দিল্লি, 17 ফেব্রুয়ারি : অনাস্থা ভোটে হেরে 13 দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীকে৷ সেদিন লোকসভায় দাঁড়িয়ে কার্যত ‘ট্র্যাজিক হিরো’র মতো বিজেপির বিকাশ পুরুষ বলেছিলেন যে একদিন সারা ভারত জুড়ে পদ্ম ফুটবে৷
তাঁর সেই স্বপ্নকে অনেকটাই সফল করতে পেরেছেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহর জুটি৷ তা বলে প্রতিবেশী দেশেও প্রভাব বিস্তার করতে চায় ভারতীয় জনতা পার্টি! এমন কল্পনা বোধহয় বিরোধীদের মনেও উদয় হয় না৷ কিন্তু বিজেপিরই এক নেতা তথা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এমনই একটি মন্তব্য করে বসেছেন৷ যার জেরে বিপাকে পড়তে হয়েছে শুধু বিজেপি নয়, কেন্দ্রের মোদি সরকারকেও৷
কী বলেছেন বিপ্লব? সম্প্রতি আগরতলায় দলের একটি কর্মিসভায় বিপ্লব দেব দাবি করেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি থাকাকালীন তাঁকে নাকি বলেছিলেন, প্রতিবেশী নেপাল ও শ্রীলঙ্কাতেও সংগঠন তৈরি করবে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷
আর এই বিষয়টি সামনে আসার পরই শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ যদিও বিপ্লব দেবের মন্তব্যে বিতর্ক নতুন নয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর তাঁর একাধিক মন্তব্য নিয়ে হইচই পড়েছে৷ বিরোধীদের কটাক্ষ করেছেন৷ কিন্তু তিনি থামেননি৷ বরং বেফাঁস মন্তব্য করার কাজ চালিয়ে গিয়েছেন৷
রামায়ণ অনুযায়ী, নেপাল হল সীতার দেশ৷ আর শ্রীলঙ্কা ছিল রাবণের রাজত্ব৷ ফলে যে দল এতদিন রামমন্দির প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন চালিয়েছে, তাদের কাছে এমন দাবি অস্বাভাবিক নয় বলেও কোনও কোনও মহল থেকে দাবি করা হয়৷
কিন্তু এই মন্তব্যের জল যে এতদূর গড়াবে, তা বোধহয় বিপ্লব দেব আঁচ করতে পারেননি৷ ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছে নেপাল৷ তারা পরবর্তী পদক্ষেপের চিন্তা ভাবনা করছে৷ তবে শ্রীলঙ্কার তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও একটি দেশে বসে অন্য দেশের রাজনৈতিক বিস্তার লাভ ঘটানোর পরিকল্পনা করা আর তার মধ্যে সেই দেশের সরকার তৈরিতে ভূমিকা পালন করার কথা ভাবা সেই দেশের অন্তবর্তী বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা৷ বিপ্লবের মন্তব্যে সেই ইঙ্গিতই রয়েছে৷ তাই এই নিয়ে আপত্তি ওঠাটাই স্বাভাবিক৷
আরও পড়ুন : বিপ্লবের মন্তব্য়ে কড়া প্রতিক্রিয়া পড়শি নেপালের
তার উপর নেপালের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও খুব একটা ভালো নয়৷ আর শ্রীলঙ্কা নিয়েও ভারত বেশ চাপে৷ কারণ, সেখানে চিন ক্রমশ থাবা বসাচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে বিপ্লব দেবের এই মন্তব্য দুই দেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা ৷