বারাসত, 26জুন : বেহাল দশা 34 নম্বর জাতীয় সড়কের । প্রায়ই ঘটছে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা । গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সড়ক সংস্কারের দাবিতে পথে নামল বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা । আজ বারাসতের কলোনি মোড়ে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল তারা । আন্দোলনের জেরে জাতীয় সড়কে যানচলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় । পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সরালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
বারাসত থেকে সন্তোষপুর পর্যন্ত 34 নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তার দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা । বর্ষা শুরু হতেই রাস্তার সেই বেহাল দশা আরও প্রকট হয়েছে । চারিদিকে অজস্র ছোটো বড় গর্ত । পিচের প্রলেপ পর্যন্ত বাইরে বেরিয়ে এসেছে । এই অবস্থায় একপ্রকার প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে । সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে চালকদেরও । এক কিলোমিটার রাস্তা পের হতে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে তাঁদের । কখনও কখনও রাস্তার গাড্ডায় পড়ে বিকল হচ্ছে গাড়িও ।
লকডাউনের জেরে গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজ কার্যত থমকে গিয়েছে । সংস্কার না হওয়ার কারনে প্রায়শই লেগে রয়েছে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা । সেই কারণে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আজ দুপুরে পথে নেমে অবরোধ বিক্ষোভে সামিল হন বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা । বারাসত কলোনি মোড়ে 34 নম্বর জাতীয় সড়কে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন জেলা বাম নেতা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, দেবব্রত বসু, অমলেন্দু দেবনাথ ও জেলা কংগ্রেস নেতা খোকা বোস । প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে চলে এই অবরোধ বিক্ষোভ । আন্দোলনের জেরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয় 34 নম্বর জাতীয় সড়কে ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে পুলিশ । বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করে । কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় এরপর জোর করেই আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয় সেখান থেকে । এরপর ধীরে ধীরে জাতীয় সড়কের যানচলাচল স্বাভাবিক হয় ।
এই বিষয়ে জেলা বাম নেতা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বারাসত ডাকবাংলো মোড় থেকে সন্তোষপুর পর্যন্ত 34 নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা দীর্ঘদিন বেহাল । অথচ, রাস্তা সংস্কারের কোনও উদ্যোগই দেখা যায়নি সরকার কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের । তার ফলে প্রতি মুহূর্তে বিপদ বাড়ছে জাতীয় সড়কে । ঘটছে দুর্ঘটনাও । তৃণমূলের আমলে সবকিছুতেই দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট রাজ চলছে । যার ফলে রাস্তা সারাই হলেও সেই রাস্তা টিকছে না বেশিদিন।”
আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় । তিনি অভিযোগ করেন, “ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও এধার-ওধার করছেন তৃনমূল নেতা ও কর্মীরা । প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের টাকায় পাচ্ছেন না । এই অবস্থা বেশিদিন চলতে পারে না । তাই জাতীয় সড়ক সংস্কার ও আমফানের টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়ার দাবিতে আজ আমরা প্রতীকী অবরোধ বিক্ষোভে সামিল হয়েছি।”
দ্রুত 34 নম্বর জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু না হলে ফের বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই বাম নেতা । স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, 34 নম্বর জাতীয় সড়ক সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আলোচনা হয়েছে । শীঘ্রই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে ।