কলকাতা, 23 জানুয়ারি : সোমবার শহরে বিজেপি বিরোধী পদযাত্রা করবেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে রানি রাসমণি রোড পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করবেন তিনি।
শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পরেই পালটা নন্দীগ্রামে সভা করার কথা ছিল তৃণমূল সুপ্রিমোর ৷ কিন্তু, কোনও কারণে সেই সভা হয়নি ৷ হয়ত, তড়িঘড়ি না করে নন্দীগ্রামে একটু জল মাপতে চাইছিলেন তিনি ৷ এরপরের ঘটনা সবার জানা ৷ নন্দীগ্রামের জমি নিজের দখলে রাখার জন্য সেখান থেকে ভোটে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন মমতা ৷ আসলে অধিকারী দুর্গে লড়াই যে খুব সহজ হবে না তা জানেন তিনিও ৷ তাই শুভেন্দু অধিকারী শুধু নয়, শিশির অধিকারীর নামের সঙ্গে লড়াই করতে হলে ক্যাপ্টেন হিসাবে হয়ত তাঁকেই এগিয়ে আসতে হত ৷
অন্যদিকে আরও একটি মত রাজনৈতিক মহলে উঁকি মারছে ৷ নন্দীগ্রাম মমতার কাছে 'প্রেস্টিজ' ৷ নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর তৃণমূলের কাছে অন্যতম প্রেরণা ৷ সিঙ্গুরে লোকসভায় দল বড় ধাক্কা খেয়েছে ৷ বিজেপি এখানে তৃণমূলের থেকে বেশি ভোট পায় ৷ সেখানে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে পড়েছে দল ৷ এদিকে শুভেন্দুর দলত্য়াগে নন্দীগ্রামকে হাতছাড়া করতে চান না মমতা ৷ তাই রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রামে দাঁড়াতে চাওয়ায় কোথাও যেন তাঁর স্নায়ুচাপ-ই ধরা পড়েছে ৷
2016 সালে বিধানসভা ভোটের সময় নারদ-সারদা কেলেঙ্কারি সামাল দিয়েছিলেন মমতা ৷ তখন মানুষের মনে নিজের ভাবমূর্তি খাঁড়া করতে বলেন, "294টা আসনে আমিই প্রার্থী ৷" অথচ আজ সেই নেত্রীকে একটা আসন সামাল দিতে নিজের নাম ঘোষণা করতে হয়! সোমবার শহরে মমতার পালটা পদযাত্রা করার সিদ্ধান্তের মধ্যেও কি সেই স্নায়ুচাপ-ই প্রকট হচ্ছে ? শুভেন্দু তাঁর বিধানসভা এলাকা সহ দক্ষিণ কলকাতায় পদযাত্রার পরে দল পালটা পদযাত্রা করে। তার পরেও কেন সাততাড়াতাড়ি মমতাকে নামতে হচ্ছে ? গত সোম ও মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতায় পৃথক পৃথক মিছিল করেছিল বিজেপি ও তৃণমূল। সোমবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে হয়েছিল মিছিল। মঙ্গলবার তার পালটা প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয় তৃণমূল। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন অরূপ বিশ্বাস ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা। জনসংযোগে তাহলে কি অরূ-শোভন যথেষ্ট নয় শুভেন্দুকে সামাল দিতে ? তাই কি বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও জোরদার করে তুলতে এবার নিজেকেই পথে নামতে হচ্ছে মমতাকে?