বর্ধমান, 4 অগাস্ট : দিন ছয়েক আগে রেললাইনের ধারে মিলেছিল ক্ষতবিক্ষত এক যুবকের দেহ ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মৃত যুবকের নাম কার্তিক ঘোষ ৷ কার্তিককে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় আশা রায় নামে এক মহিলা ও তাঁর স্বামী বাপি রায়কে । দু'জনেই পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকার করেছেন । আজ তাঁদের পূর্ব-বর্ধমান জেলা আদালতে তোলা হবে ৷
বর্ধমানের নেড়োদিঘি ভোতার পাড় এলাকার বাসিন্দা আশা রায় ও বাপি রায় । একই পাড়ায় বাড়ি কার্তিকেরও ৷ কার্তিক জামশেদপুরে কাজ করতেন ৷ কিন্তু কয়েকমাস হল তিনি বাড়িতেই আছেন ৷ এরই মধ্যে আশার সঙ্গে কার্তিক প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ৷ কিন্তু তাঁদের এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যান বাপি ৷ শুরু হয় অশান্তি ৷ প্রতিবেশীরাও কার্তিক ও আশার মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন ৷ যার জেরে অশান্তি চরমে ওঠে ৷ অশান্তির জেরে মাস চারেক আগে আশা ও বাপি বর্ধমানের বাড়ি ছেড়ে শক্তিগড়ে চলে যান ৷ সেখানে ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন । কার্তিকের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করতে চেয়েছিলেন আশা ৷ কিন্তু কার্তিক হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে দেখা করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তাঁকে । এমন কী সম্পর্ক ছিন্ন করলে তাঁদের বর্ধমানের বাড়িতে ও পাড়ায় ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন । এদিকে আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় দিনের পর দিন ভাড়া বাড়িতে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠছিল আশা ও বাপির । এর থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য 28 জুলাই কার্তিককে দেখা করতে বলেন আশা ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, আশা যেখানে কার্তিককে দেখা করতে বলেছিলেন সেখানে আগে থেকেই লুকিয়ে ছিলেন বাপি ৷ কার্তিক সেখানে পৌঁছাতেই ধারালো কাস্তে নিয়ে হামলা চালান বাপি ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় কার্তিক মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ইট ও সিমেন্টের চাং দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন বাপি ৷ বাপিকে সাহায্য করেন আশাও ৷ পরে দেহ রেললাইনের পাশে ফেলে পালিয়ে যান দু'জনে ৷
পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায় জানান, তদন্তে নেমে পুলিশ কার্তিকের সঙ্গে আশার সম্পর্কের কথা জানতে পারে । সেই সূত্র ধরে কললিস্ট ঘেঁটে পুলিশ আশা রায়কে গ্রেপ্তার করে ৷ আশা খুনের কথা স্বীকার করলে তাঁর স্বামী বাপিকে মেমারি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ পথের কাঁটা সরাতেই স্বামীর সঙ্গে শলা-পরামর্শ সেরে উভয়ে মিলে খুন করে কার্তিককে ৷