কলকাতা, 15 জুলাই : উপনির্বাচন হলে প্রতিটি আসনেই হারবে বিজেপি (BJP) ৷ তাই হারের ভয়ে তারা পশ্চিমবঙ্গের সাত আসনে উপনির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে ৷ বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) ৷ একই সঙ্গে ভবানীপুরের কোভিড পরিস্থিতি তুলে ধরলেন ৷ জানালেন, ভবানীপুরের অনেক ওয়ার্ডই এখন কোভিডমুক্ত । তাহলে উপনির্বাচন করতে অসুবিধা কোথায় ?
মমতার কথায়, ‘‘আমি ভবানীপুর নিয়ে কলকাতা পৌরনিগমের (Kolkata Municipal Corporation) একটা রিপোর্ট দেখছিলাম । অনেক ওয়ার্ডই কোভিডশূন্য ।’’ কোনও সন্দেহ নেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবানীপুর-সহ সাত কেন্দ্রে উপনির্বাচন (By-election) করানো সম্ভব । এর আগে জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যসভা ভোট করানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতামত চেয়েছিল । তখন রাজ্য সরকারের তরফে তাদের জানানো হয়, রাজ্যসভা তো বটেই পশ্চিমবঙ্গে এখন সাতটি বিধানসভার উপনির্বাচনও করানো সম্ভব ।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : ভ্যাকসিন চেয়েও পাওয়া যায়নি, মোদিকে ফের চিঠি মমতার
বস্তুত, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেছেন যে সাতটি আসনেই উপনির্বাচন করানো উচিত । কারণ হিসাবে তৃণমূল (Trinamool Congress) সুপ্রিমো তুলে ধরেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী আইন অনুযায়ী ভোটের ফল প্রকাশের ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করাতে হবে । ফলে আমরা বেআইনি বা অসাংবিধানিক কিছু চাইছি না । কিন্তু বিজেপি জানে, ওরা প্রতিটায় হারবে ! তাই ওরা ভোট চাইছে না ।’’ সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘আমরা ওদের বলেছিলাম, রাজ্যসভা তো বটেই । বিধানসভা ভোটের জন্যও আমরা তৈরি । উপনির্বাচন তো হবে একেকটা বিচ্ছিন্ন এলাকায় । তাছাড়া গোটা রাজ্যেই কোভিড এখন অনেকটা কমে এসেছে ।’’
অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন যে বিজেপির অঙ্গুলি হেলনেই উপনির্বাচন হচ্ছে না । এমনিতে এই বিপুল ব্যবধানে তৃণমূল সরকারের প্রত্যাবর্তনের পর উপনির্বাচনে তেমন কোনও গুরুত্ব নেই । তবে এক দিক থেকে গুরুত্ব অপরিসীম । তা হল, মমতাকেও ভোটে লড়ে জিততে হবে । কারণ, নন্দীগ্রামে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি । যদিও গণনা নিয়ে মামলা চলছে হাইকোর্টে ।
আরও পড়ুন : মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজে অধ্যক্ষের সামনে আটঘাট বেঁধেই নামছেন শুভেন্দু
তৃণমূলের অনেকের বক্তব্য, বিজেপি যেভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দখল করছে, তাতে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তাঁরা মমতার জিতে আসা আটকাতে চাইছে । এর আগেও মমতা একবার বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন চলছে অমিত শাহের দফতরের নির্দেশে । তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি আসলে চাইছে জটিলতা তৈরি করতে ।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল স্পষ্ট করেছে, ভবানীপুরে প্রার্থী হবেন মমতা । তাই শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সেখান থেকে ইস্তফা দিয়েছেন । তাঁকে প্রার্থী করা হবে খড়দহে । হতে পারে সেকারণেই আজ মমতা ভবানীপুরের কোভিড তথ্য উল্লেখ করেছেন । মমতা যখন এদিন নবান্নে একথা বলছেন প্রায় সেই সময়েই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে উপনির্বাচনে দাবি জানাতে গিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল ।
আরও পড়ুন : দিঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তৈরি নতুন স্টল, আজ ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী
যদিও বিজেপির বক্তব্য, গতকালই নবান্ন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক জমায়েত করা যাবে না । ভোট হলে তো প্রচারের ব্যাপার আছে । আগে রাজ্য সরকার সব স্বাভাবিক করার নির্দেশিকা দিক, বিজেপি একটু রাস্তায় নামুক, তারপর তো ভোট ।