বারাসত, 8 নভেম্বর : বারাসতের গেস্ট হাউসে রহস্যজনক মৃত্যু গুজরাটের ব্যবসায়ীর । মৃতের নাম মহেশকুমার রামপ্রসাদ আগরওয়াল । সোমবার সকালে গেস্ট হাউসের রুম থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে । বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । কীভাবে ভিনরাজ্যের ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হল, আত্মহত্যা নাকি ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা । গোটা ঘটনায় তদন্ত নেমেছে বারাসত থানার পুলিশ ।
আরও পড়ুন : আরও পড়ুন : Narendra Modi : সেবাই পরম ধর্ম, সংগঠন বাড়াতে কর্মীদের বার্তা মোদির
জানা গিয়েছে , বছর বাহান্নর ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি গুজরাটের সুরাটে । দু'দিন আগে বারাসতের বড়বাজারের কাছে একটি গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন তিনি । ওই গেস্ট হাউসের কর্মীদের দাবি, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজের কথা বলেই গেস্ট হাউসের রুম ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। তবে, তিনি কোন ধরনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তা জানেন না তাঁরা ।
আরও পড়ুন: Enforcement Branch Raid: সবজি ও মাছ বাজারের অগ্নিমূল্য নিয়ন্ত্রণে দুর্গাপুরে অভিযান ইবি’র
গেস্ট হাউস সূত্রে খবর , রুম ভাড়া নেওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় নথিপত্রের জেরক্স কপি জমা দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী । এরপরই দোতলার ২১০ নম্বর রুম বরাদ্দ করা হয় তাঁর জন্য । রুমে প্রবেশের পর থেকেই আর সেভাবে বাইরে বেরোননি তিনি । রুমের দরজাও বন্ধ থাকত সর্বক্ষণ । মাঝেমধ্যে হোটেল কর্মীরা তাঁর কোনও কিছুর প্রয়োজন আছে কিনা, তা জানতে নক করতেন । কিন্তু, তিনি প্রতিবারই জানিয়েছেন, খাবার-জল সমস্ত কিছুই তিনি নিয়ে এসেছেন ৷ বদ্ধ ঘরে দু'দিন থাকার পর সোমবারই সকাল 7-7.30 নাগাদ চেক আউট করার কথা ছিল তাঁর । কিন্তু সকাল 8টা বেজে যাওয়ার পরও তিনি রুম থেকে না বেরোনোয় সন্দেহ হয় হোটেল কর্মীদের । এরপর রুমের দরজায় বারবার নক করা হয় । কিন্তু ভিতর থেকে কোনওরকম সাড়াশব্দ না মেলায় সন্দেহ আরও বাড়ে তাঁদের । দেরি না করে খবর দেওয়া হয় পুলিশে । খবর পেয়ে বারাসত থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রুমের দরজা ভেঙে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে ব্যবসায়ীকে । সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত হাসপাতালে । সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা । ঘটনায় হতবাক হোটেল কর্তৃপক্ষ । কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা । তবে কর্তৃপক্ষের অনুমান, আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন ওই ব্যবসায়ী । তা থেকে কোনওভাবে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে তাঁর।
যদিও এই মৃত্যু ঘিরে বেশ কিছু রহস্য দানা বেঁধেছে । প্রথমত, ব্যবসায়ীর দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। দ্বিতীয়ত, আত্মহত্যা করার কোনও জিনিসও মেলেনি ঘর থেকে । শুধু পাওয়া গিয়েছে ব্যবসায়ীর মোবাইল এবং সুটকেসে আনা কিছু জামাকাপড় । তাহলে কি রোগব্যাধির জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যবসায়ীর ? উত্তর খুঁজছে বারাসত থানার পুলিশ । তদন্তের স্বার্থে গেস্ট হাউসের ওই রুমটি সিল করে দিয়েছে তদন্তকারী অফিসারেরা । সেই সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষের বয়ানও নথিভুক্ত করা হয়েছে।