কলকাতা, 22 ফেব্রুয়ারি : প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের। প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাগুলির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে ৷ ফলে 16 হাজার 500টি শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত থমকে গেল ৷
ইতিমধ্যেই 15 হাজারেরও বেশি পদে নিয়োগের জন্য মেধাতালিকা প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ৷ কিন্তু সেই মেধাতালিকায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেইসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ, সোমবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷
গত 18 ফেব্রুয়ারি প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা এবং নিয়ম না মানার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। কয়েকশো চাকরিপ্রার্থী মামলা করেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে। অভিযোগ, মেধাতালিকা প্রকাশ না করেই নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে নির্দিষ্ট দু’টি ছুটির দিনেই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সাতটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যেখানে দেখা যায়, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগের এক-একটি ধাপ শেষ করে ফেলেছেন নিয়োগকর্তারা। এমন বহু নমুনা আছে যেখানে নিয়োগে অস্বচ্ছতার উদাহরণ রয়েছে বলে দাবি করেনআইনজীবীরা।
মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফ এ লক্ষ্মী গুপ্ত জানান, 16 হাজার 500টি শূন্য পদের জন্য প্রথম দফায় 15 হাজার 228 জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয় ৷ বাকি 1 হাজার 216টি পদ শূন্য রাখা হয়েছে, যাঁরা ভুল মামলায় আবেদন করেছেন বা অনলাইনে আবেদন করতে পারেননি তাঁদের জন্য ৷
কিন্তু মামলাকারীদের তরফে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সবকিছুর একটা স্বচ্ছতা থাকা দরকার। এইভাবে কিছু প্রার্থীর নাম মেধাতালিকায় প্রকাশ করা হল, আবার কিছু প্রার্থীর নাম পরে প্রকাশের জন্য তুলে রাখা হল, এভাবে নিয়োগ করা যায় না ৷ সমস্ত প্রার্থীর মেধাতালিকাই একসঙ্গে প্রকাশ করা উচিত ৷’’
এর জবাবে সংসদের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, ‘‘মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল ৷ কিন্তু সাইবার ক্রাইমের কারণে সেই তালিকা তুলে নেওয়া হয় ওয়েবসাইট থেকে। ওয়েবসাইট হ্য়াক করা হয়েছিল ৷ ইতিমধ্যেই তার প্রেক্ষিতে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয় ৷’’
আরও পড়ুন: ফের প্রশ্নের মুখে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, হাইকোর্টে রুজু মামলা
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি নির্দেশ দেন, আপাতত সমস্ত নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে ৷ চার সপ্তাহ পর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে ৷ তার দু’সপ্তাহ পর মামলাকারীদের এর জবাব দিতে হবে ৷ এবং এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি থাকবে ৷