হায়দরাবাদ, 26 ডিসেম্বর: আমরা একটি বাড়ি,গাড়ি কিনতে বা আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে ঋণ নিই । এই ঋণ বিভিন্ন ধরণের হয় ৷ যেমন ধরুন - হোম লোন বা বাড়ির ঋণ, গাড়ির ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ, সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ, শিক্ষাগত ঋণ-সহ ক্রেডিট কার্ড ঋণ প্রভৃতি ৷ আমাদের এই সমস্ত ঋণের উপর গভীর নজর রাখতে হবে ৷ একটি পরিকল্পনা তৈরি করে সঠিকভাবে তা পরিচালনা করতে হবে । যদি তা না হয়, নিশ্চিতভাবে এই সমস্ত ঋণে বেশি সুদ এবং কোনও অতিরিক্ত সুবিধা ছাড়াই আরও বেশি অর্থ দিতে হবে (High interest rates nibble away at income) ৷
আরবিআই (Reserve Bank of India) রেপো রেট বাড়ানোর পরে বাড়ির ঋণের উপর সুদের হার আবার বাড়তে শুরু করেছে (RBI increased Repo rate) । অনেক ব্যাংক ইতিমধ্যেই তাদের রেপো-ভিত্তিক ঋণের হার সংশোধন করেছে (Banks are hiking interest rates) । এর কারণে অনেকের ঋণের মেয়াদে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে । 20 বছরের মেয়াদের জন্য নেওয়া ঋণ এখন নিষ্পত্তি হতে 27-28 বছর সময় লাগতে পারে । আর এর জেরে ঋণগ্রহীতারা যত দ্রুত সম্ভব তাদের গৃহঋণ পরিশোধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন । অন্যদিকে যাদের গৃহঋণ, যানবাহন ও ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে তাদের মধ্যে কোনটিকে দ্রুত শোধ করা যায়, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকে ।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা সর্বদা ঋণগ্রহীতাদের বেশি সুদের ঋণ প্রথমে শোধ করার পরামর্শ দেন (Pay off high interest loans) । ব্যক্তিগত ঋণের সুদ প্রায় 16 শতাংশ। প্রদত্ত সুদ কর ছাড়যোগ্য নয় । ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নিলেও একই অবস্থা । গৃহঋণের সুদ বর্তমানে 8.75-9 শতাংশ । যত দ্রুত সম্ভব ব্যক্তিগত, যানবাহন এবং ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধ করাটা ভালো ৷ তার জন্য ঋণগ্রহীতাদের প্রতিবার ছোট ছোট আকারে ঋণ মেটানোর পথে হাটা উচিত । অনেকেই হয়তো সোনার ওপর ঋণ নিয়েছেন । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করুন ।
আরও পড়ুন: একাধিক বিনিয়োগের মাধ্যমে শিশু কন্যার ভবিষ্যত সুরক্ষিত করুন
হোম লোন বা ঋণের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা রয়েছে । যেহেতু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ, তাই সুদের হার পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি এবং হ্রাস হয় । এই ঋণে প্রদত্ত সুদ 2 লক্ষ টাকা অবধি সর্বোচ্চ আয়কর (income tax) থেকে ধার্য করা হয়েছে । ধারা 80সি এর অধীনে 1 লক্ষ 50 হাজার টাকার সীমা অবধি ছাড় দেওয়া হয়েছে । সুদের হার 7 শতাংশের নিচে থাকাকালীন যারা গৃহঋণ নিয়েছিলেন এখন তাদের মেয়াদ হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে । বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এটি নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই । ভবিষ্যতে সুদের হার কমলে, ঋণ শোধের সময়কাল সেই অনুযায়ী হ্রাস পাবে ।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে যারা 4-5 বছর পর অবসর (retirement) নেবেন, তাদের একবার হোম ঋণ নিয়ে পর্যালোচনা করা উচিত । ঋণ পরিশোধ করতে কতদিন সময় লাগে তা সঠিকভাবে জেনে নিন । তার উপর নির্ভর করে কত টাকা দিতে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত । যেহেতু এই বয়সের লোকেরা বেশি করে ট্যাক্স দেয়, তারা যদি একবারে পুরো ঋণ পরিশোধ করে, তবে করের বোঝা বেশি হবে । ঋণের মেয়াদ শেষের কাছাকাছি হওয়ায় সুদ বেশি নাও হতে পারে । এই দুটি বিষয় (two factors) বিবেচনা করেই তারপর অগ্রিম টাকা দেওয়া উচিত ।
আরও পড়ুন: ঋণ নিতে গেলে ক্রেডিট স্কোর ভাল হতেই হবে
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, নতুন ঋণগ্রহীতাদের (new borrowers) কিছু পরিমাণ টাকা জমা করে রাখা উচিত । এটি তাদের সময়ে সময়ে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে বোঝা কমাতে সাহায্য করবে ।