কলকাতা, 6 মার্চ : ই-প্রেসক্রিপশনের পরিষেবা এবার চালু হবে কলকাতার ইনফেকশাস ডিজ়িজ়েস অ্যান্ড বেলেঘাটা জেনেরাল (ID&BG) হাসপাতালে । আর এই পরিষেবার হাত ধরে তৈরি করা হবে রোগীদের তথ্যভাণ্ডার । গবেষণার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এই তথ্যভাণ্ডার বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । যার ফলে আগামীদিনে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের চিকিৎসায় নয়া দিশা মিলবে বলেও আশা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ।
ই-প্রেসক্রিপশনের পরিষেবা চালুর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ইতিমধ্যেই হাসপাতালের আউটডোর টিকিটের বিষয়টি সম্প্রতি কম্পিউটারাইজ়ড করা হয়েছে । এর আগে রোগী দেখার পরে আউটডোরের টিকিটে ওষুধের নাম লিখে দিতেন চিকিৎসকরা । কতদিনের জন্য কতগুলি ওষুধ দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট রোগীকে তারজন্য সেই টিকিটের সঙ্গে মেডিসিনের একটি স্লিপ দেওয়া হতো । ফার্মাসিতে ওই স্লিপ জমা দেওয়ার পরে ওষুধ মিলত । এবং আউটডোরের টিকিট ফেরত দেওয়া হতো । সিস্টেম এখন কম্পিউটারাইজ়ড হওয়ায় যে টিকিট করা হবে সেটার এন্ট্রি হয়ে যাবে । টিকিটের যে প্রিন্ট আউট দেওয়া হবে সেখানে একটি বার কোড থাকবে । প্রত্যেকটি টিকিটের ক্ষেত্রে পৃথক বার কোড থাকবে । স্বাভাবিকভাবে ওষুধ নেওয়ার জন্য ফার্মাসিতে আর আলাদা করে মেডিসিনের স্লিপের দরকার হবে না । বার কোড স্ক্যান করলে অথবা রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি টাইপ করলে সরাসরি ফার্মাসির কম্পিউটার স্ক্রিনে চলে আসবে সংশ্লিষ্ট রোগীর তথ্য । ফার্মাসি থেকে এখন যে প্রিন্ট আউট দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ওষুধের নাম, কতগুলি ওষুধ এবং তার দাম কত, সে সব থাকছে । একই সঙ্গে ওই ওষুধ যে ফ্রি-তে দেওয়া হচ্ছে, তারও উল্লেখ থাকছে ।
ID&BG হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল (MSVP) আশিস মান্না বলেন, "ই-প্রেসক্রিপশনে পুরো ব্যাপারটা আর লিখিত হিসাবে না থেকে কম্পিউটারাইজ়ড হয়ে যাবে । একবারে প্রিন্টআউট বের হবে ফার্মাসি থেকে ওষুধ নেওয়ার পরে । অর্থাৎ আউটডোরের টিকিট হওয়া মাত্র, সেটা ডাক্তারবাবুর কম্পিউটারের স্ক্রিনে দেখা যাবে । রোগীকে দেখে ডাক্তারবাবু ওষুধ লিখবেন কম্পিউটারের মাধ্যমে । কোন ওষুধ, কতগুলি লাগবে, সে সব তখন ফার্মাসির কম্পিউটার থেকে দেখা যাবে ।"
আশিসবাবু আরও বলেন, "এই পুরো ব্যাপারটায় কাগজ ধ্বংসকারী একটি প্রক্রিয়া থেকে আমরা অনেকটাই রেহাই পাব । এর ফলে অনেক দ্রুত কাজ করা যাবে ।" এমনও দেখা যায় যে অনেক সময় রোগী বা তাঁর পরিজনরা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনেন না বা আনতে ভুলে যান ৷ কিংবা সেগুলি কোনও কারণে নষ্ট বা চুরি হয়ে গেছে বলে জানান । একথা জানিয়ে আশিসবাবু বলেন, "কম্পিউটারে এন্ট্রি থাকলে প্রয়োজনে কোনও রোগীর যাবতীয় তথ্য আমাদের চিকিৎসকরা দেখতে পারবেন । ই-প্রেসক্রিপশনের পরিষেবা আমাদের এখানে চালু হয়ে গেলে অনেক বেশি সংখ্যক রোগীকে সহজে দেখা সম্ভব হবে । দ্বিতীয় আরও একটি জিনিস হবে আর সেটা হল ডকুমেন্টেশন । রোগীর জন্য কী ওষুধ লেখা হল, পরীক্ষা-নিরীক্ষা কী কী হল, পুরো ব্যাপারটাই তথ্যভাণ্ডার হিসাবে থেকে যাবে । পরবর্তীকালে ওই তথ্য যাচাই করাও সহজ হবে । যে কোনও বিষয়ে গবেষণার জন্য এই তথ্যভাণ্ডার কাজে লাগবে ।"