কলকাতা, 11 এপ্রিল: কোরোনা আতঙ্কে শহর যখন শুনশান, লকডাউন চলছে, তখন পুলিশের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে শহরময় মানুষের সেবায় দৌড়ে বেড়াচ্ছেন ষাটোর্ধ্ব গীতা দে। শরৎ বোস রোড সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি। এ শহরের প্রবীণ নাগরিক স্বামী-স্ত্রী থাকেন এই ঠিকানাতেই। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মানুষের সেবাকাজে ব্যস্ত। সাতের দশকের রাজনৈতিক উত্তেজনার দিনে মধ্যরাতে ছুটে গিয়েছিলেন গুলিবিদ্ধ মানুষকে বাঁচাতে। আজকের পরিস্থিতি অতীতে না দেখলেও, এবার সাধ্য মতো মানুষের পাশে দাঁড়াতে পথে নেমেছেন তিনি ।
কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বেসরকারি হাসপাতালের নার্স হয়েই। ব্যক্তিগত জীবনেও সেবাই তা়ঁর বেঁচে থাকার আনন্দ। তাই বিপদ জেনেও কোরোনা আক্রান্তদের সান্নিধ্যে গিয়ে সেবা করছেন গীতা দে। তবে, চিকিৎসকদের নির্দেশ মতো সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছেন নিজেকেও। আর বেলেঘাটা ID হাসপাতালে নিয়মিত যেতে হচ্ছে তাঁকে। কেন? ভিনরাজ্য থেকে আসা যেসব মানুষ কোরোনা আক্রান্ত নন, তবু নিজের পাড়ায়, বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না, তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন গীতা দে। মধ্যস্থতার মাধ্যমে ইতিমধ্যে এমন 150 জনকে বাড়ি ফিরিয়েছেন গীতাদেবী। এইসঙ্গে প্রতিদিন দুপুরে শহরের রাস্তায় বেরোতে হয় তাঁকে। ট্রাফিক সার্জেনকে এই গরমের দুপুরে নুন-চিনি-লেবুর শরবত খাওয়ান তিনি। যে পুলিশকর্মীরা এই বিপদে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পরিষেবা দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে, তাঁরা কেমন আছেন? তাও রাস্তায় বেরিয়ে নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখেন বৃদ্ধা।
শহরের মানুষের মন থেকে কোরোনা আতঙ্ক কাটাতে সেবাব্রতে আজীবন নিয়োজিত গীতা দে-র বার্তা, "ঋতু পরিবর্তনের সময় জ্বর হয়। জ্বর হলেই কোরোনা ভাবার কারণ নেই।"