মালদা, 9 জুলাই : তৃতীয় দফায় লালারসের নমুনা পরীক্ষাতেও কোরোনা পজিটিভ রিপোর্ট এল জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ৷ এবার সংক্রমণ মিলেছে তাঁর পরিবারের আরও এক সদস্যের সোয়াব টেস্টেও ৷ সংক্রমিত হয়েছেন রতুয়া 2 ব্লকের বাসিন্দা, মালদা জেলাপরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষের শওহর ৷ তিনি এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত ৷ সব মিলিয়ে জেলায় নতুন করে কোরোনা সংক্রমিত হয়েছে মোট 44 জন ৷ জেলায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা হল 945 ৷ গতকাল রাত পর্যন্ত কোরোনা আক্রান্ত মোট 545 জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে ৷ সংক্রমণ মোকাবিলায় বুধবার থেকে জেলার কিছু অংশে কড়া লকডাউন শুরু হয়েছে ৷ লকডাউন কার্যকর করতে আজও পথে নেমেছে পুলিশ।
গত 20 জুন সন্ধেবেলা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের লালারসে প্রথমবার কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ সেদিন থেকেই তিনি হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৷ তার কিছুদিন পর ফের তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৷ পরীক্ষায় সেই নমুনা পজিটি়ভ আসে ৷ সেই সময় তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও লালার নমুনা অবশ্য নেগেটিভ এসেছিল ৷ গত পরশু ফের এই স্বাস্থ্যকর্তা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৷ গতকাল রাতে তার রিপোর্ট বের হলে দেখা যায়, এখনও তাঁর রিপোর্ট কোরোনা পজিটি়ভ এসেছে ৷ এবার তাঁর পরিবারের এক সদস্যও কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৷
মালদা মেডিকেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 24 ঘণ্টায় সেখানে লালারসের নমুনা পরীক্ষায় মোট 76 জনের কোরোনা পজিটি়ভ রিপোর্ট এসেছে ৷ এর মধ্যে 46 জন মালদার ও 30 জন দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা ৷ মালদার দু’জনের লালারসের নমুনার রিপিট টেস্ট হয়েছে ৷ ফলে নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা 44 ৷ মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার অমিত দাঁ আজ বলেন, “একমাত্র লকডাউনই সংক্রমণ রোধের প্রধান উপায় ৷ লকডাউন এবং সরকারি নির্দেশিকা মেনে সবাই মাস্ক, স্যানিটাইজার কিংবা সাবান, দূরত্ববিধি মেনে চললে অগাস্ট মাসেই কোরোনার প্রকোপ অনেক কমে যাবে ৷ কিন্তু মানুষের সতর্কতা এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি ৷ আরও একটা জিনিস সবাইকে মাথায় রাখতে হবে , কোরোনা সংক্রমণ মানেই মৃত্যু নয় ৷ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে জেলায় যে ক’জন মারা গিয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন রোগে ভুগছিল ৷ সুতরাং তাঁদের মৃত্যুর কারণ যে কোরোনা, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না ৷ কোনও মানুষ কোরোনা সংক্রমিত হতেই পারে ৷ কিন্তু তাঁরা সুস্থ হয়ে গেলেও তাঁদের সামাজিকভাবে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে ৷ এটা ঠিক নয় ৷ সবাই রোগ থেকে দূরে থাকুন, রোগী থেকে নয়৷”
এদিকে গতকাল থেকে শুরু হওয়া জেলার কিছু অংশে কঠোর লকডাউন সফল করতে আজও পথে নেমেছে পুলিশ ৷ সকাল 11টা বেজে যাওয়ার পরও মালদা শহরের বেশ কিছু জায়গায় সবজি ও মাংসের দোকান খোলা থাকতে দেখা যায় ৷ শহরের ঝলঝলিয়া পৌরবাজারেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেশ কিছু দোকান খোলা ছিল ৷ সেই দোকানগুলি বন্ধ করে দেন পুলিশ আধিকারিকরা ৷ মুখে মাস্ক না থাকার জন্য অনেককে এদিন সতর্ক করা হয় ৷