মালদা, 11 ফেব্রুয়ারি : পুরাতন মালদা ব্লকের সাব অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে ৷ ঘটনার প্রতিবাদে আজ থেকে কর্মবিরতিতে গেল পুরাতন মালদা ব্লক অফিসের কর্মীরা ৷ এমনকি তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন ৷ ফলে আজ সব কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায় সেখানে ৷ সাব অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে মারধরের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলকে দুষেছেন পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা ৷ গোটা ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিয়ো ৷ তবে, এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি আন্দোলনকারীরা ৷
ঘটনার সূত্রপাত, গতকাল রাতে ৷ ব্লক দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলায় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান উপস্থিত থাকায় গতকাল রাত পর্যন্ত ব্লক দপ্তরে কাজ চলছিল ৷ রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ব্লকের সাব অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুশান্ত দাসের অফিসে যান পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মৃণালিনী মণ্ডল মাইতির স্বামী বাবলা মাইতি ৷ তিনি মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক৷ অভিযোগ, কোনও কারণ বশত বাবলা মাইতির সঙ্গে সুশান্ত দাসের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় ৷ সেই তর্কাতর্কির মাঝেই সাব অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে মারধর করেন বাবলা মাইতি ৷ সেই ছবি সিসিটিভিতেও ধরা পড়েছে বলে দাবি কর্মীদের ৷ আজ গোটা ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে সব কর্মী ৷ ফলে অনেক মানুষ জরুরি কাজে অফিসে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হয় ৷
পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা নিতাই মণ্ডল বলেন, “গতকাল রাতে সাব অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়া সুশান্ত দাসকে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী মারধর করেছে ৷ দপ্তরের কর্মীরা কাজে এসে যদি ঠিক মতো বাড়ি ফিরতে না পারে, তবে ব্লকের কাজ চলবে কীভাবে? এতে কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ৷ ব্লকে অনেক মহিলা কর্মীও রয়েছেন ৷ তাই নিরাপত্তার দাবিতে আজ তাঁরা কর্মবিরতি পালন করে ধর্নায় বসেছেন ৷ এই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের যে বোর্ড চলছে, তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালিয়েছে ৷ বিরোধী দলনেতা হিসাবে আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি ৷”
আরও পড়ুন : মালদায় বিদ্যুৎ কর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভ
তবে, এই ঘটনা নিয়ে ব্লক অফিসের কোনও কর্মী সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি নন ৷ তাঁদের সাফ কথা, যা বলার বিডিয়ো বলবেন ৷ এনিয়ে বিডিয়ো ইরফান হাবিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, “বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে ৷ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে ৷ তারপরেই এ নিয়ে কিছু বলা যাবে ৷ তবে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা আন্দোলনকারীরাই বলতে পারবেন ৷ যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তবে তা অবাঞ্ছিত ৷ বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে ৷”
এ দিকে যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, সেই বাবলা মাইতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তাঁর বক্তব্য, “গতকাল রাত সাড়ে 9টা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময় দেখি, ব্লকের দরজা খোলা ৷ তখন আমি ভিতরে ঢুকি ৷ দেখি, কিছু ঠিকাদারের সঙ্গে এসএই-র গোলমাল চলছে৷ আমি তাদের ছাড়িয়ে বাইরে পাঠাই ৷ আমি কাউকে মারধর করিনি, বরং ছাড়িয়েছি ৷ এসব বিরোধীদের চক্রান্ত ৷ এর সঙ্গে বিজেপির কর্মীরাও জড়িয়ে রয়েছে ৷ আমি সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে অভিযোগ জানাব ৷ তিনি অনেক দুর্নীতিতে জড়িত ৷ আক্রোশ থেকে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে ৷”