মালদা, 12 মে : স্ট্রংরুম থেকে বেআইনিভাবে সরানো হচ্ছে EVM । মালদায় গতকাল একযোগে এই অভিযোগ করে কংগ্রেস ও BJP । মালদা জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম নিজের বক্তব্যের সমর্থনে "প্রমাণ" পেশ করেন । যদিও এনিয়ে জেলা নির্বাচন আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি । অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি । আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি ।
গতকাল সকালে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসান খানের ইলেকশন এজেন্ট মহম্মদ মহাফিজ আলম বলেন, "দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের স্ট্রং-রুম তৈরি করা হয়েছে মালদা পলিটেকনিকে । আজ সকালে সেখানে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধির ফোন মারফত জানতে পারি, স্ট্রংরুমের সিল ভেঙে ইলেকশনে ব্যবহৃত সামগ্রী ট্রাঙ্ক সমেত লরিতে তোলা হচ্ছে । আমি দলের বিভিন্ন প্রতিনিধিদের বিষয়টি জানিয়ে স্ট্রংরুমে যেতে বলার পাশাপাশি নিজেও সেখানে যাই । ঘটনাস্থানে আমরা পৌঁছাতেই সেই ট্রাঙ্কগুলিকে পুনরায় স্ট্রংরুমে রেখে দেওয়া হয় । স্ট্রংরুমে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধি ঘটনার বেশ কিছু অংশ ভিডিয়ো করে রাখতে পেরেছে । স্ট্রংরুমে ঢোকার রাস্তা CCTV ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে না । আমি ঘটনাস্থানে উপস্থিত কেন্দ্রীয়বাহিনীকে CCTV ক্যামেরা সংক্রান্ত বিষয়টি জানাই । কেন্দ্রীয়বাহিনীর দাবি, CCTV ক্যামেরা কোথায় থাকবে, তা দেখা তাদের কাজ নয়। স্ট্রংরুমের প্রবেশপথে CCTV ক্যামেরা না থাকায় বিষয়টি থেকে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে । SDO পার্থ চক্রবর্তীকে CCTV ক্যামেরার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি সাফ জানিয়ে দেন আদেশ অনুযায়ী তাঁরা কাজ করেছেন । তার বেশি তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না । "
মোস্তাক আলম জানান, "প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রার্থীকে 8 মে চিঠি মারফত জানানো হয় 12 মে বেলা 12টায় সিল করা ট্রাঙ্কগুলিকে পুনরায় সিল করা হবে । সেখানে প্রার্থী অথবা তার ইলেকশন এজেন্ট যেন উপস্থিত থাকেন । অথচ আজ সকাল সাড়ে 9টায় স্ট্রংরুমের সিল ভেঙে ট্রাঙ্ক ভরতি EVM লরিতে তোলা হচ্ছিল । মালদা পলিটেকনিকে উপস্থিত আমাদের প্রতিনিধি সমস্ত ঘটনা আমাদের জানান । সমস্ত ঘটনা আমরা SDO-কে জানাই । জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসককে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি । তিনি আমাদের ফোন ধরেন না । নিজের চাকরি বাঁচাবেন, না দুর্নীতির কবল থেকে নিজেকে বাঁচাবেন, তা নিয়েই তিনি লড়াই করছেন । গোপনসূত্রে আমরা জানতে পারি, শাসকদল জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছে যেভাবেই হোক মালদার দুটো লোকসভা কেন্দ্রের EVM পালটে ফেলতে হবে । যদিও এবিষয়ে আমাদের হাতে প্রমাণ নেই । সমস্ত বিষয় জানিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি ।"
অন্যদিকে গতকাল সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি বলেন, " আজ সকাল 10টা নাগাদ মালদার জেলাশাসক 4-5 জন অফিসার, 15-20 জন লেবার সহ একটি লরি নিয়ে মালদা পলিটেকনিকে হাজির হন । ইংরেজবাজার ও মানিকচক - এই দুটো বিধানসভায় BJP শক্তিশালী । মালদা পলিটেকনিকে ইংরেজবাজার ও মানিকচকের EVM রয়েছে । মালদা পলিটেকনিকের স্ট্রংরুমে ঢুকে তাঁরা ট্রাঙ্ক বের করে লরিতে তোলেন । ঘটনাস্থানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের বাধা দেওয়ায় তাঁরা ট্রাঙ্কগুলি পুনরায় স্ট্রংরুমে রেখে ঘটনাস্থান থেকে পালিয়ে যান । তারপরে আমি বারবার জেলাশাসককে ফোন করেছি কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি । SDO সাহেবকে ফোনে পাওয়া গেলেও তিনি কথা বলেননি । জাতীয় নির্বাচন কমিশনে আমি অভিযোগ জানিয়েছি । 24 ঘণ্টার মধ্যে জেলাশাসক ও তাঁর অনুগামীদের অপসারণ না করা হলে আমরা আমরণ অনশনে বসব । "
এই বিষয়ে অবশ্য জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসকের প্রতিক্রিয়া পেতে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি ।