কলকাতা, 22 অগস্ট : গত জুলাইয়ের শেষ থেকে পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতির মামলাগুলির তদন্তে ঝাঁঝ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি ৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ৷ আবার সিবিআই গ্রেফতার করেছে বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) ৷ এই পরিস্থিতিতে প্রায় রোজই তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) একাধিক হেভিওয়েট নেতাকে নিয়ে নানা খবর ছড়াচ্ছে ৷ ট্রেন-মেট্রোর কামরা থেকে চায়ের ঠেকের আড্ডায় সর্বত্রই একটা প্রশ্ন ঘুরছে, এর পর কি শাসক দলের আর কোনও নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসবে ?
ঠিক এই সময়ই সোমবার খবর ছড়ায় যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ঘুরছেন দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় ৷ তাঁদের সঙ্গে সাদা পোশাকের কিছু আধিকারিকও রয়েছেন ৷ সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি সিবিআই আধিকারিকরা সোমবার চেতলায় গিয়েছিলেন ?
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো অবশ্য এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে ৷ যদিও একটি সূত্রের খবর, এদিন চেতলার একটি ক্লাব ও পুজো মণ্ডপের আশপাশের এলাকায় সিবিআই গোয়েন্দারা গিয়েছিলেন ৷ তাঁরা সেখানে বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন ৷ আশপাশ ঘুরে দেখেন ৷ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে তাহলে কি সিবিআই বড় কোনও অভিযানের আগে ওই এলাকায় রেইকি করে এল সিবিআই ?
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, সিবিআই (CBI) ও ইডি এই মুহূর্তে বাংলায় একাধিক দুর্নীতির মামলার তদন্ত করছে ৷ সেই তালিকায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Bengal Recruitment Scam), গরু পাচার কাণ্ড (Cattle Smuggling Case), কয়লা পাচার কাণ্ড (Coal Smuggling Case)-সহ আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে ৷ নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁর বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় 50 কোটি টাকা, কয়েক কোটি টাকার সোনার গয়না-সহ বেশ কিছু সম্পত্তি, বিমা সংক্রান্ত নথিপত্র ৷
অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডলকে গরুপাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে সিবিআই ৷ তাঁকে গ্রেফতারের জন্য বীরভূমে সাতসকালে পৌঁছে গিয়েছিলেন গোয়েন্দারা ৷ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর 100 জওয়ানকে ৷ অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলে তাঁকে গ্রেফতার করে আনা হয় ৷
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চেতলায় কোন দুর্নীতির লিঙ্ক খুঁজে পেল সিবিআই ? সেখানে কার সঙ্গে দুর্নীতির যোগ রয়েছে বলে তারা মনে করছে ? যাঁর সম্পর্কে খোঁজ খবর করতে সেখানে এদিন গোয়েন্দারা যান, তিনি শাসক দলের কোনও হেভিওয়েট নেতা ? উত্তর দিতে নারাজ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো ৷ এমনকী, সেখানে তাদের কেউ গিয়েছিল কি না, সেটা নিয়েও মুখ কুলুপ এঁটেছে তারা ৷
ফলে আগামিদিনে দুর্নীতির তদন্তে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, এর সঙ্গে নতুন করে শাসক দলের আর কোনও নেতার নাম জড়িয়ে পড়বে কি না, আর সেই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে কতটা হইচই পড়বে, এই প্রশ্নের উত্তরই আপাতত জানতে উৎসুক বাংলার জনতা ৷
আরও পড়ুন : সিবিআইয়ের জেরায় মেজাজ হারাচ্ছেন অনুব্রত