ETV Bharat / city

আলাপনকে শোকজ আইন সম্মত নয়, তবে মামলা করতে পারত কেন্দ্র

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোকজ করে ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ? এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ৷

why alapan banerjee faced show cause notice explained advocate jayanta narayan chattarjee
আলাপনকে শোকজ আইন সম্মত নয়, তবে মামলা করতে পারত কেন্দ্র
author img

By

Published : Jun 2, 2021, 6:50 PM IST

শুরুতেই বুঝে নেওয়া দরকার যে এই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনটি ঠিক কী ? আগে বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে কোনও আইন ছিল না ৷ আর বিপর্যয়ের মোকাবিলা কীভাবে করতে হবে, সেই সম্পর্কেও কোনও ধারণা ছিল না ৷ তাই বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে আইন তৈরি করা হয় ৷

সাধারণ ভাবে আইন মানে পুলিশ রাস্তায় নেমে মারবে বা জরিমানা আদায় করবে, তা কিন্তু নয় ৷ এই আইনে বলা আছে একটা বিপর্যয় কীভাবে আসতে পারে, তার অভিঘাত কতটা হবে, কোথায় তার সবচেয়ে বেশি অভিঘাত হতে পারে, এই সব নিয়ে নীতি তৈরি করার জন্যই এই আইন তৈরি করা হয় ৷

এখানে সেই আইন তৈরি করা হল এবং বলা হল যে এই ধরনের কোনও নীতি ছিল না ৷ এখন শুরু করা হল ৷ কীভাবে শুরু হল ? এটাকে একটা পিরামিডের মতো ধরা যেতে পারে ৷ দু’টো কমিটি করা হল - ন্যাশনাল লেভেল কমিটি এবং স্টেট লেভেল কমিটি ৷ ন্যাশনাল লেভেল কমিটিতে পিরামিডের মাথায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি এই কমিটির চেয়ারপার্সন ৷ তার নিচে থাকবেন সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ৷ তার নিচের স্তরে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিও-রা ৷ একই ভাবে স্টেট লেভেল কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারপার্সন ৷ তার নিচে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিও-রা থাকবেন ৷ এই কমিটির কাজ যে কোনও বিপর্যয় সম্বন্ধে নিয়মিত বৈঠক করা ৷ কোনও বিপর্যয় এলে তা কীভাবে সামলানো হবে, তা ঠিক করা ৷

আরও পড়ুন : বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করা উচিত মোদি-শাহর বিরুদ্ধে : অভিষেক

এটা গেল একটা দিক ৷ এবার কতগুলি ঘটনা ঘটল ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলাইকুণ্ডায় এসে একটা বৈঠক করলেন ৷ প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছেন, ধরে নিতে হবে তিনি সেখানে চেয়ারপার্সন ৷ আর যে রাজ্যে এসেছেন, ধরে নিতে হবে সেই রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রীও থাকবেন ৷ এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবও থাকবেন বলে ধরে নিতে হবে ৷ এখানে তাঁরা থাকলেন না ৷ প্রধানমন্ত্রী একটা বৈঠক করে চলে গেলেন ৷

এদিকে যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে এত বিতর্ক, তাঁকে তাঁর চাকরি জীবনের শেষদিনে দিল্লিতে ডেপুটেশনে ডাকা হল ৷ সঙ্গে সঙ্গে হইচই হল ৷ প্রশ্ন উঠল, তাঁকে কেন চাকরি জীবনের শেষদিনে ট্রান্সফার করা হল ? অথচ তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে করোনা ও যশ মোকাবিলা করার জন্য তাঁকে তিনমাস এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে ৷

তবে এই ডেকে পাঠানো অবশ্য আইনি ৷ এটা করতে পারে ৷ কিন্তু ওই নির্দিষ্ট আইনের নির্দিষ্ট ধারাতে বলা আছে যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷ এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি ৷ রাজ্য সরকার একটি চিঠি দিয়ে বলল যে তারা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়তে পারবে না ৷

সেই সঙ্গে এটাও ঠিক যে কোনও আমলাকেই বদলির ক্ষেত্রে আলোচনা করা হয় না ৷ তাহলে তো দুর্গম, মাও-অধ্যুষিত এলাকায় কেউ যেতেই চাইবে না ৷ এমন অনেক উদাহরণ আছে ৷ সেই কারণেই স্যাট ও ক্যাট-এ (যেখানে রাজ্য-কেন্দ্রের কর্মীদের মামলা হয়) অনেক মামলা জমা পড়ে রয়েছে ৷ যাঁরা বলছেন মত নেওয়ার কথা, তাঁরা কি ভেবে দেখেছেন আগেও মত নেওয়া হয়েছে কি না ? একজন মহিলা আইপিএসকে একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলার মাঝে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু অবসর নেওয়ার দিন এমন ভাবে ডেকে পাঠানোকে আমি নৈতিক ভাবে ঠিক নয় বলেই মনে করছি ৷

আরও পড়ুন : আলাপন অধ্যায় শেষ, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বললেন মমতা

ব্যাপারটা এখানেই মিটে যেতে পারত ৷ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সটেনশন নিলেন না ৷ নির্ধারিত দিনেই তিনি অবসর নিলেন ৷ ব্যাপারটা এখানে কিন্তু থামল না ৷ কলাইকুণ্ডায় যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তিনি ছিলেন না, তাই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের 51 বি ধারায় তাঁকে একটা নোটিস করা হল ৷

এবার জানা দরকার যে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের এই নির্দিষ্ট ধারায় ঠিক কী বলা আছে ৷ ‘যে কেউ যুক্তিগ্রাহ্য’ কারণ ছাড়া কোনও নির্দেশ মান্য করতে প্রত্যাখান করেন (উনি কিন্তু নির্দেশ অমান্য করেননি, মান্য করতে প্রত্যাখান করেছেন), তাহলে তাঁকে জরিমানা অথবা এক বছরের কারাবাস দেওয়া যায় বিচারের শেষে ৷ অর্থাৎ তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা হবে ৷ সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়ার শেষে শাস্তি হবে ৷

আর যদি ওই নির্দেশ মান্য করতে প্রত্যাখান করার ফলে কোনও প্রাণহানি হয় বা আরও কোনও বিপদ হয়, তাহলে সাজা 2 বছর হতে পারে ৷ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী যদি আলাপনবাবুকে বলেন আপনার অনুপস্থিতির জন্য অমুক জায়গায় পদক্ষেপ করতে পারিনি ৷ তার জন্য ভরা কোটালে আবার বাঁধ ভেঙেছে ৷ তাহলে কিন্তু বিচারের শেষে দু’বছরের সাজা ৷

আরও পড়ুন : কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোরের জেরে শাস্তির মুখে আলাপন

এবার প্রশ্ন হল, শোকজ করা যায় কি না ? আইনি ব্যাখ্যা হল, এই আইনের এই ধারায় শোকজ করার কোনও বিধান নেই ৷ এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা যেতে পারে ৷ এক্ষেত্রে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু আমলা ছিলেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করাটা একটা চাপের ব্যাপার ৷ কারণ, প্রমাণের প্রয়োজন ৷ তাই ভয় দেখাতেই শোকজ করা হল বলে মনে হচ্ছে ৷

এখন উত্তরে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এটা বলতে পারেন যে যখন জাতীয়স্তরের বৈঠক হচ্ছিল, তখন তিনি রাজ্যস্তরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ৷ তাই কীভাবে ওই বৈঠকে যোগ দেবেন ? কারণ, রাজ্যস্তরের বৈঠকে উপস্থিত থাকা বেশি জরুরি ছিল ৷

কিন্তু সামগ্রিক বিষয়ে অন্য একটা দিক রয়েছে ৷ অবসরের দিনই ঘোষণা করা হয় যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হচ্ছেন ৷ আর এটা কোনওরকম নোটিফিকেশন ছাড়াই করা হয়েছে সম্ভবত ৷ সেটা হলে বিরোধীদের হাতে একটা অস্ত্র তুলে দেওয়া হল ৷

আরও পড়ুন : বয়ান তৈরি, আলাপনের শোকজে কেন্দ্রকে জোড়া জবাব দিচ্ছে রাজ্য

বিরোধীদের প্রশ্ন করতে পারেন, কেন অবসরের দিনই তাঁকে এমন একটা পদে বসানো হল ? তিনি কি বেতন ও পেনশন দু’টোই পাবেন ? কেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ? আগের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হল না ?

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

শুরুতেই বুঝে নেওয়া দরকার যে এই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনটি ঠিক কী ? আগে বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে কোনও আইন ছিল না ৷ আর বিপর্যয়ের মোকাবিলা কীভাবে করতে হবে, সেই সম্পর্কেও কোনও ধারণা ছিল না ৷ তাই বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে আইন তৈরি করা হয় ৷

সাধারণ ভাবে আইন মানে পুলিশ রাস্তায় নেমে মারবে বা জরিমানা আদায় করবে, তা কিন্তু নয় ৷ এই আইনে বলা আছে একটা বিপর্যয় কীভাবে আসতে পারে, তার অভিঘাত কতটা হবে, কোথায় তার সবচেয়ে বেশি অভিঘাত হতে পারে, এই সব নিয়ে নীতি তৈরি করার জন্যই এই আইন তৈরি করা হয় ৷

এখানে সেই আইন তৈরি করা হল এবং বলা হল যে এই ধরনের কোনও নীতি ছিল না ৷ এখন শুরু করা হল ৷ কীভাবে শুরু হল ? এটাকে একটা পিরামিডের মতো ধরা যেতে পারে ৷ দু’টো কমিটি করা হল - ন্যাশনাল লেভেল কমিটি এবং স্টেট লেভেল কমিটি ৷ ন্যাশনাল লেভেল কমিটিতে পিরামিডের মাথায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি এই কমিটির চেয়ারপার্সন ৷ তার নিচে থাকবেন সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ৷ তার নিচের স্তরে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিও-রা ৷ একই ভাবে স্টেট লেভেল কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারপার্সন ৷ তার নিচে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিও-রা থাকবেন ৷ এই কমিটির কাজ যে কোনও বিপর্যয় সম্বন্ধে নিয়মিত বৈঠক করা ৷ কোনও বিপর্যয় এলে তা কীভাবে সামলানো হবে, তা ঠিক করা ৷

আরও পড়ুন : বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করা উচিত মোদি-শাহর বিরুদ্ধে : অভিষেক

এটা গেল একটা দিক ৷ এবার কতগুলি ঘটনা ঘটল ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলাইকুণ্ডায় এসে একটা বৈঠক করলেন ৷ প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছেন, ধরে নিতে হবে তিনি সেখানে চেয়ারপার্সন ৷ আর যে রাজ্যে এসেছেন, ধরে নিতে হবে সেই রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রীও থাকবেন ৷ এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবও থাকবেন বলে ধরে নিতে হবে ৷ এখানে তাঁরা থাকলেন না ৷ প্রধানমন্ত্রী একটা বৈঠক করে চলে গেলেন ৷

এদিকে যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে এত বিতর্ক, তাঁকে তাঁর চাকরি জীবনের শেষদিনে দিল্লিতে ডেপুটেশনে ডাকা হল ৷ সঙ্গে সঙ্গে হইচই হল ৷ প্রশ্ন উঠল, তাঁকে কেন চাকরি জীবনের শেষদিনে ট্রান্সফার করা হল ? অথচ তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে করোনা ও যশ মোকাবিলা করার জন্য তাঁকে তিনমাস এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে ৷

তবে এই ডেকে পাঠানো অবশ্য আইনি ৷ এটা করতে পারে ৷ কিন্তু ওই নির্দিষ্ট আইনের নির্দিষ্ট ধারাতে বলা আছে যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷ এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি ৷ রাজ্য সরকার একটি চিঠি দিয়ে বলল যে তারা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়তে পারবে না ৷

সেই সঙ্গে এটাও ঠিক যে কোনও আমলাকেই বদলির ক্ষেত্রে আলোচনা করা হয় না ৷ তাহলে তো দুর্গম, মাও-অধ্যুষিত এলাকায় কেউ যেতেই চাইবে না ৷ এমন অনেক উদাহরণ আছে ৷ সেই কারণেই স্যাট ও ক্যাট-এ (যেখানে রাজ্য-কেন্দ্রের কর্মীদের মামলা হয়) অনেক মামলা জমা পড়ে রয়েছে ৷ যাঁরা বলছেন মত নেওয়ার কথা, তাঁরা কি ভেবে দেখেছেন আগেও মত নেওয়া হয়েছে কি না ? একজন মহিলা আইপিএসকে একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলার মাঝে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু অবসর নেওয়ার দিন এমন ভাবে ডেকে পাঠানোকে আমি নৈতিক ভাবে ঠিক নয় বলেই মনে করছি ৷

আরও পড়ুন : আলাপন অধ্যায় শেষ, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বললেন মমতা

ব্যাপারটা এখানেই মিটে যেতে পারত ৷ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সটেনশন নিলেন না ৷ নির্ধারিত দিনেই তিনি অবসর নিলেন ৷ ব্যাপারটা এখানে কিন্তু থামল না ৷ কলাইকুণ্ডায় যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তিনি ছিলেন না, তাই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের 51 বি ধারায় তাঁকে একটা নোটিস করা হল ৷

এবার জানা দরকার যে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের এই নির্দিষ্ট ধারায় ঠিক কী বলা আছে ৷ ‘যে কেউ যুক্তিগ্রাহ্য’ কারণ ছাড়া কোনও নির্দেশ মান্য করতে প্রত্যাখান করেন (উনি কিন্তু নির্দেশ অমান্য করেননি, মান্য করতে প্রত্যাখান করেছেন), তাহলে তাঁকে জরিমানা অথবা এক বছরের কারাবাস দেওয়া যায় বিচারের শেষে ৷ অর্থাৎ তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা হবে ৷ সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়ার শেষে শাস্তি হবে ৷

আর যদি ওই নির্দেশ মান্য করতে প্রত্যাখান করার ফলে কোনও প্রাণহানি হয় বা আরও কোনও বিপদ হয়, তাহলে সাজা 2 বছর হতে পারে ৷ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী যদি আলাপনবাবুকে বলেন আপনার অনুপস্থিতির জন্য অমুক জায়গায় পদক্ষেপ করতে পারিনি ৷ তার জন্য ভরা কোটালে আবার বাঁধ ভেঙেছে ৷ তাহলে কিন্তু বিচারের শেষে দু’বছরের সাজা ৷

আরও পড়ুন : কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোরের জেরে শাস্তির মুখে আলাপন

এবার প্রশ্ন হল, শোকজ করা যায় কি না ? আইনি ব্যাখ্যা হল, এই আইনের এই ধারায় শোকজ করার কোনও বিধান নেই ৷ এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা যেতে পারে ৷ এক্ষেত্রে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু আমলা ছিলেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করাটা একটা চাপের ব্যাপার ৷ কারণ, প্রমাণের প্রয়োজন ৷ তাই ভয় দেখাতেই শোকজ করা হল বলে মনে হচ্ছে ৷

এখন উত্তরে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এটা বলতে পারেন যে যখন জাতীয়স্তরের বৈঠক হচ্ছিল, তখন তিনি রাজ্যস্তরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ৷ তাই কীভাবে ওই বৈঠকে যোগ দেবেন ? কারণ, রাজ্যস্তরের বৈঠকে উপস্থিত থাকা বেশি জরুরি ছিল ৷

কিন্তু সামগ্রিক বিষয়ে অন্য একটা দিক রয়েছে ৷ অবসরের দিনই ঘোষণা করা হয় যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হচ্ছেন ৷ আর এটা কোনওরকম নোটিফিকেশন ছাড়াই করা হয়েছে সম্ভবত ৷ সেটা হলে বিরোধীদের হাতে একটা অস্ত্র তুলে দেওয়া হল ৷

আরও পড়ুন : বয়ান তৈরি, আলাপনের শোকজে কেন্দ্রকে জোড়া জবাব দিচ্ছে রাজ্য

বিরোধীদের প্রশ্ন করতে পারেন, কেন অবসরের দিনই তাঁকে এমন একটা পদে বসানো হল ? তিনি কি বেতন ও পেনশন দু’টোই পাবেন ? কেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ? আগের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হল না ?

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.