উত্তরকাশী, 21 নভেম্বর: সিল্কিয়ার অন্ধকার টানেল থেকে ক্রমশ প্রস্ফুটিত হচ্ছে আশার আলো। যা আরও জোরদার হল আটকে থাকা শ্রমিকের দৃঢ় বক্তব্যে। তিনি বললেন, "আমি আমার মাকে কিছু বলতে চাই ৷ মা তুমি চিন্তা করোনি, আমি ভালো আছি ৷" 10 দিন ধরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে থাকা এক বাঙালি শ্রমিক মঙ্গলবার এই বার্তাই পাঠালেন তাঁর পরিবারের কাছে ৷ ভেঙে পড়া নির্মীয়মাণ ওই টানেলে এখনও আটকে রয়েছেন 41 জন শ্রমিক ৷ তবে মঙ্গলবার এই শ্রমিক কথা বলেন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ৷ ফলে এখনও উদ্ধার না হলেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর কিছুটা আশ্বস্ত ওই শ্রমিকরা ৷ এদিন সকালে একটি 6 ইঞ্চির পাইপের মাধ্যমে ওই টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সফল হন উদ্ধারকারীরা ৷ এদিন উদ্ধারকারীদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলার এক শ্রমিকও ৷ পরিবারকে চিন্তা করতে মানা করেন জয়দেব নামে ওই বাঙালি নির্মাণ শ্রমিক ৷
নির্মীয়মাণ ওই টানেলের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলেন জয়দেব ৷ পরিবারের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, "আমি আমার মাকে কিছু বলতে চাই ৷ মা তুমি চিন্তা করোনি, আমি ভালো আছি ৷ টাইমে খেয়ে নেবে ৷ বাবাকেও টাইমে খেয়ে নিতে বলবে (উচ্চারণ অপরিবর্তিত) ৷" এদিন ওই প্রজেক্টের সুপারভাইজারও শ্রমিকদের আশ্বস্ত করে জানান, ভয় পাওয়ার কিছু নেই, তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করা হবে ৷ টানেলে আটকে থাকা আরও কয়েকজন শ্রমিক কথা বলেছেন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ৷ অদম্য সাহস ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে ওই শ্রমিকরা পরিবারকে তাঁদের জন্য চিন্তা না করতেও অনুরোধ করেছেন ৷
এই উদ্ধারকাজে পরামর্শ দেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে উত্তরকাশীতে রয়েছেন টানেল বিশেষজ্ঞ তথা ইন্টারন্যাশনাল টানেলিং অ্যান্ড আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আর্নল্ড ডিক্স ৷ তিনি সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, একটি 6 ইঞ্চির পাইপলাইনের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা স্থাপন হয়েছে ৷ উদ্ধারকাজের জন্য যে বিকল্প টানেল তৈরির উদ্দেশ্যে ট্রিলিংয়ের কাজ শুরু করা গিয়েছে সেটাও শুভ সংকেত ৷ টানেলের ভিতরে নিরাপদ স্থামন তৈরির চেষ্টাও চলছে ৷ তবে এই উদ্ধারকাজ যে সহজ নয় তাও জানিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ ৷ তাঁর কথায়, "এখানকার অবস্থা ভয়াবহ ৷ উদ্ধারকারীদের নিরাপত্তার দিকটিও মাথায় রাখতে হচ্ছে ৷ এরপর আমার কাজ হবে পাহাড়ের উপরে, পাশে ও পিছনে গিয়ে সেখানকার অবস্থা খতিয়ে দেখা ৷"
এই আন্তর্জাতিক টানেল বিশেষজ্ঞ আরও জানিয়েছেন, আমেরিকা থেকে যে যন্ত্রটি আনা হয়েছে তা এখনও কাজ শুরু করেনি ৷ কারণ এটা খুব সাবধানে ব্যবহার না করলে বড় বিপদ ঘটতে পারে, তাই সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে ৷ এই উদ্ধারকাজে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে বলেও তিনি জানান ৷
আরও পড়ুন:
সিল্কিয়ারা টানেলে 10 দিন! সোমবার রাতে গরম খিচুড়ি-ডাল পেলেন আটকে থাকা শ্রমিকরা