কলকাতা, 14 জুলাই: কলকতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ। পৃথক দুই ঘটনার ভিত্তিতে ওঠে এই অভিযোগ। এই দুই ঘটনাতেই সন্তানের জন্মের পরে দুই প্রসূতি-মায়ের মৃত্যু হয়। ঘটনা পৃথক হলেও অভিযোগ একই রকমের হওয়ায়, এই দুই অভিযোগের বিচার শেষে একসঙ্গে রায় দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এসটাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন। গতকাল, এই রায়ে, এই দুই ঘটনায় বেসরকারি ওই হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
বেসরকারি এই হাসপাতালটি দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরে অবস্থিত। গতকাল, সোমবার পৃথক এই দুই অভিযোগের বিচার শেষে রায় দিতে গিয়ে কমিশন জানিয়েছে, একই হাসপাতালে দুটি পৃথক ঘটনা একই রকমের। একটি অভিযোগের পরে আরও একটি অভিযোগ জমা পড়ে। পর পর দুই দিন কীভাবে একই ধরনের এমন দুটি ঘটনা হল, তা নিয়ে বিস্মিত কমিশন। এই দুই পৃথক ঘটনায়, জন্মের পর পর-ই নবজাতকরা তাদের মায়েদের হারিয়েছে। একটি ঘটনায় এক প্রসূতি-মা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। অন্য একটি ঘটনায় এক প্রসূতি-মা যমজ সন্তানের জন্ম দেন। যমজ সন্তানের একজন শিশুকন্যা, অন্যজন শিশুপুত্র। এই দুই প্রসূতি মায়ের এটাই প্রথম সন্তান।
2019-এর 11 জুলাই রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ পৌলমী ভট্টাচার্য নামে এক অন্তঃসত্ত্বাকে বেসরকারি ওই হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। ওই দিন সকাল ছ'টা নাগাদ তাঁর সিজার করা হবে বলে চিকিৎসকরা জানান। তবে ওই সময় অপারেশন হয়নি। শুধুমাত্র তাই নয় অপারেশনের সময় বদলাতে থাকে। অবশেষে, 24ঘণ্টা পর সিজার করে এক শিশুকন্যার জন্ম দেন ওই প্রসূতি। ওই দিন বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ অপারেশন থিয়েটার রুম থেকে তাঁকে কেবিনে দেওয়া হয়। তাঁর কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি। তাঁর স্বামী তার সঙ্গে কথা বলেন, তার পর ওই দিন সন্ধ্যা নাগাদ তিনি হাসপাতাল থেকে চলে যান। পরের দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ এই প্রসূতির স্বামীকে হাসপাতাল থেকে ফোনে জানানো হয়, এই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর পরে এই প্রসূতির একটি অপারেশন করা হয়। ওই দিনই সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
মৌশ্রী মণ্ডল নামে অন্য এক অন্তঃসত্ত্বার সিজারের জন্য বেসরকারি ওই হাসপাতালে 2019-এর 12 জুলাই সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সময় নির্ধারণ করেন চিকিৎসকরা। তবে ওই দিন জানানো হয়, সিজার করা হবে সন্ধ্যেবেলায় । অবশেষে ওই দিন বিকেল 3 টে 55 মিনিট নাগাদ সিজার করে যমজ সন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি। ওই দিন সন্ধ্যা ছটা নাগাদ এই প্রসূতির শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। যদিও, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁকে কেবিনে পাঠানো হয়। তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। এই প্রসূতি তখন কথা বলছিলেন। চিকিৎসকরা জানান,এই প্রসূতি ভালো আছেন। প্রসূতির পরিজনরা এর পরে হাসপাতাল থেকে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ চলে যান। পরের দিন 13 জুলাই সকাল 7টা 51 মিনিট নাগাদ এই প্রসূতির স্বামীকে হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, এই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ICU-তে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রসূতি স্বামী হাসপাতালে পৌঁছন সকাল দশটা নাগাদ। তখন তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। ওই দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে এবং বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ জানার পরে, পৃথক এই দুই ঘটনায় গতকাল, সোমবার রায় দেয় কমিশন। কমিশনের এই রায়ে জানানো হয়েছে, এই দুই ঘটনায় বেসরকারি ওই হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা থেকে এই দুই প্রসূতির সন্তানদের নামে 5 লাখ করে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই হিসাবে পৌলমী ভট্টাচার্যর এক শিশুকন্যার নামে 5 লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট এবং মৌশ্রী মণ্ডলের এক শিশুপুত্র এবং এক শিশুকন্যার নামে আড়়াই লাখ টাকা করে ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
দুই প্রসূতির মৃত্যুর রায়, বেসরকারি হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা - সন্তান
কলকতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। গতকাল সেই মামলার রায় দান করে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এসটাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন। রায়ে, এই দুই ঘটনায় বেসরকারি ওই হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
কলকাতা, 14 জুলাই: কলকতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ। পৃথক দুই ঘটনার ভিত্তিতে ওঠে এই অভিযোগ। এই দুই ঘটনাতেই সন্তানের জন্মের পরে দুই প্রসূতি-মায়ের মৃত্যু হয়। ঘটনা পৃথক হলেও অভিযোগ একই রকমের হওয়ায়, এই দুই অভিযোগের বিচার শেষে একসঙ্গে রায় দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এসটাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন। গতকাল, এই রায়ে, এই দুই ঘটনায় বেসরকারি ওই হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
বেসরকারি এই হাসপাতালটি দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরে অবস্থিত। গতকাল, সোমবার পৃথক এই দুই অভিযোগের বিচার শেষে রায় দিতে গিয়ে কমিশন জানিয়েছে, একই হাসপাতালে দুটি পৃথক ঘটনা একই রকমের। একটি অভিযোগের পরে আরও একটি অভিযোগ জমা পড়ে। পর পর দুই দিন কীভাবে একই ধরনের এমন দুটি ঘটনা হল, তা নিয়ে বিস্মিত কমিশন। এই দুই পৃথক ঘটনায়, জন্মের পর পর-ই নবজাতকরা তাদের মায়েদের হারিয়েছে। একটি ঘটনায় এক প্রসূতি-মা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। অন্য একটি ঘটনায় এক প্রসূতি-মা যমজ সন্তানের জন্ম দেন। যমজ সন্তানের একজন শিশুকন্যা, অন্যজন শিশুপুত্র। এই দুই প্রসূতি মায়ের এটাই প্রথম সন্তান।
2019-এর 11 জুলাই রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ পৌলমী ভট্টাচার্য নামে এক অন্তঃসত্ত্বাকে বেসরকারি ওই হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। ওই দিন সকাল ছ'টা নাগাদ তাঁর সিজার করা হবে বলে চিকিৎসকরা জানান। তবে ওই সময় অপারেশন হয়নি। শুধুমাত্র তাই নয় অপারেশনের সময় বদলাতে থাকে। অবশেষে, 24ঘণ্টা পর সিজার করে এক শিশুকন্যার জন্ম দেন ওই প্রসূতি। ওই দিন বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ অপারেশন থিয়েটার রুম থেকে তাঁকে কেবিনে দেওয়া হয়। তাঁর কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি। তাঁর স্বামী তার সঙ্গে কথা বলেন, তার পর ওই দিন সন্ধ্যা নাগাদ তিনি হাসপাতাল থেকে চলে যান। পরের দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ এই প্রসূতির স্বামীকে হাসপাতাল থেকে ফোনে জানানো হয়, এই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর পরে এই প্রসূতির একটি অপারেশন করা হয়। ওই দিনই সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
মৌশ্রী মণ্ডল নামে অন্য এক অন্তঃসত্ত্বার সিজারের জন্য বেসরকারি ওই হাসপাতালে 2019-এর 12 জুলাই সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সময় নির্ধারণ করেন চিকিৎসকরা। তবে ওই দিন জানানো হয়, সিজার করা হবে সন্ধ্যেবেলায় । অবশেষে ওই দিন বিকেল 3 টে 55 মিনিট নাগাদ সিজার করে যমজ সন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি। ওই দিন সন্ধ্যা ছটা নাগাদ এই প্রসূতির শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। যদিও, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁকে কেবিনে পাঠানো হয়। তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। এই প্রসূতি তখন কথা বলছিলেন। চিকিৎসকরা জানান,এই প্রসূতি ভালো আছেন। প্রসূতির পরিজনরা এর পরে হাসপাতাল থেকে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ চলে যান। পরের দিন 13 জুলাই সকাল 7টা 51 মিনিট নাগাদ এই প্রসূতির স্বামীকে হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, এই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ICU-তে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রসূতি স্বামী হাসপাতালে পৌঁছন সকাল দশটা নাগাদ। তখন তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। ওই দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে এবং বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ জানার পরে, পৃথক এই দুই ঘটনায় গতকাল, সোমবার রায় দেয় কমিশন। কমিশনের এই রায়ে জানানো হয়েছে, এই দুই ঘটনায় বেসরকারি ওই হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা থেকে এই দুই প্রসূতির সন্তানদের নামে 5 লাখ করে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই হিসাবে পৌলমী ভট্টাচার্যর এক শিশুকন্যার নামে 5 লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট এবং মৌশ্রী মণ্ডলের এক শিশুপুত্র এবং এক শিশুকন্যার নামে আড়়াই লাখ টাকা করে ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।