জয়পুর, 6 অগস্ট: শরীরে কোনওরকম কাটাছেঁড়া না করেই 104 বছরের এক রোগীর হৃৎপিণ্ডের ভালভ প্রতিস্থাপন (Non-surgical Heart Valve Replacement) করলেন চিকিৎসকরা ৷ ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের জয়পুরে (Jaipur) ৷ সূত্রের খবর, শরীরে এত বড় একটি রদবদলের পরও সুস্থ রয়েছেন ওই বৃদ্ধ ! চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এর আগেও ভারতে TAVI (Transcatheter aortic valve implantation) প্রযুক্তি ব্যবহার করে 92 বছরের এক রোগীর হৃৎপিণ্ডের ভালভ বদল করা হয়েছিল ৷
জয়পুরের ঘটনা প্রসঙ্গে চিকিৎসক অমিত চৌরাসিয়া জানিয়েছেন,"ওই রোগীর বুকে লাগাতার ব্যথা হচ্ছিল ৷ তিনি ভালো করে শ্বাস নিতে পারছিলেন না ৷ সেই কারণেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ টু-ডি ইকো টেস্ট করা হলে জানা যায়, তাঁর অ্য়াওরটিক ভাল্ভ ক্রমশ সরু হয়ে যাচ্ছে ৷ এই কারণেই তাঁর হৃৎপিণ্ডের ভালভ প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ তাঁর অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফির রিপোর্টেও একাধিক ব্লকেজ ধরা পড়েছিল ৷"
আরও পড়ুন: Corona Update in India: করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে 19 হাজারের ঘরে, চলছে বুস্টার ডোজ প্রক্রিয়া
এই রিপোর্ট হাতে আসার পরই চিকিৎসকরা বুঝে যান, ওই বৃদ্ধের সমস্যাটি ঠিক কী ! এক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের ভালভ প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না ৷ কিন্তু, 104 বছর বয়সে কারও শরীরে এমন জটিল অস্ত্রোপচার করা অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয় ৷ সেই কারণেই Non-surgical Heart Valve Replacement করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ ব্যবহার করা হয় অত্যাধুনিক TAVI প্রযুক্তি ৷ পুরো প্রক্রিয়াটি সারতে সময় লাগে দেড় থেকে দু'ঘণ্টা ৷ এবং তার পরদিনই ওই রোগী হাঁটাচলা শুরু করে দেন ৷ চারদিনের মাথায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় ৷
চিকিৎসকদের দাবি, এই প্রথম এত প্রবীণ কোনও রোগীর শরীরে Non-surgical Heart Valve Replacement সফল হল ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, এই বয়সে আসার পর শরীরে ওষুধের কার্যকারিতা কমে যায় ৷ ফলে সেদিকেও তাঁদের নজর রাখতে হয়েছিল ৷ এত প্রবীণ কোনও ব্যক্তির শরীরে Non-surgical Heart Valve Replacement করা হলে প্রক্রিয়া প্রথম বছরে তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা থাকে 50 শতাংশ ৷ দ্বিতীয় বছর সেই সম্ভাবনা কমে হয় মাত্র 20 শতাংশ ৷ তবে, জয়পুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত 104 বছরের ওই বৃদ্ধের শরীরে কোনও সমস্যা দেখা যায়নি ৷ তাই চিকিৎসকরা মনে করছেন, তাঁদের এই সাফল্য সারা দেশে নজির তৈরি করেছে ৷