কলকাতা 8 জুন: কাশ্মীরে গিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Gangopadhyay)! সূত্রের খবর, মঙ্গলবার একটি মামলা চলাকালীন আদালতেই তাঁর কাশ্মীর ভ্রমণের তিক্ত অভিজ্ঞতা শোনান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay Harassed)৷ তিনি জানান, কাশ্মীর বেড়াতে গিয়ে পদে পদে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। গোটা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্টে চিঠি দিয়ে জানাবেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি ৷
প্রসঙ্গত, গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। এজলাসে তিনি জানান, দ্রাস এবং সোনমার্গ থেকেই সমস্যা শুরু হয়। বিচারপতিদের যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, কাশ্মীর প্রশাসনের তরফ থেকে তার কিছুই তাঁকে দেওয়া হয়নি! এমনকী, তাঁকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিয়েও মাত্র আধঘণ্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করে নেয় সোনমার্গ পুলিশ! ফলে, স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়েই হোটেলে ফিরতে হয় তাঁকে ৷ উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে কাশ্মীরে জঙ্গিহানার ঘটনা বেড়েছে ৷ এমন একটা পরিস্থিতিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা তুলে নেওয়ায় তাঁকে কার্যত প্রাণ হাতে করে হোটেলে ফিরতে হয় ৷ একজন বিচারপতির সঙ্গে এমন আচরণে স্তম্ভিত ওয়াকিবহাল মহল ৷
আরও পড়ুন : Justice Abhijit Gangopadhyay: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে বাবুঘাটে জমায়েত
বিচারপতি জানান, নিয়ম অনুযায়ী, রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে কোনও বিচারপতির কনভয়ে প্রোটোকল অফিসার এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা থাকেন। কিন্তু, কাশ্মীরে থাকাকালীন তাঁকে এই বিষয়ে কোনও সাহায্য করা হয়নি। পুলিশকে ডাকা হলেও তারা আসেনি। বরং এই বিষয়ে স্থানীয় থানায় কথা বলতে গেলে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ থানার বাইরেই বসিয়ে রাখা হয়!
বিচারপতির আরও অভিযোগ, সোনমার্গে হোটেল বুকিং করার নামে কাটমানি নেওয়ারও চেষ্টা করা হয় তাঁর কাছ থেকে! নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে জম্মু–কাশ্মীর হাইকোর্টের (High Court of Jammu and Kashmir) প্রোটোকল বিষয়ক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তিনি জানান, সরকারি হোটেল থাকা সত্ত্বেও তাঁকে না জানিয়েই একটি বেসরকারি হোটেলে তাঁর থাকার বন্দোবস্ত করা হয় ৷ প্রতি রাতের হিসাবে সেই হোটেলের ভাড়া ছিল 13 হাজার টাকা ! অথচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা এবং পরিকাঠামো ছিল একেবারেই নিম্নমানের ৷ এমনকী, জম্মু –কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রোটোকল বিষয়ক আধিকারিক তাঁর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্যও করেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷
বিচারপতি আরও জানান, কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল ঘুরে দেখার সময় সেনার আধিকারিকরা তাঁকে যুদ্ধের সময়কার নানা অভিজ্ঞতা শোনান ৷ সেই সময় সেখানে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরাও ছিলেন ৷ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় জানান, এইসব এলাকায় ভ্রমণের সময় সেনা ও পুলিশ আধিকারিকদের কারও কারও মুখে তিনি এমন কিছু মন্তব্য শোনেন, যা তাঁর পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তিকর ছিল ৷