কলকাতা, 28 অগস্ট: রাজ্যে প্রায় অদৃশ্য হতে চলা কংগ্রেসেও অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট(Inner Clash in WB Congress)। মূলত, প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত সোমেন মিত্র ও বর্তমান সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর অনুগামীদের মধ্যেই এই দ্বন্দ্ব । রবিবার ছাত্র পরিষদের 69তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মহাজাতি সদনে আয়োজিত সভায় সেই ছবি আবারও ধরা পড়ল(West Bengal State Chatra Parishad)। আর এই দ্বন্দ্বের কারণেই এদিন সভা শুরুর প্রায় আধ ঘণ্টা পরে সভামঞ্চে স্থান পেল প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত সোমেন মিত্রের ছবি । সোমেন মিত্র পন্থীরা অধীর-সোমেন দ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করলেও সভার আয়োজকরা তা মানতে নারাজ ।
এদিন রাজ্য ছাত্র পরিষদের 69তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে(Chatra Parishad Foundation Day)মহাজাতি সদনে এক সভার আয়োজন করা হয় । বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকরা আসেন এদিনের সভায় । মঞ্চের সামনে মহাত্মা গান্ধি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জওহরলাল নেহরু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ছবি পরপর রাখা হয় । এরই মাঝে কয়েকজন কংগ্রেস সমর্থক প্রশ্ন তোলেন কেন সেখানে সোমেন মিত্রর ছবি রাখা হল না(Picture of Somen Mitra)৷
কেউ কেউ বলতে থাকেন,সোমেন মিত্রর ছবি রাখবেন কি না বলুন । না হলে আমরাই ছবি বসানোর ব্যবস্থা করছি । এমনকি, শুধু সোমেন মিত্রর একার নয় । অধীর চৌধুরীর ছবি বসিয়েও মালা চড়িয়ে দেব । এমন মন্তব্য করতেও শোনা যায় কয়েকজনকে ৷ তাঁদের এই বক্তব্য শুনে গোলমালের আঁচ অনুভব করেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা । তিনি তাঁদের নিষেধ করে সরে যান । এর কিছুক্ষণের মধ্যে অনুষ্ঠান শুরু হয় হয় ।
আরও পড়ুন: অনুব্রতহীন বীরভূমে সেপ্টেম্বরেই সফরের সম্ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর
এর প্রায় পৌনে একঘণ্টা পর প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সীর ছবির পাশের চেয়ারে সোমেন মিত্রর ছবি(Former WB Congress Chief Somen Mitra)বসিয়ে তাতে মালা চড়াতে দেখা যায় অর্ঘ্য গণ, সোমদীপ ঘোষদের । গোটা ঘটনার বিষয়ে সভার অন্যতম আয়োজক তথা রাজ্য ছাত্র পরিষদ সভাপতি সৌরভ প্রসাদ বলেন, "অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয় নয় । হয়তো একটু দেরি হয়েছে ।"
সূত্রের খবর, কলকাতা পৌরসভার 48 নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত সোমেন মিত্র ফাউন্ডেশনের অফিস থেকে তাঁর ওই ছবিটি নিয়ে আসা হয় ৷ প্রতিবাদীদের মধ্যে সোমদীপ ঘোষ বলেন, "রাজ্য ছাত্র পরিষদের কোনও কোনও নেতা হয়তো সোমেন মিত্রকে হেয় করতে চেয়েছিলেন । হয়তো ভুলেও যেতে পারেন । তবে, এটা প্রতি বছরের ঘটনা । এটাও হতে পারে, তাঁরা মনে করছেন ছাত্র পরিষদে কোনও নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দরকার । বাকিদের দরকার নেই ।"
একইসঙ্গে রাজ্য ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌরভ প্রসাদের পদ মর্যাদা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি । বলেন, "প্রায় একবছর হল ছাত্র পরিষদের কোনও কমিটি নেই । গত বছর ভেঙে দেওয়া হয়েছিল । যিনি আগে ছিলেন তিনিই ইস্তফা দিয়ে আবার মনোনয়ন জমা দেন । তারপরও কীভাবে রাজ্য ছাত্র পরিষদের সভাপতি পরিচয়ে এই সভার আয়োজন করলেন উনি জানা নেই ।"
আরও পড়ুন: জানুয়ারি,ফেব্রুয়ারিতে পঞ্চায়েত ভোটের সম্ভাবনা, প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্ন
এদিনের অনুষ্ঠানে অধীর চৌধুরী ও কানহাইয়া কুমারের উপস্থিত থাকার কথা ছিল । কিন্তু, তাঁরা আসেননি । তবে তাঁদের অনুপস্থিতির বিষয়েও সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি আয়োজকরা । প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এলেও দশ-পনেরো মিনিট থেকে বেরিয়ে যান । ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে এবং সারা বছর নানা কাজে কংগ্রেস নেতৃত্বের অনুপস্থিতি, অসহযোগিতার সুর শোনা যায় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা শুভঙ্কর সরকারের গলাতেও ।