মালদা, 25 জুন : BJP পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে 100 দিনের কাজে পক্ষপাতিত্ব ও দুর্নীতির অভিযোগ ৷ অভিযোগ করেছেন সাধারণ মানুষ সহ BJP-র পঞ্চায়েত সদস্যরাও ৷ এর জেরে গতকাল গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সঙ্গে প্রধানকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয় । ঘটনাটি পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের । পরে পুলিশ ও BSF-এর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় । যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান ।
16 আসনের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে 10 জন সদস্য BJP-র । বাকি 6টি আসনের মধ্যে 5টি তৃণমূল ও 1টি কংগ্রেসের । বর্তমানে ওই পঞ্চায়েত প্রধান শুভলক্ষ্মী গায়েন । তাঁর বিরুদ্ধেই 100 দিনের কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । অভিযোগ, একই জব কার্ড হোল্ডারকে বার বার কাজের সুযোগ দিচ্ছেন তিনি । দলীয় সদস্যদেরও তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না । বহিরাগতদের পরামর্শে তিনি পঞ্চায়েত পরিচালনা করছেন । এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল আদমপুর ও ডুমুরতলা সংসদের বাসিন্দারা পঞ্চায়েত দপ্তর সহ প্রধানকে ঘেরাও করে রাখে । খবর পেয়ে মালদা থানার পুলিশ পঞ্চায়েত অফিসে আসে । স্থানীয় ক্যাম্প থেকে আসেন BSF জওয়ানরাও । পুলিশকর্মী ও জওয়ানদের হস্তক্ষেপে ঘণ্টা তিনেক পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, এলাকার লোকজনের জবকার্ড হচ্ছে না । অথচ বাইরের লোকজনকে জবকার্ড দেওয়া হচ্ছে । বাইরের লোক এলাকায় এসে 100 দিনের কাজ করছে । এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী দেবকুমার বল্লভ বলেন, "আমার বুথে 400 জবকার্ড রয়েছে । তার মধ্যে মাত্র 40টি জবকার্ডে কাজ দেওয়া হয়েছে । সবচেয়ে বড় কথা, এই 40 জনকে আগেও 100 দিনের কাজ দেওয়া হয়েছিল । ফলে অন্যান্য যাঁদের জবকার্ড আছে তাঁরা কাজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন । আমার দাবি ছিল, বুথের 400টি জবকার্ডই চালু করতে হবে । সেক্ষেত্রে আমি সারা বছর জবকার্ডধারীদের কাজ দিতে পারব । কিন্তু প্রধান আমার দাবি কানে তোলেননি । এর ফলে সাধারণ মানুষ আমাকে চাপ দিচ্ছে । এর ফলে আজ আমি এই আন্দোলনের রাস্তা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি । প্রধানের কাছে আমি আমার বুথের একাধিক তথ্য জানতে চেয়েছি । কিন্তু তিনি আমার স্ত্রীকে সেসব জানতে দিচ্ছেন না । পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজকর্ম প্রধান ও তাঁর সহযোগী রঞ্জিত দত্ত এবং শ্যামল রাজ পরিচালনা করছেন । এনিয়ে প্রতিবাদ জানালে তারা মারতে উদ্যত হচ্ছে ।"
বিক্ষোভকারীদের একজন সাবিত্রী রায় বলেন, "100 দিনের কাজ আমরা পাচ্ছি না । সেই কারণেই আজ এলাকার মানুষের সঙ্গে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি । আমরা চাই, প্রত্যেক জবকার্ডধারীকে 100 দিনের কাজ দেওয়া হোক । এক এলাকার মানুষ বার বার কাজ পাবে তা হতে পারে না । আগে আমরা সবাই কাজ পেয়েছি । কিন্তু এখন প্রধানের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটছে ।" একই বক্তব্য BJP-র পঞ্চায়েত সদস্য রামলাল চৌধুরিরও ।
যদিও প্রধান শুভলক্ষ্মী গায়েন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তিনি বলেন, "আজ এত মানুষ কেন পঞ্চায়েত দপ্তরে এসেছে সেটাই আমি জানি না । তারা আমাকে কিছু লিখিতভাবে জানায়নি । আজ সকাল 11টার সময় আমি যখন পঞ্চায়েতে আসি, তখন দেখি এক মেম্বার কিছু লোকজন নিয়ে এখানে জমায়েত করল । হঠাৎ করে তারা পঞ্চায়েত দপ্তর বন্ধ করে দিল । এক পঞ্চায়েত সদস্যের গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করল । আমি এখনও জানতে পারেনি, তাদের অভিযোগ কী ? তবে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পুরো মিথ্যে । আমি এক বছর আগে দায়িত্ব নিয়েছি । আমরা আগের প্ল্যান থেকেই এখনও কাজ করছি । তবে আগের বোর্ড নেমুয়া, আদমপুর ও ডুমুরতলা বুথে কোনও কাজ করেনি । সেই তিনটি বুথে কাজের জন্য আমি BDO-র সঙ্গেও কথা বলেছি । পরে সদস্যদের নিয়ে বৈঠকও করেছি । সদস্যদের কোনও সমস্যা নেই । শুধুমাত্র একজন সদস্যের স্বামীই এনিয়ে ঝামেলা করছেন । "