কলকাতা, 2 অক্টোবর: SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকারা ডাইয়িং ক্যাডার হয়ে যাবে । প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগের নিয়মের বাইরে আলাদা কোনও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে না । জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । পাশাপাশি তিনি জানান, কিছুদিন আগে সল্টলেকের ওকাকুরা ভবনে SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যে বেতন বৃদ্ধির কথা তিনি ঘোষণা করেছিলেন তাতে মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন ও অর্থ দপ্তর তা লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছে । কিছুদিনের মধ্যেই এই বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা জারি করে দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী ।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পার্শ্ব শিক্ষকদের সঙ্গে সমতুল করার জন্য বেতন বৃদ্ধি-সহ নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আমরা ঘোষণা করেছিলাম । সেটার অনুমোদন মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে অর্থ দপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে । আমরা SSK, MSK-দের ইতিমধ্যেই বলেছিলাম আপনারা কোন অপশনে যাবেন, একটা 65 বছর আছে, একটা 60 বছর আছে । যে যে অপশনে যাবেন লিখিতভাবে দিলে তা করে দেওয়া হবে ।" তবে, বেতন বৃদ্ধি হলেও নিয়মের বাইরে গিয়ে তাদের আর কোনও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে না বলেও আজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী ।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "যা নিয়ম, প্রাইমারি শিক্ষক হতে গেলে যে যোগ্যতা লাগে, যে নিয়মে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়, তার বাইরে গিয়ে নতুন করে সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করতে পারব না । তারা যা পাচ্ছেন পাবেন, আমরা কিছু বলব না । তারা ডাইয়িং ক্যাডার হয়ে যাবে ।" গত 29 জুলাই সল্টলেকের রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, SSK শিক্ষক যাদের বেতন আগে 5 হাজার 954 টাকা ছিল তাদের বেতন বাড়িয়ে 10 হাজার টাকা করা হবে । SSK সম্প্রসারকদের বেতন বাড়িয়ে 10 হাজার 340 টাকা হবে । MSK শিক্ষকদের বেতন 8 হাজার 930 টাকা থেকে বাড়িয়ে 13 হাজার ও MSK সম্প্রসারকদের বেতন বাড়িয়ে 14 হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী । পাশাপাশি, বোনাস-PF-এর সুবিধা দেওয়া হয় ও সকলকে শিক্ষা দপ্তরের আওতায় আনা হয় ।
এ ছাড়া, আজকে উচ্চ শিক্ষা সংসদের নবম বৈঠক হল বিকাশ ভবনে । এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা । এই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগ, পরীক্ষা ব্যবস্থার মতো বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় । অধ্যাপক নিয়োগের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বারবার যে সমস্ত অনুমোদিত শূন্যপদ আছে সেগুলো পূরণ করবার জন্য বলেছেন । কিন্তু, দেখা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তা বাস্তবায়িত হয়নি । সব উপাচার্যকে আবেদন করেছি, যত শীঘ্র সম্ভব আপনারা করুন ।" তবে, শূন্যপদ পূরণে সংরক্ষণ একটি বড় বাঁধা বলে জানাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "এটাও ঘটনা যে, সংরক্ষণ নীতির জন্য কোথাও কোথাও অধ্যাপক নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে দাঁড়াচ্ছে । সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি । কিন্তু সংরক্ষণ নীতির তো ভাঙা যাবে না ।"
পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "পরীক্ষাটা সময় মতো নিতে ও সময়মতো ফল বের করতে হবে । এমনকী, রিভিউয়ের জন্য 4-5 মাস সময় নেওয়া যাবে না । কারণ, যে হেতু এখন CBCS সিস্টেম আছে । ফলে, একটা সেমিস্টার শেষ হয়ে গেল, তবু রিভিউয়ের ফল প্রকাশিত হল না । এ রকম কিছু আমরা খবর পেয়েছি ।" জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে ।
এ ছাড়া, পুজোর পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারদের নিয়ে একটি প্রীতি সম্মেলন করা হবে বলে জানান শিক্ষমন্ত্রী । তিনি বলেন, "বিজয়া দশমী উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারদের সকলকে নিয়ে একটা প্রীতি সম্মেলন করা হবে ।"