নয়াদিল্লি, 20 অক্টোবর: 'প্রশ্নের জন্য নগদ' কাণ্ডে নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। হিরানন্দানি গোষ্ঠির সিইও হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, আদানি গোষ্ঠি ও প্রধানমন্ত্রীকে কঠিন প্রশ্নের মুখে ফেলতে টাকা ও অন্য সুবিধা নিয়েছেন মহুয়া। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হলফনামা নিয়ে পাঁচ দফা প্রশ্ন তুললেন সাংসদ। পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনও নির্বোধ আমলা যিনি একইসঙ্গে বিজেপির আইটি সেলের সৃজনশীল লেখকের ভূমিকা পালন করেন তিনি এই হলফনামার বয়ান তৈরি করেছেন।
-
Jai Ma Durga. pic.twitter.com/Z2JsqOARCR
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) October 19, 2023 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">Jai Ma Durga. pic.twitter.com/Z2JsqOARCR
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) October 19, 2023Jai Ma Durga. pic.twitter.com/Z2JsqOARCR
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) October 19, 2023
দু'পাতার প্রেস বিবৃতির শুরুতেই মহুয়া জানতে চান এই ঘটনার তদন্তে সংসদের এথিক্স কমিটি বা ইডি-সিবিআই দর্শনকে তলব করেনি। তাহলে কাকে হলফনামা দিলেন দর্শন? এমনটা করার দরকারই বা কী ছিল! সাংসদের দাবি, হলফনামাটি কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির লেটারহেডে লেখা হয়নি ৷ এমনকী সেই নথিটি নোটারি করার প্রয়োজনও কেউ মনে করেননি ৷ এখানেই সাংসদের প্রশ্ন, দর্শন হিরানন্দানির মতো প্রভাবশালী এবং শিক্ষিত ব্যবসায়ী ঠিক কোন যুক্তিতে সাদা কাগজে হলফনামা জমা দিলেন? বন্দুকের সামনে দাঁড় না করালে দর্শন এমন কাজ করতেন না বলে মনে করেন মহুয়া।
তাঁর পাশাপাশি কীভাবে শশী থারুর এবং রাহুল গান্ধিকেও নিশানা করা হচ্ছে, তা নিয়েও সরব হয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। এই ঘটনায় শার্দুল স্রফ নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। দাবি উঠেছে, তিনি সাংসদকে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন। এখানে মহুয়ার দাবি, এই শার্দুলের ভাই শেরিলের সঙ্গে গৌতম আদানির আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। দুই ভাইয়ের মধ্যে অতীতে ব্যবসা সংক্রান্ত গোলমাল বেঁধেছিল। অন্যদিকে সমস্ত নিয়ম-কানুন ভেঙে শেরিল সেবির একটি কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। এটা সরাসরি স্বার্থের সংঘাত হলেও কেউ কোনও ব্যবস্থা নেননি। আর এখন সুযোগ পেয়ে বিরোধী সাংসদদের নিশানা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মহুয়া মনে করেন, অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা করে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন বলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সাংবাদিক সুচেতা দালালকেও।
অন্য একটি প্রসঙ্গে হলফনামার 12 নম্বর প্যারাগ্রাফের একটি অংশের উল্লেখ করেন মহুয়া। সেই বিশেষ অংশে দর্শনের দাবি, মহুয়ার ভয়ে তিনি এতদিন সরব হননি। পালটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো প্রভাবশালীদের সঙ্গে হিরানন্দানি গোষ্ঠির সখ্য আছে বলে দাবি করেন সাংসদ। তাঁর প্রশ্ন, যিনি এত প্রভাবশালীদের সঙ্গে মেলামেশা করেন তিনি তাঁর (মহুয়া) মতো প্রথমবারের সাংসদকে কোন যুক্তিতে ভয় পাবেন ? সাংসদের পঞ্চম তথা শেষ প্রশ্ন, দর্শন হলফনামা দিলেন এবং সেটি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়া হল। তা না করে সাংবাদিক সম্মেলন করে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নিজেই তো এ কথা জানাতে পারতেন দর্শন। সেটা কেন করেননি, তা জানতে চান মহুয়া মৈত্র।
প্রেস বিবৃতির বাকি অংশে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন মহুয়া। উঠে আসে সাংসদের প্রাক্তন প্রেমিক জয় দেহাদরাইয়ের কথাও। সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী নেহাত প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই তাঁকে নিশানা করেছেন বলে দাবি সাংসদদের। তিনি মনে করেন, জয়কে দিয়ে খুবই সুচতুর কায়দায় এই কাজটি করিয়েছে বিজেপি।
জয় দাবি করেছেন, মহুয়ার বহু দুর্নীতির সাক্ষী তিনি। এখানে সাংসদের পালটা প্রশ্ন, যদি তিনি দুর্নীতিতে যুক্ত হন তাহলে জয় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন কেন? তাছাড়া এতদিন বাদে এই সমস্ত অভিযোগ কেন উঠছে সেটাও জানতে চান মহুয়া। অন্যদিকে, জয় সিবিআই এবং লোকসভার স্পিকারের পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকেও চিঠি লিখে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। নিশিকান্তের সঙ্গে অতীতে একাধিকবার বিবাদে জড়ানো মহুয়ার দাবি, তাঁকে অসম্মান করতেই বিজেপি সাংসদকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন জয়।
আরও পড়ুন: মহুয়া নিয়ে তৃণমূলের নীরবতা, ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলতে চায় ঘাসফুল শিবির