আসানসোল, 29 জুলাই: "জয়শ্রীরাম" বলতে বাধ্য করায় খুন সুরজকে ৷ ইটিভি ভারতের ক্যামেরার সামনে দাবি করল অভিযুক্ত মহম্মদ কালিম ইলিয়াস, ওরফে ছোটু ৷
আসানসোলের সুরজ বাহাদুর হত্যা মামলায় নতুন মোড় । গতকাল গ্রেপ্তার করা হয় সুরজ খুনে মূল অভিযু্ক্ত মহম্মদ কালিম ইলিয়াসকে ৷ পুলিশের দাবি, সুরজকে খুনের কথা স্বীকার করেছে কালিম ৷ আজ আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ক্যামেরার সামনে কালিম বলে, "জয়শ্রীরাম " বলতে বাধ্য করায় সুরজকে খুন করে সে ৷ যদিও পরমুহূর্তেই জানায়, ভুল করে খুন করে ফেলেছে ৷
চলতি মাসের 23 তারিখ আসানসোল উত্তর থানার অন্তর্গত শিবলাল ডাঙার কাছে রেলপারে এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় ৷ শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন । স্থানীয়রা দেহটি পড়ে থাকতে দেখে খবর দেয় আসানসোল উত্তর থানায় ৷ পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ৷ ময়নাতদন্তের জন্য প্রথমে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ ৷ কিন্তু ময়নাতদন্ত ছাড়াই সেখান থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় ৷ অন্যদিকে সেদিনই সুরজ বাহাদুর নামে এক যুবকের পরিবার আসানসোল উত্তর থানায় একটি মিসিং ডায়রি করে ৷ পরে মৃতদেহ শনাক্ত করে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অজ্ঞাত পরিচয় ওই যুবকই সুরজ ৷ এরপর 24 তারিখ বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে সুরজের মৃতদেহ সরাসরি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ পরিবারের উপস্থিতিতে সৎকার হয় ৷
আরও পড়ুন : আসানসোলে যুবকের মৃত্যু ঘিরে রাজনীতি তুঙ্গে
22 জুলাই হিরাপুরের কালাঝরিয়াতে এক ফেরিওয়ালাকে জোর করা “জয়শ্রীরাম” বলানোর চেষ্টায় মারধর, এদিকে সুরজের হত্যা । দুই মিলিয়ে আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে । গুজব ছড়াতে শুরু করে সোশাল মিডিয়ায় । যার জেরে পুলিশ বাধ্য হয়ে 30 জুলাই পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয় ।
এরপর 27 জুলাই সুরজের বাড়ি গেছিলেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি । পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন ৷ গতকাল গেছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক । পরে বেলার দিকে যায় BJP-র প্রতিনিধি দল ৷ BJP-র পক্ষ থেকে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল আসানসোল উত্তর থানা ঘেরাও করা হয় ৷ এরপর গতকাল আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ কালিমকে গ্রেপ্তার করে ৷ তার বাড়ি ধাদকার কালালি এলাকায় ।
এবিষয়ে BJP-র আসানসোলের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনা শাসকদলের চক্রান্ত ৷ যে কোনও ঘটনা হলেই এখন "জয়শ্রীরাম"-কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ এটা সাজানো মিথ্যে ঘটনা ৷ এরা আগুন নিয়ে খেলছে ৷
অন্যদিকে পশ্চিম-বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, এটা সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ব্যপার ৷ এবিষয়ে রাজনৈতিক কোনও মন্তব্য তিনি করতে চাননি ৷