কলকাতা, 8 নভেম্বর : হয়ত একেই বলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা । এমনই করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সবুজসাথী প্রকল্পে আর ভিনরাজ্য থেকে সাইকেল কিনে দেওয়া নয় ৷ রাজ্য সরকার চাইছে এ রাজ্যে তৈরি হোক সবুজসাথীর সাইকেল সরবরাহের জন্য কারখানা । আর এখানে বিনিয়োগ করুক কোনও নামী সাইকেল উৎপাদক সংস্থা । এতে একদিকে রাজ্যে নতুন বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে, কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বাড়বে ৷ একইভাবে রাজ্যের অর্থ ভিন রাজ্যে যাওয়া থেকে আটকানো যাবে ।
জানা গিয়েছে, আগেই রাজ্যের আমলাদের যে সাইকেল অন্য রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হয়- তার জন্য কোনও সাইকেল কারখানা তৈরি করা যায় কি না এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই বিষয়টি পর্যালোচনা করতে গিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সাইকেল কারখানা করতে প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে আগ্রহপত্র চাওয়া হল ।
সবুজসাথী প্রকল্পে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সাইকেল দেয় রাজ্য । প্রতি বছর রাজ্যকে 10 লক্ষ সাইকেল কিনতে হয় । সাইকেল পিছু রাজ্য বরাদ্দ করে প্রায় 3400 টাকা। যার ফলে 340 কোটি টাকা খরচ হয় । আর এই বিপুল পরিমাণ টাকার ব্যবসা বাইরের রাজ্যের সঙ্গে হয় । যেহেতু সরকারি প্রকল্প তাই এই প্রকল্প বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কম । তাই উত্পাদন করতেই হবে এই বিপুল সাইকেল । প্রশাসনের বক্তব্য, এই জন্য নামী সাইকেল প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি যদি এই রাজ্যে কারখানা গড়তে রাজি হয় তাহলে রাজ্যে যেমন বিনিয়োগ বাড়বে, তেমন কর্মসংস্থানও হবে । যার ফলে রাজ্যেরই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে ।
রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের প্রকাশ করা আগ্রহপত্রের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগ্রহী সংস্থাগুলিকে 6 থেকে 13 ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে । সূত্রের খবর, জমি-সহ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা সরকার দেবে। আসলে রাজ্য সরকারের জন্য একদিকে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান তৈরি যেমন অগ্রাধিকারের বিষয়, ঠিক তেমনভাবেই বর্তমান রাজ্য সরকার সরকারি প্রকল্পের টাকা যাতে অন্য রাজ্যে না চলে যায় সেটাও নিশ্চিত করতে চায় । আর সে কারণেই এমন উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে ।
এই সংক্রান্ত খবর : সবুজসাথীর সাইকেল চুরির অভিযোগে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ 5
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বারবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে, এই আমলে চপ শিল্প ছাড়া অন্য শিল্পের দেখা নেই ৷ সেক্ষেত্রে এই উদ্যোগ সরকারের জন্য একদিকে যেমন মুখ রক্ষার, একইভাবে তা ব্যয় সংকোচের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার ।