নাগরকুর্নুল(তেলেঙ্গানা), 13 ডিসেম্বর: রাসায়নিক মেশানো দুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান ৷ পরে মুখে অ্যাসিড ঢেলে হত্যা করা হল নাগরকুর্নুলের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীকে ৷ পুজোর জন্য তান্ত্রিক রমতি সত্যনারায়ণ ওরফে সত্যম যাদবকে টাকা দিয়েছিলেন ভেঙ্কটেশ ৷ সেই টাকাই পরে ফেরত চাওয়াতে বাকি 10 জনের মতো ভেঙ্কটেশকে খুন করেন তান্ত্রিক ৷ পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি অভিযুক্তের ৷ এমনটাই জোগুলাম্বা গাদওয়ালা জোনের ডিআইজি এলএস চৌহান অভিযুক্তকে সংবাদমাধ্যমের সামনে এনে জানান ৷
জানা গিয়েছে, ওয়ানাপার্টি জেলার ভিপনাগন্ডলা মন্ডলের একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ভেঙ্কটেশ ৷ হায়দরাবাদের বোল্লারামে থাকতেন তিনি । ভেঙ্কটেশ নাগারকুর্নুলে অভিযুক্ত তান্ত্রিক সত্যম যাদবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ৷ তারপরে পাঁচ দিন হলে গেলেও তিনি বাড়ি ফেরেননি । এরপরেই তাঁর উদ্বিগ্ন স্ত্রী লক্ষ্মী নাগরকুর্নুল টাউন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে ।
এ সময়ে সত্যম যাদবের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ তখনই হত্যার কথা স্বীকার করে সে । সত্যম যাদব নিজেও রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করেন ৷ তার সহ-ব্যবসায়ীদের সে বলত যে লুকনো সম্পদ বের করতে পারে । এটি জানতে পেরে ভেঙ্কটেশ তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে গুপ্তধন খোঁজার জন্য সত্যমের দ্বারস্থ হন ।
অভিযুক্ত গুপ্তধন খুঁজে দেওয়ার কথা বলে ৷ তবে সে এই শর্তে তাঁদের কাছে থেকে টাকা নেয় যে শুধুমাত্র ভেঙ্কটেশ এই প্রক্রিয়া চলাকালীন তার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। পরে ভেঙ্কটেশ ভয় পেয়ে যান ৷ তাঁকে গুপ্তধনের সন্ধানে তিন গর্ভবতী মহিলাকে বলি দেওয়ারও নিদান দেয় ওই তান্ত্রিক । তিনি এমন কিছু চান না, এই বলে ভেঙ্কটেশ টাকা ফেরত দিতে বলেন সত্যমকে । তারপরেই 4 ডিসেম্বর সত্যম পুজো করবে বলে ভেঙ্কটেশকে শহরের উপকণ্ঠে একটি পাহাড়ে নিয়ে যায় ৷ সেখানে গিয়ে পুজোর নামে ভেঙ্কটেশকে রাসায়নিক মেশানো দুধ পান করায় সত্যম । তিনি জ্ঞান হারালে মুখে অ্যাসিড ঢেলে তাঁকে হত্যা করে তান্ত্রিক । এছাড়াও অভিযুক্ত জানিয়েছে, একইভাবে তিনটি রাজ্যে আরও 10 জনকে হত্যা করেছে সে ৷
2020 সাল থেকে সত্যম 8টি জায়গায় 11 জনকে হত্যা করেছে । 2020 সালে সে ওয়ানাপার্টি জেলার রেভাল্লি থানায় চারজনকে হত্যা করে ৷ 2021 সালে কোলহাপুরে, 2022 সালে নাগারকুর্নুলে, 2023 সালে কালভাকুর্তি, নাগরকুর্নুল, কর্ণাটক রাজ্যের বালাগানুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলার পেদ্দাভাদুগুর রেঞ্জের প্রতিটিতে একজনকে খুন করে ।
তান্ত্রিকের কাছ থেকে 8টি মোবাইল ফোন, 10টি সিম কার্ড, 5টি বিষাক্ত রাসায়নিকযুক্ত বোতল, 5টি বৈদ্যুতিক ডেটোনেটর, একটি গাড়ি এবং 5টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । একই প্লট দু'জনের কাছে বিক্রি করায় তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আদালতে মামলা রয়েছে । ডিআইজি জানান, সত্যম যাদবের কাছ থেকে আরও বিস্তারিত জানার জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে তারা তদন্ত শুরু করবেন ।
আরও পড়ুন: