এরানাকুলাম, 14 অক্টোবর: বিচারপতিরা কখনওই দেবতা নন ৷ কেরল হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে সাফ জানিয়েছে, আদালতগুলি ন্যায়বিচারের মন্দির হিসাবে পরিচিত হলেও বিচারকরা কিন্তু 'দেবতা নয়' ৷ একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, বাদী এবং আইনজীবীদের হাত জোড় করে আদালতে উপস্থিত থাকারও কোনও দরকার নেই।
বিচারপতি পিভি কুন্হিকৃষ্ণন তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, আদালতের ভিতরে শুধুমাত্র ভদ্রতা বজায় রাখা উচিত। কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি মন্তব্য করেন, "সাধারণত আদালতকে 'বিচারের মন্দির' বলা হয়। তবে বেঞ্চে কোনও দেবতা বসে থাকেন না। বিচারকরা তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং বাধ্যবাধকতা মাত্র পালন করেন ৷" আলাপ্পুঝার এক ব্য়ক্তির বিরুদ্ধে এক মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ করেছে হাইকোর্ট।
আবেদনকারী মহিলা হাত জোর করে চোখে জল নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে তার মামলা দায়ের করার জন্য আদালতে হাজির হয়েছিলেন। যার প্রতি আদালত মন্তব্য করেছে, "কোনও মামলাকারী বা আইনজীবীকে আদালতের সামনে হাত জোড় করে তাদের মামলার সওয়াল করার দরকার নেই ৷ কারণ আদালতে মামলা করা তাদের সাংবিধানিক অধিকার ৷"
আলাপ্পুজা উত্তর থানার পরিদর্শক আবেদনকারীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করেন। অভিযোগটি 2019 সালের এপ্রিল মাসে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল আবেদনকারী ফোনে পুলিশ অফিসারকে গালিগালাজ করেছিলেন। পুলিশ অফিসারের তরফে দায়ের করা অভিযোগের আগে, আবেদনকারী আলাপ্পুজা এসপির কাছে অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছিলেন যে, তার বাড়ির কাছে প্রার্থনা কেন্দ্র থেকে আওয়াজ সমস্যার সৃষ্টি করছে ৷ এরপর পুলিশ সুপারের নির্দেশে স্থানীয় থানার এক এসআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বেল্লারিতে কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষনের অভিযোগ
আবেদনকারী আদালতে জানান, ওই পুলিশ আধিকারিককে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হলে সে দুর্ব্যবহার করে ৷ তিনি বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগের অনুলিপিও আছে ৷ আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, পুলিশ অফিসারের আবেদনকারীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণে ছিলেন । আদালতও আবেদনকারীর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে দেয় ৷ একই সময়ে, আদালত আলাপ্পুজার এসপিকে আবেদনকারীর বিরুদ্ধে নথিভুক্ত করা মামলার তদন্ত করারও নির্দেশ দেয়। অভিযুক্ত ওই পুলিশ অফিসারের কাজে গাফিলতি থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।