কলকাতা, 11 জুন : প্রথমে দূরত্ব ৷ তার পর বিচ্ছেদ ৷ আর সব শেষে অন্য দলে যোগদান ৷
এমনই ছবি গত কয়েক বছরে বহুবার দেখেছে রাজ্য রাজনীতি ৷ এবার সেই ছবি আবার ফিরল বঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে ৷ তবে গতবার ছিল তৃণমূল (AITC) থেকে বিজেপিতে যোগদান ৷ এবার বিজেপি (BJP) থেকে তৃণমূলে ফেরা ৷
আর দু’টি ক্ষেত্রেই কমন ফ্যাক্টর মুকুল রায় (Mukul Roy) ৷ 2017 সালে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে দল ছেড়েছিলেন ৷ তার পর বিজেপিতে যোগদান করেন ৷ আর এবারও বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে তিনি যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে ৷
আরও পড়ুন : Mukul Roy Live : তৃণমূল ভবনে মমতা-মুকুল-অভিষেক-শুভ্রাংশু
তবে গতবার প্রেক্ষাপট কিছুটা হলেও ভিন্ন ছিল ৷ কারণ, বেশ কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সম্পর্ক অত্যন্ত শীতল হয়ে গিয়েছিল মুকুল রায়ের সম্পর্ক ৷ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করা হয় ৷
তার পর 2017 সালের 25 সেপ্টেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক শেষ করার ঘোষণা করেন মুকুল রায় ৷ তার পর বেশ কিছুদিন তিনি ছিলেন দলহীন সাংসদ ৷ তার পর ওই বছর 11 অক্টোবর তিনি রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন ৷
এর পর থেকে শুরু হয় নানা রকম জল্পনা ৷ কেউ কেউ বলতে থাকেন যে নতুন দল গড়বেন মুকুল রায় ৷ কারও মতে ছিল বিজেপিতে যোগদান করবেন তিনি ৷ আবার মুকুল যেহেতু তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, তাই তিনি দলের দাবি করতে পারেন বলে সেই সময় কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছিল ৷
আরও পড়ুন : মমতা-অভিষেকের বিরুদ্ধে শুভেন্দুকেই বঙ্গ-বিজেপির মুখ করার সম্ভাবনা
কিন্তু শেষপর্যন্ত দেখা যায় যে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করলেন ৷ 2017 সালের 3 নভেম্বর দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের অংশীদার হয়েছিলেন মুকুল রায় ৷
তার পর রাজ্য রাজনীতি দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে ৷ মুকুলের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতাদের হৃদ্যতা বেড়েছে কখনও, আবার অনেক সময় দূরত্ব তৈরি হয়েছে ৷ কিছুটা হলেও তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে যোগদানও করিয়েছেন মুকুল রায় ৷ 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যে মুকুল রায়ের কৃতিত্ব অনেকটাই ছিল বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল ৷
বিজেপির জাতীয়স্তরে সহ-সভাপতিও হন মুকুল রায় ৷ ভোটের লড়াইয়ে নেমে বিধায়ক হয়েছেন মুকুল রায় ৷ কিন্তু তার পরও উলটপুরাণ ঘটালেন তিনি ৷ ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই এই উলটপুরাণের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল ৷ এবারও বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর ৷ গত একমাসে তিনি বিজেপিতে যেন থেকেও ছিলেন না ৷
আরও পড়ুন : অভিষেকের নাটকের সূচনা হয়েছে, একবছর পরে বুঝতে পারবে মানুষ; কটাক্ষ লকেটের
তবে এবার বিজেপির সঙ্গে প্রকাশ্যে কোনও বিচ্ছেদ ঘটালেন না তিনি ৷ বরং বিজেপির বিধায়ক পদ না ছেড়েই চলে এলেন তৃণমূলে ৷ এখন দেখার তাঁর এই বিধায়ক পদ দলত্যাগ বিরোধী আইনে বাদ যায় নাকি তিনি নিজেই ইস্তফা দেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ থেকে !