হায়দরাবাদ, 13 সেপ্টেম্বর : ইন্ডিয়ান সুপার লিগ - এখানে প্রতিভার সঙ্গে সুযোগের মেলবন্ধন হয় । বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় T20 লিগের ট্রফিতে এই কথাগুলি লেখা আছে । 2008 সালে যার শুভসূচনা। এখনও পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটের অনেক তারকার জন্ম হয়েছে এখানে । আর অশ্বিন থেকে জাসপ্রীত বুমরা সবাই এই লিগের আবিষ্কার ।
তবে এই লিগ যেমন সাফল্য দেখেছে, তেমনি এক মরশুমে ভালো খেলা ক্রিকেটারকে পরের মরশুম খুব খারাপ খেলতেও দেখেছে ।
তেমনি বছরের পর বছর ধরে এক মরশুমে ভালো খেলা কয়েকজন ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়া যাক।
পল ভালথাটি (কিংস ইলেভেন পঞ্জাব)
2011 মরশুমে পল ভালথাটির রূপে নতুন তারকাকে পেয়েছিল । গোটা মরশুমজুড়ে দুরন্ত ব্যাটিং করেন ডান হাতি ব্যাটসম্যান । 14 টি ম্যাচে 463 রান করেছিলেন তিনি । গড় ছিল 35.61। সর্বোচ্চ রান ছিল অপরাজিত 120 ।
তিনি সংবাদের শিরোনামে আসেন চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে 63 বলে 120 রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে । এটা এমনই একটি ইনিংস ছিল যে সবাই তাঁকে ভবিষ্যতের জাতীয় দলের তারকা বলে চিহ্নিত করেছিল । সেই মরশুমের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান শিকারি ছিলেন তিনি ।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পরের মরশুমে ব্যর্থ হন । 2012 মরশুমে 6 ও 2013 মরশুমে মাত্র 1টি ম্যাচে তাঁকে মাঠে দেখা যায় । পরের বছরগুলিতে তিনি মাত্র 30 রান করেছিলেন । বর্তমানে ভালথাটি এয়ার ইন্ডিয়ার হয়ে খেলেন । সেখানেই কর্মরত তিনি ।
রাহুল শর্মা (ডেকান চার্জারস )
এই তরুণ স্পিনারকে আর অশ্বিনের সঙ্গে তুলনা করা হত । তাঁর প্রথম মরশুম 2011 সালে সচিন তেন্ডুলকরের উইকেট নিয়ে শিরোনামে আসেন । সেই মরশুমে 14 ম্যাচে 13 টি উইকেট নেন । গড় ছিল 17.06 ।
তারপর পুনে ওয়ারিয়ার্স ইন্ডিয়ার হয়ে খেলেন । জাতীয় দলেও ডাক পান । সেখানে 4টি ওয়ান ডে ও 2টি T20 ম্যাচ খেলেন । 2012 সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি ।
যদিও তাঁর কেরিয়ারের ইতি পরে মুম্বাইয়ের একটি নাইট পার্টিতে ধরা পড়ে। তাঁর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার ওয়েন পারনেলও ছিলেন । এবং মাদক নেওয়ার পরীক্ষাতে, তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে । বর্তমানে পঞ্জাবের আন্তঃজেলা ক্রিকেট খেলছেন । এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরের চেষ্টা করছেন ।
স্বপ্নিল আসনদকার ( রাজস্থান রয়্যালস)
2008 সালের প্রথম ইন্ডিয়ান সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় রাজস্থান রয়্যালস । সেই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন স্বপ্নিল আসনদকার । এই ডান হাতি ব্যাটসম্যান 9 ম্যাচে 311 রান করেন । দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রেম স্মিথের সঙ্গে জুড়ি বেঁধে টুর্নামেন্টে 418 রান করেন । তাদের গড় ছিল 59.71 ।
যদিও তার পরের যে 11 টি IPL ম্যাচে তিনি খেলেছিলেন তাতে মাত্র 112 রান করেন । তারপর যেন তিনি অদৃশ্য হয়ে যান । এখন গোয়ার ঘোরায়া দলেও তাঁর জায়গা হয় না ।
মানভিন্দর বিসলা ( কলকাতা নাইট রাইডার্স )
কলকাতা নাইট রাইডার্স এর প্রথম ট্রফি জয়ের ফাইনাল ম্যাচের নায়ক মানভিন্দর বিসলা । চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে 2012 সালের সেই ফাইনালে তিনি করেছিলেন 89 রান ।
2009 সালে পঞ্জাবের এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যানকে প্রথম দলে নেয় ডেকান চারজার্স । কিন্তু মাত্র 6টি ম্যাচ খেলেছিলেন। 2013 সালে 14 ম্যাচে 255 রান করেন ।
2015 মরশুমে কলকাতা তাঁকে ছেড়ে দেয় । তিনি বেঙ্গালুরুতে যোগ দেন । কিন্তু বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে বসে থাকতে হয় তাঁকে । এর পর তাঁকে আর IPL এ দেখা যায়নি ।
ডাগ বোলিংজার ( চেন্নাই সুপার কিংস )
এক সময় IPL এর সেরা তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে ডাগ বোলিংজারকে রাখা হত । 2010 সালে তাঁকে প্রথম দলে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। সেই বছর প্রথম IPL ট্রফি ঘরে তোলে চেন্নাই । 2012 সাল পর্যন্ত চেন্নাইয়ে ছিলেন তিনি । হলুদ ব্রিগেডের 2টি ট্রফি জয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু তারপর থেকে তাঁকে আর IPL এ দেখা যায়নি ।