শিলিগুড়ি, 22 মে : রয়ে গেল আক্ষেপ। মাত্র এক নম্বরের জন্য প্রথম দশে স্থান হল না শিলিগুড়ি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ঊর্যস্বী পাল এবং বাণীমন্দির রেলওয়ে হাইস্কুলের সপ্তদীপা হালদারের ।
২০১৮ - ১৯ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকে প্রথম দশে স্থান পেল না শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলা । শিক্ষামহলের একাংশের দাবি শিলিগুড়িতে এই প্রজন্মের মেধাবী পড়ুয়ারা ইংরেজি মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছে । তাই ইংরেজি মাধ্যমের সর্বভারতীয় বোর্ডগুলির পরীক্ষায় শিলিগুড়ির ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফল করলেও বাংলা মাধ্যমের বোর্ড পরীক্ষায় ফলাফল কার্যত তলানিতে ।
এবার মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম দশে ৫১ জন মেধা তালিকায় জায়গা করে নিতে পারলেও তাদের মধ্যে শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার কেউ নেই । শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে হাতিয়াডাঙ্গার বাসিন্দা ঊর্যস্বী ও সাউথ আম্বেদকর কলোনির সপ্তদীপা । দুজনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০।
ঊর্যস্বীর বাবা রামকৃষ্ণ পাল শিলিগুড়ি বুদ্ধভারতী উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক । মা বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা । গান ও ছবি আঁকায় ঊর্যস্বীর ঝোঁক রয়েছে । সঙ্গে পড়াশোনা চলে সমানতালে । সে বলে, "ভালো ফল আশা করেছিলাম। তবে এক নম্বরের জন্য মেধা তালিকায় স্থান পেলাম না এটা আক্ষেপের।"
শিলিগুড়ির সাউথ আম্বেদকর কলোনির বাসিন্দা সপ্তদীপা হালদারের বাবা আশিস কুমার হালদার হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক । বাড়িতেই প্রাক্টিস করেন । মা সুমি হালদার ফিজ়িওথেরাপিস্ট । তবে মেয়ের পড়াশোনার প্রতি নজর দিতে বছর দুই আগে সেই পেশা ছেড়েছেন। সপ্তদীপা বলে, "ভালো ফল আশা করেছিলাম। এক নম্বরের জন্য মেধা তালিকায় স্থান পেলাম না । পরীক্ষার মাত্র ১৫ দিন আগে পথ দুর্ঘটনায় হাতে ও মুখে চোট লেগেছিল । পড়াশোনা একপ্রকার বন্ধ হয়ে পড়েছিল। সেসময় মা পড়ে শোনাত । আমি শুনে শুনে মনে রাখতাম। হাতে চোট থাকায় বাংলা পরীক্ষা খুব একটা ভালো দিতে পারিনি । "
শিলিগুড়ি গার্লস হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা ব্যানার্জি বলেন, "মেধা তালিকায় নাম নেই স্কুলের । এমনকি শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলাও স্থান পায়নি । তবে আমাদের স্কুলের ছাত্রী জেলায় প্রথম হয়েছে । ভালো লাগছে। অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা সোশাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটাচ্ছে । তার কুপ্রভাব পড়ছে পড়াশুনোয় । ফলত মান কমছে । "
অন্যদিকে, বাণীমন্দির রেলওয়ে হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল ইনচার্জ পিটার সেলস্টাইন খালকো বলেন, "মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা এখন বেশি করে ইংরেজি মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছে । তাই জেলায় ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলিতে ফল ভালো হচ্ছে কিন্তু বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলির ফল তলানিতে ।"