কলকাতা, 15 জুন : দলবদল গত 10 বছরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে চেনা ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ কিন্তু সেই দলবদলের প্রক্রিয়া নিয়ে একেবারে চরম লড়াই শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল ৷ যার মূলে রয়েছে দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু করা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর চ্যালেঞ্জ ৷ আর সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে একেবারে শেষ দেখে ছাড়ার জেদ তৃণমূল কংগ্রেসের ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে কোনও জনপ্রতিনিধি দলবদল করলে, তা দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় চলে আসে ৷ আইন অনুযায়ী, তাঁর পদ খারিজ হওয়া উচিত ৷ তাই মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের পর থেকেই হুঙ্কার ছুঁড়ছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তিনি সাফ জানিয়েছেন যে দলত্যাগ বিরোধী আইন পশ্চিমবঙ্গে তিনি কার্যকর করবেনই ৷
আর এই চ্যালেঞ্জের জেরেই দলবদলের এই লড়াই অন্যমাত্রা পেতে চলেছে ৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জের জন্যই মুকুল রায় এখনই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না ৷ দলের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি যেন বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ না করেন, এমনই নির্দেশ শীর্ষ নেতৃত্ব দিয়েছে । বরং দল তাঁকে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক হিসেবে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতেও বড় পদ দেওয়া হতে পারে ৷
আরও পড়ুন : মাতৃশোকে পার্থর পাশে মুকুল-শুভ্রাংশু, সৌজন্যের আবহে কি সম্পর্ক মেরামতির চেষ্টা?
অথচ আগে জানা গিয়েছিল যে মুকুল রায় দলত্যাগের আগেই ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চান তিনি । কিন্তু গত শুক্রবার তৃণমূলে যোগদানের আগে যেহেতু তিনি পদত্যাগ করেননি, তাই গোটা বিষয়টি তিনি দলের উপরই ছেড়ে দিতে চেয়েছেন । এক্ষেত্রে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা তিনি মেনে নেবেন ।
কিন্তু কেন এই নিয়ে রণংদেহী হচ্ছে তৃণমূল ? সূত্রের খবর, দলত্যাগ বিরোধী আইনকে সামনে রেখেই এই ইস্যুতে লড়াই চালাবে শাসক দল ৷ কারণ, ওই আইনে বলা আছে কোনও বিধায়ক বা সাংসদের সদস্যপদ খারিজ উচিত না অনুচিত, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে একমাত্র অধ্যক্ষের ৷ তাই বিজেপির উচিত আগে অধ্যক্ষের কাছে এই নিয়ে আবেদন করা ৷
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankar : আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব রাজ্যপাল, চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রীকে
কিন্তু তা না করে আগেই শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা নিয়ে হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দিয়েছেন ৷ এই ঘটনাকে তৃণমূলের তরফে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবমাননা হিসেবেই দেখা হচ্ছে ৷ এক তৃণমূল বিধায়ক এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, বিধানসভার অধ্যক্ষই কাস্টোডিয়ান । আর বিজেপি তাঁকেই অসম্মান করতে চাইছে । অধ্যক্ষকে এড়িয়ে দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু করা সম্ভব নয় ।
এদিকে মঙ্গলবার এই নিয়ে সরব হয়েছেন প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী । এদিন তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলে পদত্যাগ না করে যেভাবে নেতারা একদল থেকে অন্য দলে যোগদান করেছেন তা গ্রহণযোগ্য নয় । লোকসভা-বিধানসভা উভয় ক্ষেত্রেই দলত্যাগের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব অধ্যক্ষের । কিন্তু অধ্যক্ষরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন কি !’’
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : শুভেন্দুর অভিযোগ পেয়েই দিল্লি যাত্রা ধনকড়ের, সফর নিয়ে জল্পনা