কলকাতা, 29 অক্টোবর : কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ তিন বিজেপি নেতার অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ 20 নভেম্বর পর্যন্ত বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা নির্যাতিতা সাক্ষীদের প্রভাবিত করা বা তাঁদের কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া বা ভয় দেখাতে পারবেন না এবং মামলার তদন্তকে কোনওভাবে প্রভাবিত করা যাবে না ৷ বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ পুজার ছুটির পর মামলার ফের শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
এদিন মামলার শুনানিতে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের তরফে জানানো হয়, সুপ্রিমকোর্টে এই মামলাটির বিশেষ শুনানি হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট 16 নভেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছে। হাইকোর্ট চাইলে এই মামলার শুনানি করে মামলা নিষ্পত্তি করে দিতে পারে। অথবা সুপ্রিমকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে হাইকোর্টও অভিযুক্তদের অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে পারে। এরপরই রাজ্যের সরকারি আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, "2018 সালে যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার জন্য দু'বছর পরে মহিলা বিচার চাইতে জেগে উঠলেন? তিনি নিশ্চই শিশু নন?" জবাবে সরকারি আইনজীবী জানান ,"এই মহিলা এর আগে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের এক সদস্যের হাতে ধর্ষিত হয়েছিলেন। তার প্রতিকার চাইতে তিনি ওই রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের কাছে সহায়তা চাইতে যান ৷ কিন্তু সেখানে গিয়েও তিনি নির্যাতনের শিকার হন।"
আরও পড়ুন : Adhir Ranjan Chowdhury : পিকে-মমতাকে একফলায় বিঁধে আক্রমণ অধীরের
বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তখন জানান, আদালত এই মামলার গভীরে প্রবেশ করছে না। তবে, সিঙ্গল বেঞ্চ অন্তর্বর্তী জামিন বাড়ানোর যে নির্দেশ আগে দিয়েছিল, সেটাকেই আরও কুড়ি নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। পুজার ছুটির পর আদালতের রেগুলার বেঞ্চ এই মামলার শুনানি হবে। তবে অভিযুক্তরা কোনও ভাবেই তদন্তকে যেন প্রভাবিত করার চেষ্টা না করেন। উল্লেখ্য, 2018 সালে শরৎ বসু রোডের একটি বাড়িতে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, প্রদীপ জোশি ও জিষ্ণু বসুর বিরুদ্ধে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। সেই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে 8 অক্টোবর নতুন করে থানায় এফআইআর দায়ের হয়। এর আগে আলিপুর আদালত এফআইআর দায়ের করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। চলতি বছরের পয়লা অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরি নিম্ন আদালতকে তার আবেদন বিবেচনা করার নির্দেশ দেন। গত 8 অক্টোবর এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন বিচারক । ওইদিনই কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ভবানীপুর থানায় এফআইআর দায়ের হয়। তারপরই এফআইআর খারিজের দাবিতে এবং আগাম জামিনের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছিলেন তিন বিজেপি নেতা।