কলকাতা, 20 জুন : জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় (Jnaneswari Express accident) নিজেকে মৃত হিসেবে দাবি করে সুযোগ সুবিধে হাতিয়ে নেওয়া অমৃতাভ চৌধুরী ও তার বাবা মিহিরকুমার চৌধুরীকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই । পাশাপাশি জোড়াবাগান থানা এলাকায় অমৃতাভের বাড়িতে গিয়েও তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ।
সিবিআই সূত্রে খবর, অমৃতাভকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক নাম-সহ তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অনুমান, এই ঘটনায় রেলের একাধিক বড় আধিকারিকও যুক্ত থাকতে পারেন । অমৃতাভের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, তিনি কীভাবে জাল ডিএনএ রিপোর্ট বের করলেন ? কীভাবে তা গ্রহণযোগ্য হল ? তবে কি এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছে কোনও রাঘববোয়াল ? সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারী গোয়েন্দারা ৷ এ দিন অমৃতাভের প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কথা বলে সিবিআই ।
আরও পড়ুন: জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ‘মৃত’ ব্যক্তির পুনর্জন্ম ! সিবিআইয়ের হাতে আটক বাবা-ছেলে
জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিলেন অমৃতাভ । বেশ কয়েক বছর পর তিনি ফিরে আসেন । আচমকাই দশ বছর পর জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুঘটনায় মৃত ব্যক্তির আদতে বেঁচে থাকার ঘটনা সামনে আসে । যার নাম অমৃতাভ চৌধুরী । তিনি কলকাতার বাসিন্দা । অভিযোগ, ডিএনএ-র নকল রিপোর্ট জমা দিয়ে সরকারি ক্ষতিপূরণের চার লক্ষ টাকা ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একজনের সরকারি চাকরিও হাতিয়েছিলেন অভিযুক্ত । গোটা ঘটনার তদন্তে নামে সিবিআই । এরপরেই সত্য সামনে আসে ৷ এই ঘটনায় অমৃতাভ ছাড়াও আটক করা হয়েছে তার বাবা মিহিরকুমার চৌধুরীকে । তাদের সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ।
আরও পড়ুন: জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনার 10 বছর, আজও ক্ষতিপূরণ পায়নি নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারগুলি
2010 সালের 28 মে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, সেই মৃতদের তালিকায় ছিল এই অমৃতাভ চৌধুরীর নামও । সরকারি নথিতে তিনি মৃত ছিলেন । কিন্তু সম্প্রতি সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ের তরফে চিঠি দিয়ে একটি অভিযোগ করা হয় যে, সরকারি খাতায় মৃত হিসেবে উল্লিখিত অমৃতাভ চৌধুরী আদতে হয়তো বেঁচে আছেন । এই ঘটনায় তদন্ত করে দেখার আবেদন আসে । এর পরেই তদন্তে নেমে গোটা ঘটনাটি পরিষ্কার হয় গোয়েন্দাদের সামনে ।
আরও পড়ুন: প্রেম জানাজানি হতেই হেনস্থা ! কাঞ্চন, তাঁর বান্ধবীর বিরুদ্ধে থানায় স্ত্রী পিঙ্কি
সিবিআই গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে জানতে পারেন, ডিএনএ রিপোর্ট জমা দিয়ে সরকারি ক্ষতিপূরণ বাবদ চার লক্ষ টাকা এবং অভিযুক্তদের পরিবারের একজন সরকারি চাকরি ইতিমধ্যেই পেয়েছেন ৷ আর বর্তমানে অমৃতাভ বহাল তবিয়তে বেঁচে রয়েছেন । খবর পেয়ে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সিবিআই আধিকারিকরা । এরপর দুপুরে উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান থানা এলাকা থেকে অমিতাভ চৌধুরী এবং তার বাবা মিহিরকুমার চৌধুরীকে আটক করে সিবিআই ৷ ধৃতদের নিয়ে যাওয়া হয় সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখায় ৷ নিজাম প্যালেস সূত্রে খবর, সেখানেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ।