দেখলাম ৷ কী করে এমন ঘটনা ঘটল জানি না ৷ ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে সারা বছর পড়াশোনা করে পরীক্ষা দেয় ৷ কিন্তু এভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেলে তাদের উপর প্রভাব পড়ে ৷ পরীক্ষা চলাকালীন এবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার কথা বলা হলেও তা বন্ধ করা হয়নি ৷ কী যে হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না ৷ এরপর যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য পর্ষদের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ৷ " আরও এক অভিভাবক জলি চৌধুরি বলেন, "ফাঁস হওয়া প্রশ্ন আমি দেখেছি ৷ পরে তা আসল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলিয়েও দেখেছি ৷ দু'টি প্রশ্ন হুবহু এক ৷ এটা কী করে সম্ভব হল তা বুঝে উঠতে পারছি না ৷ পর্ষদ তো এবার এসব রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল ৷ তারপরেও কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? প্রয়োজনে পর্ষদকে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর তল্লাশি নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দিতে হবে ৷ ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকলে কীভাবে প্রশ্ন বাইরে এল? তবে এই পেপারে আমাদের ছেলেমেয়েরা আর পরীক্ষা দেবে না ৷"