হাওড়া, 24 জুন : একাধিক BJP কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি হাওড়ার বাকড়া এলাকার । স্থানীয় দু'জন ব্যক্তির মধ্যে ঝামেলাকে কেন্দ্র করে সমস্যার সূত্রপাত। অভিযোগ, তৃণমূলের কয়েকজন স্থানীয় নেতা ও বাকড়া পঞ্চায়েতের প্রধান সেই ঝামেলায় হস্তক্ষেপ করে । মারধর করা হয় কয়েকজনকে । তারা প্রত্যেকেই এলাকায় BJP কর্মী বলে পরিচিত । ঘটনায় জখম হন কয়েকজন। তারা BJP-তে যোগ দিয়েছেন বলেই এই আক্রমণ বলে অভিযোগ আক্রান্তদের । যদিও পালটা পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ এনেছে তৃণমূল ।
এলাকার এক BJP সমর্থক কাকন দে বলেন, "গতরাতে একটি ছোটো ব্যাপার নিয়ে কথাকাটাকাটি হয় একজন ছেলের সঙ্গে । ওই ছেলেটিকে ব্যাপক মারধর করা হয় । আমরা তখন এখানে ছিলাম । দু'তিনজন ছেলে এসে ওকে আবার মারধর করে । আমরা এখানে এসে ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই । ফিরে এসে এখানে ঝামেলা মিটমাটের আলোচনা করি । হঠাৎ দেখি তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা এমনকী প্রধানও এসে আমাদের সঙ্গে একটা ঝামেলা বাধানোর চেষ্টা করে । আমরা সেই ঝামেলা এখানে মেটানোর চেষ্টা করছিলাম । ওরা প্রচণ্ডভাবে ঠেলাঠেলি করে । আস্তে আস্তে ঝামেলা মিটেও যাচ্ছিল । হঠাৎ করে আবার 300-400 ছেলে এসে আমাদের মারতে শুরু করে । ইট, পাথর ছুড়তে শুরু করে । আমরা আত্মরক্ষার জন্য এদিক ওদিক পালানোর চেষ্টা করি । কিন্তু পালাতে পারিনি । আমার মাথায় আঘাত করে, বেধড়ক মেরেছে । আরও অনেকে আহত হয়েছেন । মহিলাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়েছে ।" কারা মেরেছে? সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরাই আমাদের মারধর করেছে । তৃণমূলের নেতারা কোনও প্রতিবাদ করেনি । আটকাবার চেষ্টাও করেনি । আমরা আগে CPI(M)-এর সমর্থক ছিলাম । এখন আমরা সদ্য BJP-তে যোগ দিয়েছি । সেইটাই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের রাগ । ওই জন্যই আমাদের মারধর করা হল ।"
স্থানীয় মহিলাদের অভিযোগ, তাঁদের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা । মারধরও করা হয় । পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই আক্রমণ চালানো হয়েছে । পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি । দু'দিন ছাড়া ছাড়া ওরা ঝামেলা করছে । পাড়াকে ঠাণ্ডা রাখতে দিচ্ছে না । ছোটো ছোটো ছেলেদের লেলিয়ে দিচ্ছে। দিনরাত হুমকি দিচ্ছে । প্রধান রঞ্জন পালও আমাদের হুমকি দিয়েছে ।
এই বিষয়ে তৃণমূলের যুবনেতা অজয়কুমার সিংয়ের বক্তব্য, "তৃণমূল কংগ্রেস কোথাও কখনও কোনওদিন হামলা করে না । হামলাকে মদতও দেয় না । পশ্চিমবঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের নেত্রী ডাক দিয়েছেন । আমরা সেই শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আছি । আমারা এসব অন্যায় অত্যাচারের সঙ্গে কোনওদিনই জড়িত নয় । আমরা দেখতে পাচ্ছি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে । অতীতে যখন বাম ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হত । কোথাও বলা যাবে না আমরা BJP নেতা অথবা CPI(M) নেতার উপর অত্যাচার করেছি । কিন্তু গতকাল কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের পার্টি অফিসে আক্রমণ করা হয়েছে । সেই প্রসঙ্গে আমাদের দলের সভাপতি রঞ্জন পাল গেছিলেন সেখানকার CPI(M) নেতাকে জিজ্ঞেস করতে । কেন হঠাৎ করে পার্টি অফিসে আক্রমণ চালানো হল তা জানতে চান তিনি । ওই CPI(M) নেতা জানান তিনি বিষয়টি জানেন না । তিনি জানান যাঁরাই করে থাকুক তাঁর ওখানকার কোনও সমর্থক যদি এই কাজ করে থাকে তবে তা খুবই নিন্দনীয় । অন্যায় কাজ ।" এছাড়াও এলাকার কয়েকজন মহিলাকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে । সেই বিষয়ে তিনি বলেন, "CCTV ফুটেজ চেক করে নেওয়া হোক । এরকম কোনও প্রমাণ নেই । যদি একটা নারীর উপরও অত্যাচার হয় তবে আমাদের যা শাস্তি দেওয়া হবে মেনে নেব ।"