কলকাতা, 1 মার্চ: অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ৷ এমনটাই তার পর্যবেক্ষণে জানাল কলকাতা হাইকোর্ট ৷
রাজ্যের প্রাক্তন অ্য়াডভোকেট জেনেরাল তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিমল চট্টোপাধ্য়ায়ের রুজু করা একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে একথা জানিয়েছে হাইকোর্ট ৷ সোমবার এই মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি টিভি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চে ৷
শুনানি শেষে দুই বিচারপতি তাঁদের পর্যবেক্ষণে জানান, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাওয়ার পর মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ৷ রাজ্যে যাতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় সেটা তাদেরই নিশ্চিত করতে হবে ৷
এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ তার নির্দেশে আরও জানিয়েছে, নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনও অভিযোগই দ্রুত খতিয়ে দেখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে ৷ পাশাপাশি যাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ৷ একইসঙ্গে, সাধারণ মানুষ যাতে নির্ভয় তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তাও সুনিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন।
মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্য়াডভোকেট জেনেরাল কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘একবার নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে রাজ্যের হাতে আর কিছু থাকে না ৷ এখন সমস্ত দায়িত্বই নির্বাচন কমিশনের ৷’’
অন্যদিকে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনেরাল বলেন , ‘‘বিজ্ঞপ্তি জারির অনেক আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে চলে এসেছে ৷ যাতে মানুষের মনে কোনও ভয়, ভীতি বা আশঙ্কা না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷ আগামী দিনে প্রয়োজন মাফিক দফায় দফায় আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে ৷ পাশাপাশি, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও সমস্যা তৈরি না হয়, তারজন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ প্রার্থীরা চাইলে অনলাইনেই গোটা প্রক্রিয়া সারতে পারবেন ৷ না হলে সশরীরে গিয়েও মনোনয়ন তুলতে ও জমা দিতে পারবেন ৷’’
আরও পড়ুন: ভোটের আবহে রাজ্য়কে শান্ত রাখার দাবিতে রুজু জনস্বার্থ মামলা
প্রসঙ্গত, রাজ্যে নির্বাচন চলাকালীন এবং তার পরবর্তী সময়ে যাতে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকে, সে বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন রাজ্যের প্রাক্তন অ্য়াডভোকেট জেনেরাল তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিমলকুমার চট্টোপাধ্যায় ৷
উল্লেখ্য, এর কিছুদিন আগেই এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিমল ৷ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু প্রধান বিচারপতি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের না করলেও বর্ষীয়ান আইনজীবীকে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন গত 26 ফেব্রুয়ারি ৷ তারই প্রেক্ষিতে এই মামলা ৷