দিল্লি, 17 মার্চ : বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষ নীতিতে, স্বাধীন প্রক্রিয়ায় আপস করা হচ্ছে । আদর্শে আঘাত হানা হচ্ছে । রঞ্জন গগৈয়ের রাজ্যসভা মনোনয়ন প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফের । সবেমাত্র গত নভেম্বরে অবসর নিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে । অবসরের আগেই বিচারবিভাগের অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন রঞ্জন গগৈ । গতকাল রাষ্ট্রপতির মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে গগৈয়ের নাম প্রস্তাব করা হয় । তারপরই নানা তরফে সমালোচনার তির এসেছে প্রাক্তন বিচারপতির দিকে ।
গগৈয়ের রাজ্যসভা মনোনয়নকে বিস্ময়কর ঘটনা বলে উল্লেখ করেন তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী কুরিয়ান জোসেফ । তাঁর কথায়, দেশের বিচারব্যবস্থা ও সংবিধানের মূল ভিত্তিই হল স্বাধীন ভাবনাচিন্তা । কারণ স্বাধীন বিচারব্যবস্থাই সংবিধানের মূল ভিত্তি । সংবাদ-সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন বিচারপতি জোসেফ বলেন, একসময়ে যে গগৈ স্বাধীন বিচারপ্রক্রিয়ার হয়ে সওয়াল করেছেন, তিনি কীভাবে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষ নীতি এবং মূল আদর্শের সঙ্গে আপস করলেন ?
এর আগেও বিচারপতি জোসেফ, বিচারপিত এম লোকুর, বিচারপতি জে চেলামেশ্বর 2018 সালের 12 জানুয়ারি শীর্ষ আদালতের কার্যকারিতায় বৈষম্যের অভিযোগ এনেছিলেন । তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি গগৈও । সুপ্রিম কোর্টের কাজে সরকার নাক গলাচ্ছে বলে এই গগৈ-ই বাকি প্রবীণ বিচারপতিদের সঙ্গে মিলে তাঁর পূর্বসূরি, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেন। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিচারপতি জোসেফ বলেন, ''1993 সালে কলেজিয়াম নীতি আনা হয়েছিল বিচারব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন করে তোলার জন্য । আমরা বছর দুয়েক আগেও সর্বসমক্ষে বলেছিলাম, সাংবিধানিক স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ হওয়ার কথা । এখন সেই হুমকিটা আরও অনেক বেশি ।''
জোসেফের মত, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রাজ্যসভার মনোনয়ন গ্রহণ করে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ স্বাধীন বিচারব্যবস্থাই ভারতের সংবিধানের মৌলিক ভিত্তি । শুধু জোসেফই নন, গগৈয়ের মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি এম লোকুরও ।