কৈমুর (ভভুয়া), 4 ডিসেম্বর: বিহারের কৈমুর জেলার অদ্ভুত এক ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে এক ব্যক্তি শুধু একটি বা দুটি নয়, পরপর তিনটি বিয়ে করেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে দু'বার বিয়ে করেছিলেন এবং তৃতীয় বিয়ে হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। লোকটির প্রথম স্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ থেকে কৈমুরে নিজের বাড়িতে পৌঁছেছেন। যেখানে পরিবারের লোকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। মহিলা তাঁর বৃদ্ধ মা এবং ছোট মেয়েকে নিয়ে গ্রামের প্রধানের কাছে আবেদন করলে গ্রাম পঞ্চায়েত শালিসি সভাও করেন । সেখানেও ওই ব্যক্তি প্রথম স্ত্রীকে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপর ওই মহিলা কুদরা থানা ও ভবুয়া মহিলা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই ব্যক্তি কৈমুরের বাসিন্দা। তার বিয়ের গল্পগুলো সিনেমার গল্পের চেয়ে কিছু কম নয়। তিনি বাংলায় শ্রমিকের কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানে সে তার বন্ধুর স্ত্রীর সাহায্য়ে রিতিকা (কাল্পনিক নাম) নামের এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক হয় । এরপর দুজনেই প্রেমে পড়েন। 2019 সালের 11 জুলাই তাদের দুজনের বিয়ে হয় বলে খবর। কিছুদিন পর বন্ধুর বউয়ের প্রেমে পড়ে যান ওই ব্যক্তি। যার দুই সন্তান ছিল। এরপর দুজনেই বাংলা থেকে পালিয়ে গিয়ে কৈমুরে কোর্ট ম্যারেজ করেন বলে খবর।
ওই ব্যক্তির প্রথম স্ত্রী বলেন, "অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় আমার স্বামী তার বন্ধুর স্ত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। আমার স্বামী ওই মহিলার একটি এমএমএস তৈরি করে ভাইরাল করেছেন। ভাইরাল ভিডিয়োর পর দ্বিতীয় স্ত্রী থানায় মামলা করলে স্বামীকে গ্রেফতার করে। আমি তাকে জেল থেকে বের করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। মুক্তি পাওয়ার পরও তার হুঁশ ফেরেনি। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে থাকার সময় ভিডিয়ো বানিয়ে ভাইরাল করে দেন ওই ব্যক্তি। আমি চুপ করে ছিলাম কারণ আমার একটি কন্যা সন্তান ছিল ।"
এরপর উত্তরপ্রদেশে তৃতীয়বার বিয়ে করেন ওই ব্যক্তি। এখন প্রথম স্ত্রী তৃতীয় বিয়ের খবর পেয়ে ভেঙে পড়েন । মেয়ে ও মাকে নিয়ে কৈমুরে স্বামীর বাড়িতে পৌঁছন তিনি । ওই মহিলা বলেন, "আমি আমার স্বামীকে খুব ভালোবাসি। আমি আমার মেয়ের জন্য লড়াই করছি। স্বামীকে জেল থেকে মুক্ত করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করেছি । আশা করেছিলেন জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি তার ভুল বুঝতে পারবেন কিন্তু তা না হওয়ায় তিনি তৃতীয়বার ইউপিতে বিয়ে করেন।"
ওই মহিলা জানান, তিনি পুলিশ প্রশাসন ও পঞ্চায়েত প্রধানের কাছেও আবেদন করেছেন । এরপরই গ্রামে পঞ্চায়েত শালিসি সভা বসায় । সেখানেও স্ত্রীকে হুমকি দিতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি । তারপর স্ত্রী কুদরা থানার ভবুয়া মহিলা থানায় গিয়ে তার অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ স্পষ্টভাবে বলেছে যে বাংলায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সেখান থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুদ্রা থানা ইনচার্জ সঞ্জয় পাসি বলেন, "এই ঘটনায় বাংলায় মহিলার পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেখান থেকে আদালতের নির্দেশের পর আমরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি।"
আরও পড়ুন: