কলকাতা, 15 জুলাই : আজই ভোট পরবর্তী হিংসায় কলকাতা হাইকোর্টকে কড়া রিপোর্ট দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কমিটি ৷ কমিটির পাঁচটি টিম রাজ্যের 311 টি হিংসা কবলিত এলাকা ঘুর দেখে আদালতকে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছে ৷ তাদের মতে, এত বড় ষড়যন্ত্রের তদন্তে সিবিআইকে প্রয়োজন ৷ কমিটির পর্যবেক্ষণ, আইনের শাসন নয়, বরং শাসকের আইন চলছে রাজ্যে ৷ কেবল এটুকুই নয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জেলা, এমনকী এলাকা ধরে ধরে দুষ্কৃতীদের নামের তালিকা দিয়েছে রিপোর্টে ৷ যারা সেই অঞ্চলে হিংসা চালিয়েছে ৷ চাঞ্চল্যকর বিষয়টি হল, কমিশনের ভোট-পরবর্তী হিংসা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের 'কুখ্যাত অপরাধী ও দুষ্কৃতী'দের তালিকায় রয়েছে একাধিক তৃণমূল নেতা ও বিধায়কদের নাম ৷
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে কোচবিহার জেলার শীতলকুচি, সিতাই, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও কোতয়ালির ভোট-পরবর্তী হিংসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৷ 17 জন দুষ্কৃতীর নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে ৷ তার মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ ঘোষ ৷ এমনকী প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর নামও রয়েছে তালিকায় ৷ কমিশনের অপরাধীদের তালিকায় কলকাতা শহরের চিৎপুরে ভোট পরবর্তী হিংসায় নাম রয়েছে তৃণমূল নেতা উমা দাস ও তাঁর স্বামী লাল্টু দাসের ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের অপরাধী তথা দুষ্কৃতীদের নামের তালিকাও দেওয়া হয়েছে ৷ নন্দীগ্রামে 5 জনের নাম দিয়েছে কমিশন ৷ উল্লেখযোগ্যভাবে সেখানে রয়েছে নন্দীগ্রাম আসনে তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের নাম ৷ পূর্ব বর্ধমান সদরে ভোট-পরবর্তী হিংসায় নাম রয়েছে বিধায়ক খোকন দাসের ৷ এমনকি সন্দেশখালিতে হিংসার ঘটনায় নাম রয়েছে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ৷ উত্তর কলকাতার তৃণমূল নেতা জীবন সাহার নামও রয়েছে তালিকায় ৷ অপরাধীদের তালিকায় রয়েছে কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারের নামও ৷
কমিশনের রিপোর্টে নিষ্ক্রিয় পুলিশ আধিকারিক ও থানার তালিকাও দেওয়া হয়েছে ৷ যেখানে একাধিক ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটলেও এফআইআর নেওয়া হয়নি ৷ কটি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল এবং কতগুলি এফআইআর নেওয়া হয়নি তা উল্লেখ করেছে কমিশনের কমিটি ৷
আরও পড়ুন : Post Poll Violence : সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন, আদালতকে সুপারিশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের
কমিশনের তদন্ত কমিটি রিপোর্টে জানিয়েছে, ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে । লুটপাট করা হয়েছে । কোথাও বাড়ির ইলেকট্রিক লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে । অনেক জায়গায় ঘরে ফিরতে চাইলে মোটা টাকা দাবি করা হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন । তাদের মতে, বিশেষ আদালত তৈরি করে বিচার করার প্রয়োজন রয়েছে । এই বিশেষ আদালতের দায়িত্বে থাকবে একটি এসআইটি (SIT) । পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও সিএপিএফ (CAPF) নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা জরুরি । বিশেষ করে মেয়েদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার সুপারিশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিযুক্ত কমিটি ।