কলকাতা, 23 জুলাই : কলকাতায় ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছেগোষ্ঠী সংক্রমণ। এবার গোবিন্দপুর রেল বস্তি এলাকায় একসঙ্গে 23 জনের শরীরে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণধরা পড়েছে। এর আগে বেলগাছিয়া বস্তিতে 11 জন একসঙ্গে কোরোনায় আক্রান্তহয়েছিল।পাশাপাশি বাগবাজারে একসঙ্গে কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছিল 16 জন। সেই সময় কলকাতা পৌরনিগম মাইক্রোপ্লানিং করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাজুড়ে জীবাণুমুক্তকরণ করা হয় । এবাররবীন্দ্র সরোবরের গোবিন্দপুর রেল কলোনি বস্তিতে 23 জনের শরীরে ধরা পড়ল কোরোনা সংক্রমণ ।এই পরিস্থিতিকে গোষ্ঠী সংক্রমণ বলে মনে করছে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। সেই সঙ্গেপার্শ্ববর্তী এলাকা গোলপার্ক হাউসিং কোঅপারেটিভেও ছড়িয়ে পড়েছে কোরোনার সংক্রমণ।ওই হাউজিংয়ে পাঁচ থেকে ছয়জন কোরোনায় আক্রান্ত। এই আবাসনেই থাকেন পরিচালক সৃজিতমুখ্যপাধ্যায়, গায়কঅনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রীমাধবী মুখোপাধ্যায় মত বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা।
গতকালই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ওকলকাতা পৌরনিগমের নির্দেশে ওই এলাকা সিল করে দিয়েছে পুলিশ। আগামীকাল লালারসসংগ্রহ করা হবে। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় বিশেষ মেডিকেল টিম পাঠাচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। অন্যদিকে গোষ্ঠী সংক্রমণের খবরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে লেক গার্ডেনস, যোধপুর পার্ক, গল্ফগ্রীন, ঢাকুরিয়া, সেলিমপুর ও পোদ্দার নগরে। উদ্বেগেরকারণ এই গোবিন্দপুর রেল কলোনি বস্তির বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই এসব এলাকায়পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। কেউ ড্রাইভার, কেউ নাইট গার্ড, কেউ বা পরিচারিকার কাজ করে। আড়াই মাসলকডাউন চলাকালীন ওই বস্তিতে কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি। কিন্তু আনলক হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই ওই এলাকায় ব্যাপকভাবে গোষ্ঠীর সংক্রমণ ছড়িয়েছে । ওই এলাকার মানুষরাএলাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় কাজের জন্য গেছে। এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে কোরোনাসংক্রমণ নিয়ে এলাকায় ফিরেছে বলে মনে করছেন বিশেষ়জ্ঞরা । ফলে এলাকায় ব্যাপকভাবেবৃদ্ধি পেয়েছে সংক্রমণ । আর এই দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণ ঘিঞ্জি বসতি । এইবস্তিতে একই জলের কল ও শৌচালয় অনেকেই ব্যবহার করে ফলে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়েছেএলাকায়।
গোবিন্দপুর 11/2,12/32, 40a, 46, 49a, 52, 66। গতকাল এই এলাকায় থার্মাল গান ও পাল্সঅক্সিমিটার দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এবং কারা উপসর্গহীন বস্তিবাসী তাদের নামেরতালিকা তৈরি করা হয়েছে। এলাকার স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর রতন দে জানিয়েছে,"ছয় থেকেসাতটি বাড়িতে একাধিক বাসিন্দার শরীরে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এই পর্যায়কেগোষ্ঠী সংক্রমণ মনে করা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে। বস্তি সিল করে বাসিন্দাদের দেরআর্সেনিক এলবাম হাইড্রোক্সিল ক্লোরোকুইন খাওয়ানো হচ্ছে।"
গোবিন্দপুররেল কলোনি বস্তিতে কোরোনা সংক্রমণ নিয়ে কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদহাকিম বলেন, "নিরাপদদূরত্ব বজায় না রাখলে কোরোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। মানুষ যদি সচেতন হয়ে মুখে মাস্কনা পড়েন তাহলে সংক্রমণ দ্রুত বিস্তার করবে। মানুষ সচেতন না হলে 23 না সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। তাই সাধারণমানুষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে প্রয়োজনের বাইরে রাস্তায় বেরোবেন না। সেই সঙ্গেনিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন ও সর্বদা মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন।