নয়াদিল্লি, 24 মার্চ: মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর শুক্রবার লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে ওয়ানাডের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধির ৷ জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে দিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা ৷ তবে এই প্রথম নয়, কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সাংসদ বা বিধায়ক হিসেবে পদ খোয়ানোর নজির আরও রয়েছে এই দেশে (List of Disqualified Leaders) ৷
সেই তালিকায় দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি থেকে শুরু করে আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব, তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা থেকে সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান রয়েছেন ৷ এই তালিকা বেশ দীর্ঘ ৷ দেখে নেওয়া যাক এরকম কয়েকজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদের নাম যাঁরা এভাবেই তাঁদের জনপ্রতিনিধির তকমা হারিয়েছিলেন ৷ উল্লেখ্য, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে কোনও সাংসদ বা বিধায়কের যদি কমপক্ষে 2 বছরের কারাবাসের সাজা হয় তাহলে তাঁর পদ খারিজ হয়ে যায় এবং 6 বছর পর্যন্ত তিনি ভোটে লড়তে পারেন না (representation of the people act) ৷
1. ইন্দিরা গান্ধি : 1975 সালের জুন মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ৷ 6 বছর পর্যন্ত তাঁর কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয় ৷ মনে করা হয়, ওই বছর দেশে যে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন ইন্দিরা, সেই সিদ্ধান্তে আদালতের এই রায়ের প্রভাব ছিল ৷
2. লালুপ্রসাদ যাদব: আরজেডি প্রধান তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায় 2013 সালে ৷ ওই বছর সেপ্টেম্বরে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ৷
3. আজম খান: 2022 সালের অক্টোবরে বিধায়ক পদ হারান সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান ৷ ঘৃণা মূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হন তিনি ৷ 3 বছরের কারাবাসের সাজা হয় তাঁর ৷
4. জে জয়ললিতা: আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় 2014 সালের সেপ্টেম্বরে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এআইডিএমকে নেত্রী তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা ৷ তাঁকে 4 বছরের জন্য কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ এরপরেই জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে খারিজ হয়ে যায় তাঁর বিধায়ক পদ ৷ তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকেও সরে যেতে হয় ৷
5. কুলদীপ সিং সেঙ্গার : একটি ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় 2020 সালে ফেব্রুয়ারিতে উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক পদ হারাতে হয় বিজেপি'র কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে ৷ তার আগে 2019 সালে তাঁকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয় ৷
6. অনিলকুমার সাহনি: একটি দুর্নীতি মামলায় দোষী প্রমাণিত হয়ে গত বছর অক্টোবরে বিহারের কুরহানির বিধায়ক পদ হারাতে হয় আরজেডি'র অনিলকুমার সাহনিকে ৷
7. বিক্রম সিং সাইনি: 2022 এর অক্টোবরে বিধায়ক পদ হারাতে হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সিং সাইনিকে ৷ 2013 মুজফফরপুর দাঙ্গার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি ৷
8. আবদুল্লা আজম খান : সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানের ছেলে আবদুল্লা আজম খান গত মাসেই উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক পদ হারিয়েছেন ৷ 15 বছরের পুরনো এক মামলায় তাঁর 2 বছরের কারাদণ্ডের সাজা হয়েছে ৷
9. প্রদীপ চৌধুরি : 2021 এর জানুয়ারিতে বিধায়ক পদ হারাতে হয় কংগ্রেসের প্রদীপ চৌধুরিকে ৷
10. অনন্ত সিং: গত বছর বিহারের বিধায়ক পদ হারিয়েছেন আরজেডি-এর অনন্ত সিং ৷ তার বাড়ি থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় ৷
আরও পড়ুন: ভারতের জন্য লড়াইয়ে যেকোনও মূল্য দিতে প্রস্তুত, হুঁশিয়ারি রাহুলের