উত্তরকাশী, নভেম্বর 27: বদ্ধ আলো-আধাঁরি ছোট্ট জায়গায় একটানা থাকতে থাকতে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়াটাও স্বাভাবিক ৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিভতে থাকে বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশাও ৷ আর তাই সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে পড়া 41 জন শ্রমিকের সঙ্গে বারবার কথা বলে মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা ৷ এবার সেই কাজ আরও নিঁখুতভাবে করতে ঘটনাস্থলে মনোবিদ রাখারও ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷
2 কিলোমিটার একটি পাইপের মধ্য দিয়ে পাঠানো হয়েছে ছোট্ট মাইক ৷ সেই মাইকের মাধ্যমেই আটকে পড়া শ্রমিকরা কথা বলছেন পরিবারের লোকেদের সঙ্গে ৷ আটকে পড়া এক শ্রমিক নাইয়ার আহমেদের মনোবল বাড়াতে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন সাবা আহমেদ নামে পরিবারের এক সদস্য ৷ তিনি ভাইকে সাহস জুগিয়ে বলেন, "নার্ভাস হয়ে যেও না ৷ কাজ খুব দ্রুত এগোচ্ছে ৷"
জানা গিয়েছে, উদ্ধারকাজ চলার পাশাপাশি ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে রাখা হয়েছে ৷ যাঁরা প্রতিদিন দিনে দু'বার করে কথা বলছেন আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে ৷ সকাল 9টা-11টা ও বিকেল 5-8টা পর্যন্ত সকল শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন চিকিৎসকরা ৷ মোট পাঁচজন চিকিৎসক রয়েছেন ৷ যাঁর মধ্যে রয়েছেন 2 জন মনোবিদও ৷ মেডিক্যাল টিমের নোডাল অফিসার-চিকিৎসক বিমলেশ জোশি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই আরও 10 জন চিকিৎসককে জরুরি ভিত্তিতে রাখা হয়েছে উদ্ধারকাজ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত ৷
মনোবিদ ও চিকিৎসকরা প্রতিনিয়ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলছেন ৷ তাঁদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করছেন ৷ যাতে পরিবারের সদস্যরা আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে ইতিবাচক বার্তালাভা করেন ৷ আর এক সিনিয়র চিকিৎসক প্রেম পোখরিয়াল বলেন, "প্রথমদিকে 41 জন শ্রমিকদেরে জুস ও অ্যানার্জি ড্রিঙ্কস দেওয়া হচ্ছিল ৷ এখন তাঁদের প্রতিনিয় পরিমাণ মতো খাবার দেওয়া হচ্ছে ৷ সকালে সিদ্ধ ডিম, দুধ, চা ও ডালিয়া পাঠানো হচ্ছে দুপুরে ও রাতে পাঠানো হচ্ছে ডাল-ভাত, চাপাটি, সবজি ৷ ডিসপোজেবল প্লেট পাঠানো হচ্ছে শ্রমিকদের ৷ যাঁতে তাঁরা খাওয়ার পর তা ফেলে দিতে পারেন ৷"
তিনি আরও বলেন, "শ্রমিকদের হাইড্রেটেড রাখতে ওআরএস পাউডার পাঠানো হচ্ছে ৷ পাশাপাশি পাঠানো হচ্ছে আই ড্রপস ও ভিটামিন ট্যাবলেটস ৷ এছাড়া ড্রাই ফ্রুটস ও বিস্কুটও পাঠানো হচ্ছে ৷ দেওয়া হয়েছে টুথপেস্ট, ব্রাশ, টাওয়েল, জামাকাপড় ও আন্ডার গারমেন্টস ৷ মনোরঞ্জনের জন্য পাঠানো হয়েছে মোবাইল ফোন ৷ যাতে তাঁরা সিনেমা দেখতে পারেন বা ভিডিয়ো গেম খেলতে পারেন ৷ পাশাপাশি আমি রোজ কথাও বলি ৷"
উল্লেখ্য, সিল্কিয়ারা টানেল থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার করতে 19.2 মিটার ভার্টিকেল বা উল্লম্ব ড্রিলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদ আহমেদ ৷
আরও পড়ুন:
1. 16 দিন পেরিয়ে আশার আলো! টানেলে আটক শ্রমিকদের উদ্ধারে 19.2 মিটার উল্লম্ব ড্রিলিংয়ের কাজ শেষ
2. আগামী 10 বছরে উত্তরাখণ্ডে প্রস্তাবিত 66টি টানেল! শ্রমিক-দুর্ঘটনার পর গবেষণায় জোর বিজ্ঞানীদের
3. শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে পুজো দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি