ভাদোদরা, 30 জানুয়ারি: সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম ওঠার প্রায় চারবছর পরও কীভাবে এক ব্যক্তি তাঁর দুর্নীতির কারবার চালিয়ে গেলেন ? গুজরাত প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় (Gujarat Paper Leak Case) আপাতত এই প্রশ্নটিই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে ৷ যাঁর কারণে এই প্রশ্ন উঠছে, তিনি ভাস্কর চৌধুরী (Bhaskar Chaudhari) ৷ গুজরাত প্রশ্নপত্র ফাঁসে অন্যতম অভিযুক্ত এই ভাস্করের অপরাধে হাতে খড়ি হয় অনেক আগেই ৷ এমনকী, সিবিআই তাঁকে গ্রেফতারও করে ৷ পরবর্তীতে যদিও জামিনে মুক্তি পেয়ে যান তিনি ৷ তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, সিবিআইয়ের হাতে পাকড়াও হওয়ার পরও হুঁশ ফেরেনি ভাস্কর চৌধুরীর ৷ নাকি তাঁর এই অতি-সাহসিকতার পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ ?
2019 সাল ৷ পুলিশের কাছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন গান্ধিনগরের এক দম্পতি ৷ তাঁদের দাবি ছিল, ভাস্কর চৌধুরী এবং তাঁর সঙ্গী কেতন বারোট তাঁদের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ ওই জুটির প্রস্তাব ছিল, দম্পতির ছেলেকে কোনও পরীক্ষা দিতে হবে না ৷ এমনিতেই পেয়ে যাবেন সরকারি চাকরি ! বদলে ভাস্কর-কেতন জুটিকে দিতে হবে মোটা অঙ্কের টাকা ৷
আরও পড়ুন: পরীক্ষার 5 ঘণ্টা আগে ফাঁস প্রশ্নপত্র, ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে বিজেপি সরকারকে দুষছে বিরোধীরা
পরবর্তীতে 2019 সালের সেই মামলার তদন্তে নামে সিবিআই ৷ তাদের চার্জশিটে নাম ছিল ভাস্করের ৷ গোয়েন্দাদের দাবি ছিল, দিল্লি, মুম্বই, আমেদাবাদ এবং ভাদোদরায় অভিযান চালিয়ে ভাস্করের বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রমাণ ও নথি সংগ্রহ করেছে তারা ৷ তা খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশিকা পরীক্ষা হোক, কিংবা সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা, নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে প্রার্থীদের তাতে পাস করিয়ে দিতেন এই ভাস্কর ও তাঁর দলবল ! এমনকী, ভদোদরায় ভাস্করের একটি নিজস্ব পরীক্ষাকেন্দ্রও ছিল ! 2019 সালের ঘটনায় বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়ে 33 লক্ষ টাকা নগদ-সহ অসংখ্য নথি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই ৷
এদিকে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে নিশিকান্ত সিনহা নামে আরও এক ব্যক্তির ৷ 2016 সালেও একই ধরনের একটি মামলায় এই নিশিকান্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ৷ অভিযোগ ছিল, নকল পরীক্ষার্থীদের মাধ্যমে নিজের ক্লায়েন্টদের চাকরির পরীক্ষায় পাস করাতেন এই নিশিকান্ত ৷ কিন্তু, পরে এই মামলাটি মিটে যায় ৷
গুজরাত পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাস্কর চৌধুরী আদতে বিহারের বাসিন্দা ৷ তিনি গুজরাতে আসেন 2002 সালে ৷ পররবর্তীতে পাকাপাকিভাবে ভদোদরায় থাকতে শুরু করেন ভাস্কর ৷ তিনি উচ্চশিক্ষিত, বিবাহিত এবং দুই সন্তানের বাবা ৷ শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতাও রয়েছে ভাস্করের ৷ 2017 সালে তিনি একটি সংস্থা খোলেন ৷ সেই সংস্থার আড়ালেই চলে জালিয়াতির কারবার ৷ ভাস্করের ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ঋদ্ধি চৌধুরী ৷