কলকাতা, 18 জুন : আগামী 1 জুলাই থেকে 14 জুলাই অবধি হতে চলেছে ISC বোর্ডের বাকি থাকা পরীক্ষাগুলি। কোরোনা আবহে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক করে দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে কলকাতার একটি নামী ICSE/ISC বোর্ডের বেসরকারি স্কুলের তরফ থেকে পরীক্ষা নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে যেখানে অভিভাবকদের বলা হয়েছে, পরীক্ষায় বসতে গেলে সন্তানদের কোভিড-19 পরীক্ষা করাতে হবে এবং নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এই নির্দেশিকা ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে বিতর্কের।
মধ্য কলকাতার সেন্ট অগাস্টিন ডে স্কুলের তরফ থেকে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, "আপনার সন্তান যদি পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুক হয়, তাহলে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হচ্ছে সন্তানদের কোভিড পরীক্ষা করাতে। পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলে তা স্কুলের জমা করতে হবে। এই রিপোর্টের মাধ্যমে পরীক্ষায় বসা সকল পড়ুয়াদের এবং ICSE পরীক্ষার পরিবর্তিত দিনগুলোতে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সকলের সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করবে।"
স্কুলের প্রিন্সিপাল আর এস গ্যাসপার স্বাক্ষরিত সেই নির্দেশিকায় দুটি সরকার অনুমোদিত প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরির নামও দেওয়া হয়েছে যেখানে কোভিড-19 পরীক্ষা করানো হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ওই দুটি বা অন্য কোনও সরকার অনুমোদিত ল্যাবে অভিভাবকরা কোভিড পরীক্ষা করাতে পারেন। 25 জুনের মধ্যে অভিভাবকদের তাঁদের সন্তানের কোরোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে ।
এই নির্দেশিকা ঘিরে চরম বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কাউন্সিলের নির্দেশ না থাকা সত্ত্বেও কী করে স্কুলের তরফ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই এই নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলেই দাবি করেন প্রিন্সিপাল আর এস গ্যাসপার।
তিনি বলেন, " আমাদের স্কুলটি রেড জ়োনের অন্তর্গত। সুরক্ষা বিধি হিসেবেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে । এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। একটি বেসরকারি হাসপাতাল, যেখানে কোভিড -19 চিকিৎসা হচ্ছে, সেখানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে । তারা যে গাইডলাইন দিয়েছেন, সেই অনুযায়ীই আমরা পদক্ষেপ করেছি। আমাদের তো সুরক্ষার দিকটাও দেখতে হবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার মধুমেহ আছে। কোনও কিছু হয়ে গেলে তার দায় কে নেবে? এছাড়া, পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুক অনেক পড়ুয়াও রেড জ়োন থেকে আসবেন। তাই আমরা বাধ্য হয়েছি এই পদক্ষেপ করতে। ফ্রান্সে একজন পড়ুয়ার থেকে 70 জন পড়ুয়া কোরোনা আক্রান্ত হয়েছে । সেই দিক থেকে ভাবতে গেলে অবশ্যই ভয়ের একটি বিষয় রয়েছে। কোনও পড়ুয়া সংক্রমিত হলে, অভিভাবকেরা আমাদেরই ধরবে। তাই নিজেদের দিক থেকে কোনও খামতি না রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব পড়ুয়া পরীক্ষা দিতে আসবে, তাদের কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসতে হবে। তারপরও কিছু হলে আমরা অন্তত বলতে পারব, আমাদের তরফ থেকে যথাসাধ্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। "